মামুনুর রশীদ,সীতাকুণ্ড টাইমসঃ
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা কহিনুর বেগম (৪০)। মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে জীবনযাপন করছেন বহুদিন যাবত।
চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন চট্টগ্রাম শহরে, ছিলেন নগরের হালিশহরের বি-ব্লকে ভাইয়ের বাসায়।
কহিনুর বেগম মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে সবসময়ই শঙ্কায় থাকেন পরিবারের লোকজন, রাখেন চোখেচোখেও। কিন্তু সবারই অগোচরে শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) ভোররাতে ভাইয়ের বাসা থেকে বের হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান কহিনুর বেগম। এদিকে, ভোরের আলো ফুটতেই কহিনুর বেগমকে খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন। সারা আশপাশ খোঁজা হয় দিনভর। করা হয় এলাকায় এলাকায় মাইকিং।
জানানো হয় স্থানীয় থানাও। কিন্তু কোথাও খোঁজ পাওয়া গেল না তার। দিনের আলো নিভে সন্ধ্যা নেমে এলে সবাই হতাশ মনে ফিরে যান ঘরে। কিন্তু না! এবার কহিনুর বেগমকে খুঁজে দিলো ফেসবুক! হ্যাঁ, ‘সীতাকুণ্ড নিউজ ২০’ নামের একটি ফেসবুক পেইজের একটি পোস্টে আটকে গেল নিখোঁজ কহিনুর বেগমের চাচাতো ভাই সালাউদ্দিন আহমেদের চোখ। সেই পোস্টে লিখা ছিল ‘একজন মহিলাকে খুঁজে পাওয়ার খবর। আর ছিল পোস্টটি শেয়ার করে মহিলার পরিবারের নজরে আনার অনুরোধ এবং ছিল যোগাযোগের একটি মোবাইল নম্বর।’
সেই মোবাইল নম্বরটিতে যোগাযোগ করে কহিনুর বেগমের পরিবারের গন্তব্য এবার সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী। সেখানে পৌঁছে সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সীতাকুণ্ড নিউজ ২০ পেইজের এডমিন এবং এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে বুঝে নেন কহিনুর বেগমকে। এবং সবাইকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সন্তোষ মনে ফিরে যান নিজ গন্তব্যে। কহিনুর বেগমকে নিতে আসা তার চাচাতো ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথমেই ধন্যবাদ মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি। এরপর ধন্যবাদ জানাই ‘সীতাকুণ্ড নিউজ ২০’ পেইজের এডমিন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন , সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ এসআই রফিকুল এবং এলাকাবাসীর প্রতি, যাদের কল্যাণে আমরা আমাদের বোনকে ফিরে পেয়েছি।’ এবং তিনি সকলের নিকট বোনের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
‘সীতাকুণ্ড নিউজ ২০’ পেইজের এডমিন মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের প্রতি মানুষের অবশ্যই কর্তব্য রয়েছে, এবং আমরা আমাদের কর্তব্যটুকু পালন করেছি। একজন মা’কে সাহায্য করেছি। একজন বোনকে সাহায্য করেছি। নিশ্চয়ই মহান সৃষ্টিকর্তা সেটি চেয়েছেন, আমরা উছিলা মাত্র।’ তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই মাহাবুব ভাইকে। উনাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে যার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি।’
ভাটিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘এলাকাবাসীর নিকট খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই, এবংএসআই রফিকুলসহ সকলের সহযোগিতায় বোনটিকে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করি।’