সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্ক ঃ সীতাকুণ্ডসহ সারা দেশে বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন গুলোর পরিচালক, শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারিদের করুণ দশায় পরিণত হয়েছে।
গত ১৬মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে কিন্ডারগার্টেন গুলোও বন্ধ ঘোষনা করা হয়। সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রায় ৬২টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। তারমধ্যে শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে ৬ শতাধিক। বেশীর ভাগ স্কুল ভাড়া ঘরে পরিচালিত হয়ে হয়ে আসছে।একদিকে স্কুল বন্ধ অন্যদিকে প্রতিমাসে ভাড়া দেওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এদিকে শিক্ষকদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্কুল মালিকরা।
সীতাকুণ্ড কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর সভাপতি মোহাম্মদ কায়সারুল আলম জানান এই দূর্যোগ মুহুর্তে সরকারের সহযোগীতা না পেলে অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই করোনা মহামারিতেও আমারা অনেকেই অনলাইনে পাঠদান অব্যহত রেখেছি। জাতি গঠনে এই কে.জি স্কুলের টিচাররা শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাট ভুমিকা রাখতেছে। এই মহাসংকটে, মহাবিপদে বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেক কে.জি স্কুলের টিচারদেরকে একটি রেশন কার্ড ও মাসিক ৬০০০ টাকা সম্মানী ভাতা দিয়ে তাদেরকে বাঁচতে সাহায্য করার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানাচ্ছি।
এসোসিয়েশন এর সেক্রেটারি ডাক্তার সজল জানান আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। এসময়ে আমাদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের কাছে জোরদাবী জানাচ্ছি। তিনি আরও জানান এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদনও করেছে স্কুল গুলোকে সহায়তা করার জন্য। তাছাড়া স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব দিদারুল আলম ও উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন এর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এদিকে এসোসিয়েশন এর প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আবুক কাসেম ওয়াহিদী জানান কিন্ডারগার্টেন গুলোর সংগঠন কেন্দ্রিয় ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইতিমধ্যে আবেদন করেছে। আমরাও সীতাকুণ্ড থেকে মাননীয় প্রধানমন্রীীর কাছে আবেদন করেছি এই ক্লান্তিলগ্নে কেজি স্কুল গুলোর প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম এর চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ দিদারুল আলম
দেশের সকল কে.জি স্কুলের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে আবেদন করেছে তা সীতাকুণ্ড কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দরাও সমর্থন করেছে।
আবেদনটি নিচে দেওয়া হল ঃ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের সকল কে.জি স্কুলের পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মচারীদের সালাম নিবেন। করোনা ভাইরাসের কারণে আপনার নির্দেশে গত ১৬ই মার্চ দেশের সকল কে.জি স্কুল বন্ধ হয়ে যায়, একটি কে.জি স্কুল পরিচালিত হয় ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক টিউশন ফি’র উপর। আপনার নির্দেশনা অনুযায়ী স্কুল বন্ধ হওয়ার সাথেসাথেই স্কুলের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। গত ১৬ই মার্চের পর থেকে কোন কে.জি স্কুল এক টাকাও টিউশন ফি পায়নি, যার কারনে স্কুলের ঘরভাড়াও দেওয়া যাচ্ছে না, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনও দেওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে দেশের ৮০% স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে এবং লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা বেকার হয়ে যাবে। পৃথিবীতে আপনার মত যোগ্য, দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী থাকতে যদি ৮০% স্কুল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এটি হবে বাংলাদেশের জন্য একটি কালো অধ্যায়। শিক্ষকরা জাতির বিবেক, এই কে.জি স্কুলের শিক্ষকরা এক কোটি শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দান করে দেশসেবা করে আসছে। আপনি যদি তাদের কথা না ভাবেন তাদের দিকে সুনজর না দেন তাহলে এই শিক্ষকরা না খেয়ে মারা যাবে। এই কে.জি স্কুলের টিচারদের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়ে দেশে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, জজ, ব্যারিস্টার এবং অফিসার তৈরি হচ্ছে। এরা জাতীর সম্পদ, জাতি গঠনে এই কে.জি স্কুলের টিচাররা শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাট ভুমিকা রাখতেছে। এই মহাসংকটে, মহাবিপদে বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেক কে.জি স্কুলের টিচারদেরকে একটি রেশন কার্ড ও মাসিক ৬০০০ টাকা সম্মানী ভাতা দিয়ে তাদেরকে বাঁচতে সাহায্য করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাদের একমাত্র অভিভাবক তাই আপনার কাছে এই আকুল আবেদনটি জানালাম,, ভুল হলে ক্ষমা করে দিবেন।