আতাউল হাকিম আরিফ,সীতাকুণ্ড টাইমসঃ
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে , চলতি বছর ডিসেম্বর-২০২০ ‘র শেষ সপ্তাহ থেকে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ এর নির্বাচন পালাক্রমে সম্পন্ন করার ঘোষণায় বাংলাদেশের সর্বত্র নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই বিশেষ করে রাজনীতির মাঠে বিরোধী দল অনেকটায় কোনঠাসা থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মধ্যে নির্বাচনী উত্তাপ জোরেসোরে বিরাজ করছে।
মেয়র, কাউন্সিলর কিংবা চেয়ারম্যান, মেম্বার হওয়ার দৌড়ে প্রতিটি এলাকায় একাধিক প্রার্থী স্ব-স্ব প্রচারণায় নেমেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নির্বাচন মানেই তো একধরণের উৎসব এবং উৎকন্ঠাও বটে। যদিও উৎসব এবং উৎকন্ঠা এই দুটি যদি মারাত্বক পর্যায়ে ঠেকে যায় সেক্ষেত্রে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে যেতে পারে! প্রসঙ্গত; আমার এলাকা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে স্থানীয় সরকার নির্বাচন কে কেন্দ্র করে গত ১মাস ধরে বেশ সরগরম। বেশকিছু প্রার্থীর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে পৌরসভা সহ প্রতিটি ইউনিয়ন,ওয়ার্ড পর্যায়ে।সম্ভাব্য প্রার্থীর কাতারে পুরনো ত্যাগী রাজনীতিবিদ যেমন আছে তদ্রুপ একেবারেই নতুন এবং সুবিধাভোগীর আধিক্যও কম নয়। দলের হাইকমান্ড থেকে বার্তা এসেছে লেভেল ফিল্ডে নির্বাচন হবে, এক্ষেত্রে ত্যাগ ও যোগ্যতার মাফকাঠিতে প্রার্থী সিলেকশন করা হবে। আমরা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছি মেয়র/চেয়ারম্যান পদে দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে সরাসরি মনোনয়ন প্রদান করবে, এক্ষেত্রে স্থানীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক প্রেরিত শর্ট লিষ্ট এবং গোয়েন্দা রিপোর্ট বিবেচনায় এনে প্রার্থী মনোনীত করা হবে। কাউন্সিলর/মেম্বার পদে স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ সাধারণত দলীয় সমর্থন ঘোষণা দিয়ে থাকেন। এখন প্রশ্ন দলীয় সমর্থন পেতে কেন্দ্রে কোন কোন প্রার্থীর নাম প্রেরণ করা হবে, কাউন্সিলর/মেম্বার হিসেবে কোন প্রার্থীর নাম ঘোষিত হতে পারে! যদিও সেটি পুরোপুরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তথাপি আওয়ামী রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন জড়িত থাকার প্রেক্ষিতে আমার ব্যক্তিগত কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরছি-
প্রস্তাবনা সমূহ :
————–
১। যারা কমপক্ষে দুইবার একই পদে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁদের বাদ দিয়ে বঞ্চিতদের সুযোগ দেয়া
২।যেসব প্রার্থীর ছাত্র রাজনীতির ব্যাকগ্রাউন্ড আছে তাঁদের অগ্রাধিকার প্রদান।
৩। ১৯৯০ ‘র গণ আন্দোলন, ১৯৯৬ এর অসহযোগ আন্দোলন, ২০০১ সালের জামায়াত, বিএনপির সহিংসতা বিরোধী প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। এইক্ষেত্রে ২০০৮ সালের পর দলের সুসময়ে যাদের আগমন ঘটেছে তাঁদের অপেক্ষায় রাখা যেতে পারে।
৪। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে অনুপ্রবেশকারীদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না দিয়ে তাঁদেরকে দুঃসময় মোকাবিলায় পরখ করা যেতে পারে! অর্থাৎ এবারের নির্বাচনে তাঁদের বিবেচনায় না রাখা।
৫। রাজনৈতিক ভাবে ত্যাগের পাশাপাশি শিক্ষিত, সৃজনশীল এবং সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা
৬। বিশেষ ক্ষেত্রে প্রার্থীর পারিবারিক ও সামাজিক ঐতিহ্য বিবেচনায় আনা।
আমি/আমরা বিশ্বাস করি সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামীলীগ এইক্ষেত্রে অবশ্যই অগ্রণী ভূমিকা রাখবে, কেননা দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম আল মামুন দুজন-ই তৃণমূলের নেতা, রাজনীতির মাঠে অত্যন্ত ত্যাগী, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। স্থানীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, তিনিও দ্বিতীয় মেয়াদে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন, তৃণমূলের তাঁরও অত্যন্ত গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। উপরোক্ত ৩ জনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা স্বাভাবিক ভাবেই খুবই ইতিবাচক। সাম্প্রতিক আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনে যে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটিয়েছে সীতাকুণ্ডের নের্তৃবৃন্দও আশা করছি তেমনি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটিয়ে নতুন যুগের সূচনা করবেন।