সংবাদ শিরোনাম
Home / বিনোদন / সীতাকুণ্ড ইকোপার্কে ঘুরে দেখে আসুন মোহনীয় দুটি পাহাড়ি ঝর্ণা

সীতাকুণ্ড ইকোপার্কে ঘুরে দেখে আসুন মোহনীয় দুটি পাহাড়ি ঝর্ণা

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিএসসি,সীতাকুণ্ড টাইমসঃ
মানুষ প্রকৃতিপ্রেমী। সময় সুযোগ পেলে আমরা ছুটে যায়
প্রকৃতির পাশে। আর সেটা দুরে বা কাছে এটা কেন ব্যাপর নই। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পাহাড় এবং নদীর সমন্বয়ে সেজেছে অপরূপে। একদিকে পাহাড়ি ঝর্ণা অন্য দিকে নদীর কলতান দেশী বিদেশী পর্যটককে মুগ্ধ করে তুলছে প্রতিনিয়ত।
প্রতিদিন ভোরে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শতশত পর্যটক আসছে সীতাকুণ্ডে।
তারা কেউ ছুটছে পাহাড়ে আবার কেউ নদীতে।
বর্ষা নাথাকলেও বর্ষারপানির স্পর্শ পেতে সীতাকুণ্ড সদর থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে বোটানিক্যাল গার্ডেন ইকোপার্কে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন দুটি মনোরম ঝর্ণা।
চঞ্চলা ঝর্ণা তার মোহিনী রূপে যুগে যুগে মানব হৃদয়ে পাগলহারা ঢেউয়ের দোলা তুলে বয়ে গেছে অবিরত। আর এই ঝর্ণার টানে মানুষ ছুটে গেছে দুর্গম থেকে দুর্গমতর এলাকায়। কিন্তু পাশাপশি দুটি ঝর্ণা কোন দুর্গম এলাকায় না হয়ে হাতের নাগালে , সিঁড়ি পথ বেয়ে নেমে খানিকটা নিরিহ ঝিরিপথ ধরে এগিয়ে গেলেই দেখা মেলে এমনই দুটি ঝর্ণা সুপ্তধারা এবং সহস্রধারা। সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে এই দুটি ঝর্ণা বর্ষাকালে তার রূপের পেখমমেলে ডাক দিয়ে যায় প্রকৃতি প্রেমীদের অবিরত। বর্ষা মৌসুমে মোহনীয় রূপ নেয় সীতকু-ের সহস্র ধারা ও সুপ্ত ধারা নামের দুটি পাহাড়ি ঝর্ণা। বর্ষা মৌসুমে অবিরত ধারায় পানি গড়িয়ে পড়ছে। দুর্গম পথের কারণে সাধারণ দর্শনার্থীরা তেমন আগ্রহ না দেখালেও অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় তরুণ-তরুণিদের কাছে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঝর্ণা দুটি। তবে বর্ষাকাল ছাড়া বছরের বাকি সময় এই দুটি ঝর্ণায় পানি থাকে না। তাই শুষ্ক মৌসুমে দুর থেকে দেখলে মনে হবে ঝর্ণাও কোন পানি নেই। তবে ঝর্ণাও কাছে গেলে সামান্য কিছু পানি পরতে দেখবেন।

দর্শনার্থীদের কাছে সীতাকুণ্ডের সহস্র ধারা কিংবা সুপ্ত ধারা তেমন পরিচিত নয়। সীতাকুণ্ডে এ ধরণের দু’টি ঝর্ণা রয়েছে, তা হয়তো অনেকেই জানে। কিন্তু দুর্গমতার কারণে সাধারণ দর্শনার্থীদের ঝর্ণা দু’টি টানেনা। আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ বেয়ে উপরে ওঠা।

আবার জঙ্গলাকীর্ণ লম্বা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামা। কোথাও কোথাও আবার সিঁড়ি না থাকায় পাহাড়ি ঝর্ণা ধরে হেঁটে যাওয়া। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের কাছে ঝর্ণা দু’টি এক অন্যরকম অনুভূতি সৃষ্টি করে।

তরুণ ও তরুণীরা বলেন, এক কথায় অসাধারণ এবং অসাধারণ। প্রথম কোন ঝর্ণার এত কাছাকাছি যাওয়া। পানি যখন শরীরে পরে তখন শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। বোঝানো যাবে না এত মজা লাগছে।

বছরের অধিকাংশ সময় পানি’র ধারা থাকে না বলে এটির নামকরণ করা হয়েছিলো সুপ্তধারা। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এসে সুপ্ত ধারা প্রাণ ফিরে পায়। তিনটি পয়েন্ট দিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসে পানির ধারা। সহস্রর ধারায় যাওয়ার পথ কিছুটা সহজ হলেও সুপ্ত ধারার ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম। এখানকার সিঁড়িগুলো ভাঙা হওয়ার কারণে দর্শনার্থীদের পাহাড়ি পথ বেয়েই নিচে নামতে হয়। আর অনেকটা পথ এগিয়ে যেতে হয় ঝর্ণা থেকে নেমে আসা পানির পথ দিয়েই।

তরুণরা বলেন, ‘চট্টগ্রামে এত সুন্দর জায়গা আছে। তা আমরা আগে খুঁজে পায়নি। এখানে আসতে অনেক পরিশ্রম হয়েছে। কিন্তু এখানে আসার পর আমরা সার্থক। অনেক ঝর্ণায় গিয়েছি কিন্তু কাছে যেতে পারিনি। কিন্তু এবারের ঝর্ণায় যেয়ে ছুঁয়ে দেখেছি।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী সবুজ জানায় বাড়ির পাশেই ঝর্ণা দুইটিকে বারবার দেখতে ইচ্ছাকরে। যখন তাদের ভরা যৌবন থাকে তখন তাদের গর্জন আমাদের পেশাগত কর্মময় করে তুলে।
ঝর্ণা দেখতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন স্থানীয় ইজারাদার সো. সাহাবউদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা দর্শনার্থীদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছি। তাদের সব ধরণের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের। বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন ৮শ থেকে ১ হাজার দর্শনার্থী সীতাকুণ্ডের ইকোপার্কে বেড়াতে আসলেও তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশী সহস্র ধারা কিংবা সুপ্ত ধারা দেখতে পাহাড়ের নিচে নামে।
তবে অনেক নিরপত্তার জন্য টুরিষ্ট পুলিশের দাবী জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *