মামুনুর রশীদ,সীতাকুণ্ড টাইমসঃ
কৃষিজমির সংকটের কারনে এখন শহরের মত গ্রামেও বাড়ির ছাদে বাগান করছে অনেকেই। সীতাকু-ের বাঁশবাড়ীয়া বোয়ালিয়াকুল গ্রামে ছাদ কৃষিতে চমক সৃষ্টি করেছেন বোয়ালিয়াকুল গ্রামের সর্দার আলহাজ্ব মোঃ আবুল মুনছুর। তিনি তার বাড়ীর দ্বিতল ভবনের ছাদে এ ছাদ কৃষি গড়ে তুলেছেন। প্রতিদিন তার ছাদ কৃষি দেখতে আসেন এলাকার মানুষ।
জানাগেছে, সীতাকুরে বাঁশবাড়ীয়া বোয়ালিয়াকুল গ্রামে অবস্থিত আলহাজ্ব মোঃ আবুল মুনছুর ২০১৮ সালে তার বাড়ীর দ্বিতল ভবনের ছাদে ছাদ কৃষি গড়ে তোলেন। প্রথমে ৫ টি ফুলের চারা দিয়ে পরীক্ষামূলক ছাদ কৃষি শুরু করে। পরীক্ষামূলক শুরু হলেও ফুলের চারার ভালো অবস্থান দেখে পুরে ছাদে বাগান তৈরি পরিকল্পনা নেয়। এর পরে একএক করে আম, কামরাঙ্গা, ডালিম, ছবেদা, চাইনিচ কমলা, লেবু, জলপাই, পেয়ারা, বড়ই, মালটা ও আমড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ রোপন করেছেন। দু’বছরের মাথায় তার গাছে থোকায় থোকায় ফলন ধরেছে।
বাড়ির ছাদের উপর ফলের বাগান দেখতে আসা সবুজ শাকিল ও লিটন চৌধুরী জানান, বাড়ির ছাদটি প্রাথমিক ভাবে দেখেই মনে হল যেন একটি ছোট্ট বাগান। ছাদের উপরে সারিবদ্ধ ভাবে ড্রামে মাটি ভরাট করে মাদা তৈরি করেছে। প্রতিটি মাদায় একটি করে ফলদ গাছ। গাছে ফল ধরেছে। আমড়া গাছে থোকায় থোকায় আমড়া ঝুলছে। মালটা গাছে মালটা, লেবু গাছে লেবু, কামরাঙ্গা গাছে কামরাঙ্গা ধরেছে। এছাড়া গোলাপ, গান্ধা, জুই, চামেলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে। ফুলের পাশাপাশি রয়েছে সবজি গাছ লাউ , পুঁই শাক ও বেগুন প্রভৃতি। তার ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির ফল, ফুল ও সবজির ৫০ টি ছোট বড় মাদা রয়েছে।
বোয়ালিয়াকুল গ্রামের সর্দার ও ছাদ কৃষক আলহাজ্ব মোঃ আবুল মুনছুর জানান ২০১৮ সালে আমার ছেলে মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন সীতাকু- থেকে প্রথম কয়েকটি ফুলের চারা দিয়ে ছাদ কৃষি শুরু করি। গাছের চারার অবস্থা ভালো দেখে উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। পরে একএক করে আমড়া, কমলা, ছবেদা, কামরাঙ্গাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ গাছ রোপন করি। বর্তমানে বিভিন্ন ফলদ গাছে ফল ধরেছে। আমার পাশাপাশি এ ছাদ কৃষি গাছের পরিচর্যা করছেন আমার ছেলেরা। তিনি আরো বলেন এ বছর ছাদে রোপিত গাছের লেবু সারাবছর নিজেরা খেয়েছি আবার প্রতিবেশীদের দিয়েছি। এদিকে বাড়ি ছাদে বিভিন্ন ফল গাছ লাগানোর ফলে ছাদের কোন ক্ষতি হবে হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থপতি ডিজাইন এন্ড কনসালট্যান্ট এর ইঞ্জিনিয়ার কামরুদ্দোজা বলেন ছাদে যদি সবসময় পানি জমে স্যাঁত স্যাঁতে হয়ে থাকে তাহলে ছাদের ক্ষতি হয়। ছাদের উপর টবে গাছ লাগানোর সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন টব থেকে পানি ছাদে না পরে। ছাদ থেকে টব বা ড্রামকে ইট দিয়ে একটু উপরে রাখতে হবে যেন ড্রামের নিচে আলো বাতাস যাতায়াত করতে পারে। এখন বেশীর ভাগ ছাদে দেখা যায় টব লাগানোর ফলে ছাদটা পানিতে ভিজে থাকে। যার কারনে ছাদ অনেকাংশে দুর্বল হয়ে পড়ে। সুতরাং যারা সখের বশে বাড়ির ছাদে বাগান করছেন তারা সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ছাদে কোন প্রকার পানি না জমে এবং ছাদ আর টবের মাঝখানে যেন কিছুটা ফাঁক থাকে।