সবুজ শাকিল,সীতাকুণ্ড টাইমস:
সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড বাজার এলাকায় মহাসড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত শত বছরের পুরানো পুকুর ভরাট করে চলছে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের কাজ। পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে স্থানীয় ভূমিদস্যু খ্যাত সিরাজুল ইসলাম এ পুকুর ভরাট কাজ অব্যাহত রাখলেও এ ব্যাপারে নীরব রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। পুকুর ভরাটের ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবশে এবং প্রকৃতিতে। অভিযোগ রয়েছে ভূমিদস্যু চক্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই পুকুর ভরাট শুরু করায় কর্তৃপক্ষ দেখেও দেখছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,দিনরাত ট্রাকে ট্রাকে মাটি এনে বিরামহীন গতিতে চলছে পুকুর ভরাটের কাজ। মহাসড়কের সাথে লাগোয়া সরকারী জায়গার এই পুকুরটি ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধেক ভরাট করে ফেলা হয়েছে। ভরাট করা পুকুরের জায়গায় গড়ে উঠছে বহুতল বাণিজ্যিক স্থাপনা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়বকুণ্ড বাজারের পাশে সরকারি জায়গার উপর অবস্থিত এই পুকুরটি প্রচীনতম। এই পুকুরটির পানি বাজারের ব্যবসায়ী সহ কয়েক হাজার মানুষ ব্যবহার করতো। এলাকার পরিবেশ এবং বায়ুমন্ডল রক্ষা করা,পুকুরে গোসল করা,মসজিদের মুসল্লিরা অজু করা,বাজারের আশপাশে সংগঠিত অগ্নিকান্ড নির্বাপনে এ পুকুরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভূমিদস্যু “ সিরাজ ” পুকুরটি দফায় দফায় ভরাট করে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করার ফলে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পুকুরটি বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান,প্রভাবশালী মহলটি প্রকাশ্যে পুকুর ভরাট করলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মিলছে না। বর্তমানে এ এলাকায় পানি শূন্যতা প্রকট হয়ে উঠেছে। শতবছরের এ পুকুরটি রক্ষার্থে তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন,বিনা অনুমতিতে পুকুর বা জলাশয় ভরাটেরও কোন নিয়ম নেই। কেউ পুকুর ভরাট করতে চাইলেও ফায়ার সার্ভিস,পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিতে হবে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনে তা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। স্থানীয় এলাকাবাসী একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে সোচ্চার হলেই এ ধরণের জলাশয় ভরাট অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মাহিনুল ইসলাম জানান, পুকুরটি ভরাটের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। যারা পুকুরটি ভরাট করছে তাদেরকে পুকুরের খতিয়ানসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে বলা হয়েছে। কাগজপত্র পর্যালোচনার পর পুকুর ভরাট বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।