মুসলেহ উদ্দীন, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)ঃ
স্মার্ট ভূমি সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতে ভূমি সপ্তাহ-২০২৩ এর শুভ উদ্ভোধন করা হয়েছে।
সারাদেশের নেয় সীতাকুণ্ডেও ভূমি সেবা সপ্তাহ-২০২৩ শুরু হয়েছে। এ বছরের ভূমি সেবা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্মার্ট ভূমি সেবায় ভূমি মন্ত্রণালয়। এ উপলক্ষে উপজেলার ইউনিয়ন ও পৌর ভূমি অফিসে ২২ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ভূমি সেবা সপ্তাহ -২০২৩ এর কার্যক্রম চলমান থাকবে।
আজ সোমবার (২২ মে) সকাল ১১ টায় উপজেলা ভূমি অফিসে শুভ উদ্ভোধন করা হয়।
ভূমি সপ্তাহ অনুষ্টানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মানিক লাল বড়ুয়া, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার চৌধুরী, সাবেক সভাপতি এম. সেকান্দর হোসাইন প্রমূখ। এছাড়া উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহব্যাপী এই বুথে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রযোজ্য ভূমি সেবা দেওয়া হবে, ভূমিসেবা বিষয়ে অবহিত করা ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করা স্মার্ট ভূমিসেবার মূল অংশীজন হিসেবে দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করা, স্মার্ট ভূমিসেবা বিষয়ে সকলকে পুরাপুরি অবগত করা ও ভূমি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজ নাগরিক অধিকারের ব্যাপারের সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এ বছরের ভূমি সেবা সপ্তাহের মূল লক্ষ্য।
এছাড়াও ভূমিসেবা সপ্তাহকালীন বিশেষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশকিছু ভূমিসেবা প্রদান করা হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম জানান, এ বছরের ভূমি সেবা সপ্তাহে ই-নামজারি, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, অনলাইন সার্টিফাইড খতিয়ান ও ১৬১২২ নম্বরে কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা প্রদানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এছাড়াও অনলাইনে খাজনা রেজিস্ট্রেশন, মিউটেশন, স্মার্ট ভূমি নকশা, স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও স্মার্ট ভূমিসেবা স্থাপনে মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্যক ধারণা প্রদান করা হবে।
তিনি আরও জানান, আমরা প্রতিটি ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি, খাজনার বিষয়ে অনেকের এই সমস্যা হচ্ছে, একটি খতিয়ানে একাধিক মালিক থাকবে সেখানে এককভাবে খাজনা আদায়ের সুযোগ নেই। এই ক্ষেত্রে খতিয়ানে সবার অংশ ছাড়া খাজনার আদায়ে করা যাচ্ছে না। এটির সমাধান খুবই সহজ এই সময়ে যার যার অংশ অত্র খতিয়ান থেকে আলাদা করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দাখিলা ছাড়াই নামজারি খতিয়ান সৃজন করতে পারবেন। এরপর ভূমিকর আদায় করতে সহজ হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরউ বলেন, অনেকে আরএস ও বিএস খতিয়ানের জন্য আমাদের এখানে আবেদন করেন। এখন থেকে অনলাইন সার্টিফাইড কপি পেতে পারেন খুব সহজে। এতে মাত্র ৩৫ টাকা চার্জ কাটবে বলে জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন,
সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা চারটি স্মার্ট ভূমিসেবা, রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ, স্মার্ট ভূমি নকশা, স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ছাড়াও বেশকিছু ভূমিসেবা ব্যবস্থা স্মার্ট ডিজিটালাইজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডিজিটালাইজকৃত ভূমিসেবা সমূহও স্মার্ট করে ব্যবহারের সহায়ক ও সহজ করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে ই-নামজারির দ্বিতীয় ভার্সন স্থাপনের কাজ এবং বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভেতে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারও হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাই। তিনি ভূমি অনলাইন ডিজিটালাইজ করেছেন। এখন আপনি ঘরে বসেই জমির খাজনা দিতে পারবেন। সরকারি কোন সেবার জন্য কারো কাছে যেতে হবে না। সরকারি সকল সেবা স্মার্ট হতে যাচ্ছে। সব যখন স্মার্ট হয়ে যাবে তখন দালালরা আর বাড়তি অর্থ নেওয়ার সুযোগ পাবে না। সে ভূমি অফিসের লোক হোক আর বাইরের দালাল হোক। আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন। তবে, কিছু বিড়ম্বনা হচ্ছে, তবে একবার অনলাইন হয়ে গেলে আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। সেবা গ্রহীতারা মোবাইলে নিজেই সেটি করতে পারবেন। যেহেতে অনেক সেবাগ্রহীতা এখনো এ সম্পর্কে জানেন না। সেজন্য সপ্তাহব্যাপী ভূমি অফিসেই সবধরনের ডিজিটাল করনের কাজ করে দিবে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে ২০-২৫ বছর নামজারি করে না। তারা দলিল রেজিস্ট্রি করেই নিশ্চিন্ত বসে আছেন। এর ফলে খারাপ প্রকৃতির লোক একই জমি বারবার বিক্রি করা সুযোগ পান। তাইতো নামজারি করা গুরুত্বপূর্ণ কাজ।