মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সীতাকুণ্ড(চট্টগ্রাম) ঃ
নাম বিপ্লব মিয়া। কথা বলে দ্রুত। ছাত্র জীবনে ছিল ১ম বেঞ্চের ছাত্র। কুমিরা আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে এস এসসি পাশ করার পর চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এইচ এস সি পাশ করে। কিন্তু সামন্য মানসিক সমস্যা দেখা দিলে তার আর পড়া লেখা জুটেনি কপালে। কুমিরা বাজারে আড্ডা ও গল্প গুজব করেই সময় পারকরতেন। পিতা আবদুল হাই সরকারী কৃষি কর্মকর্তা কুমিরা ব্লকে। তাদের জন্ম স্থান টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা হলেও ৪২ বছর যাবত অদ্যবদি কুমিরায় বসবাস করে আসছে। কুমিরা বাজারের এদিক আর ওদিক দৌড়াদৌড়ি করা আর যে যা করতে বলে তা করাই বিপ্লব মিয়ার কাজ। তবে তিনি মদিনা মার্কেট এর আল আরব প্রিন্টার্সের নিয়মিত কাজ করেন। গতকাল বিপ্লব মিয়ার সাথে দেখা হয় প্রতিবেদকের । তিনি জানান ১৯৯৯সালের জুন মাস থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত প্রায় ৫হাজার কুইজে অংশগ্রহণ করে লটারীর মাধ্যমে ২৩২বার কুইজ বিজয় হয়ে পুরস্কার জিতেছে। তিনি আরও জানান জাতীয় পত্রিকা ও জাতীয় ম্যাগাজিন আয়োজিত জাতীয় কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করায় তার পেশা ও নেশাতে পরিণত হয়। তিনি পাক্ষিক অন্যদিন ম্যাগাজিন আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগীতায় ১ম পুরস্কার প্রাইভেট কার বিজয়ী হয়েছেন । গত ৩০ জুলাই ২০০৭ ইং তারিখে ঢাকার হোটেল সেরাটনে এক আনন্দ ঘন অনুষ্ঠা কথা সাহিত্যক হুমায়ুন আহমদ গাড়ি ছাবি তুলে দেন বিপ্লব মিয়ার হাতে। প্রাইভেটকার বিজয়ী সীতাকুণ্ড কুমিরার বিপ্লব মিয়া এখনও কুমিরা বাজারে ঘুরে ফেরার মাঝে কাটছে জীবন।
বিপ্লব মিয়ার আশা তার নাম “ প্রিন্ট মিডিয়া আয়োজিত লটারীর মাধ্যমে সর্বোচ্চবার কুইজ বিজয়ী” শিরোনামে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ নাম লিখাতে চায়। কিন্তু গিনেজ বুকে নাম লিখার কোন নিয়ম কানুন না জানায় তিনি আবেদন করতে পারেনি। বিপ্লব মিয়া সচেতন মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছে তার নাম যেন গিনেজ বুকে উঠে সেই ব্যপারে সহযোগিতা করার। যোগাযোগে – বিপ্লব মিয়া, পিতা- আবদুল হাই, কুমিরা, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম। মোবাইল- ০১৮৪০২৩৬৩৫২।
বিপ্লব মিয়া আরো জানান তিনি ২৩২ বার কুইজ বিজয়ী হয়েছেন তার মধ্যে ১ম পুরস্কার পেয়েছেন ৫০টিরও বেশী। তিনি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা আয়োজিত কুইজে ১১টি, দৈনিক জনকণ্ঠে ১৩টি, দৈনিক ভোরের কাগজে ১টি,দৈনিক যুগান্তর ৯টি,নয়াদিগন্তে ৫টি, কালের কন্ঠে ২টি, দৈনিক আজকের কাগজ ২টি, দৈনিক সমকাল ৯টি, ইত্তেফাক ৩টি, মাসিক সয়েন্স ওয়ার্ল্ড ২টি, কারেন্ট ওয়ার্ল্ডে ৯টি, কারেন্ট নিউজে ৭১টি,মাসিক শিক্ষা বিচিত্রায় ১৩টি, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সে ২২টি, ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্সে ১টি , কারেন্ট কনসেপ্টে ১টি, মাসিক রহস্য পত্রিকা ১৩টি, মাসিক অলংকার ১টি, পাক্ষিক আনন্দ আলো ৪টি, পাক্ষিক আনন্দ ধারা ১১টি, পাক্ষিক অন্যদিন ২টি, পাক্ষিক বিনোদন বিচিত্রায় ২টি, আনন্দ বিনোদনে ৩টি, রুপচাঁদা কুইজ ১টি, মাসিক কারেন্ট মেমোরিতে ২০টি, দৈনিক যায়যায় দিন ১টিসহ মোট ২৩২বার বিজয়ী হয়ে পুরস্কার ও সনদ লাভ করে।
বিপ্লব মিয়ার ছোট বোন ব্র্যাক কর্মী শাহানা আক্তার বলেন সে ছোট বেলা থেকেই বুদ্ধিমান ছিল। গত ২০ বছরধরে সে পেপার পত্রিকা ও ম্যাগাজিন কিনে কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসছে। কুইজ বিজয়ী হয়ে সে প্রথম পুরস্কার প্রাইভেটকারও পেয়েছে। প্রাইভেট কারটি বিক্রি করে ৪ লক্ষটাকার একটি এফডিআর তার নামে করে দিয়েছি। এফডিআর এর লভ্যাংশ থেকেই তার মাসিক খরচ চলে যাচ্ছে।
কুমিরা মদিনা মার্কেটের আল আরব প্রিন্টার্স এর মালিক মোঃ দিলসাদ আলম জানান সে গত বিশ বছর ধরে আমার দোকানে আমাকে সহযোগিতা করে আসছে কাজে কর্মে। তবে সে সুযোগ পেলেই পেপার পত্রিকা নিয়ে মগ্ন থাকে। পত্রিকায় কুইজ পেলেই সে অংশগ্রহণ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। কুইজ প্রতিযোগতা তার জীবনে সফলতা নিয়ে এসেছে। প্রাইভেটকার, প্রাইজবন্ড, নগদ টাকা, বই, ব্যাবহার সামগ্রীসহ প্রায় ৬/৭ লক্ষ টাকার মালিক।