সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / সীতাকুণ্ড উপকূলে শিকারীর ফাঁদে মারা যাচ্ছে মায়াবী হরিণ

সীতাকুণ্ড উপকূলে শিকারীর ফাঁদে মারা যাচ্ছে মায়াবী হরিণ

সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্কঃ

সীতাকুণ্ড উপকুল অঞ্চলে বন্যপ্রাণী মায়াবী হরিণ বেঁচে থাকতে পাচ্ছেনা মানুষের তৈরী ফাঁদের কারনে। উপকূলে মিঠাপানি ও খাবারের সন্ধানে এসে শিকারীর ফাঁদ ও কীটনাশক যুক্ত সবজি খেয়ে মারা পড়ছে বহু হরিণ। ফলে প্রাকৃতিক বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে এরকম বেশ কিছু ঘটনার সত্যতা পেয়ে উদ্বিগ্ন বন কর্মকর্তারাও। ফলে তারা উপকূলে পাহারা জোরদার করেছে বলে জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের কয়েকটি ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় এখনো প্রচুর হরিণ রয়েছে। এসব হরিণগুলো প্রায়শই রাতের অন্ধকারে লোকালয়ে শীতকালীন সবজি খেতে কিংবা মিঠাপানি পান করতে লোকালয়ে নেমে আসে। এদিকে হরিণ লোকালয়ে নেমে আসার সুযোগে এক শ্রেণির শিকারী হরিণ শিকারের নেশায় মেতে উঠেছে। তারা নানারকম ফাঁদ পেতে রেখে হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করে। এছাড়া লোকালয়ে সবজি খেতে গিয়ে কীটনাশক মিশ্রিত সবজি খেয়ে মারা পড়ছে বহু হরিণ। বিশেষ করে সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড ও বাঁশবাড়িয়া সাগর উপকূলে মাঝে মধ্যেই এভাবে হরিণ ধরা পড়া ও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এভাবে গত ডিসেম্বরেও বিশালাকার একটি হরিণ উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বগাচতর এলাকায় সবজির বিষক্রিয়ায় মারা গেলে খবর পেয়ে উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করেন। পরে পোষ্টমর্টেম শেষে সেটি দাফন করা হয়। এছাড়া আরো অনেকগুলো হরিণের হাড়গোড় পড়ে আছে বনের বিভিন্ন স্থানে। বন কর্মকর্তারা সেগুলোও দেখেছেন। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের উপকূলীয় এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ আছে। এসব হরিণগুলো এই শুকনো মৌসুমে মিঠা পানির সন্ধানে উপকূলে আসে। এতে তারা কখনো শিকারীর ফাঁদে আবার কখনো কৃষকের সবজি খেয়ে কীটনাশকের বিষক্রিয়ার শিকার হন। এছাড়া ফাঁদে পড়ে প্রান হারায় অনেক হরিণ। তিনি বলেন, সুযোগ সন্ধানী শিকারীদের পাহারা দেওয়া খুবই কঠিন কাজ। তবু আমরা উপকূলীয় কৃষকদের নিয়ে একটি সচেতনতা সভা করতে চেষ্টা করছি। এটি করা গেলে হয়ত কৃষকরা হরিণগুলোর মৃত্যু যেন না হয় সে বিষয়ে সচেতন হবে। এর আগেও উপজেলার সৈয়দপুর, বাড়বকুণ্ডসহ বিভিন্ন স্থানে বারবার অনেক হরিণ আটক হয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলো উপকূলীয় বনে পুনরায় অবমুক্ত করা হয় আবার কিছু কিছু হরিণ শিকারীরা মাংস বিক্রি করে দেয় বলেও জানা গেছে। সীতাকুণ্ড উপজেলার উপকূলীয় বনবিভাগের রেঞ্জ সহযোগি ফরেষ্টার খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলেন, উপকূলে পানি ও সবজি খেতে এসে অনেক হরিণ মারা পড়ছে। কয়েকদিন আগেও একটি বিশাল হরিণ বিষমিশ্রিত সবজি খেয়ে মারা গেছে। আমরা সেটি উদ্ধারের পর পোষ্টমর্টেম করলে হরিণের শরীরেও বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাই। ফরেষ্টার আরিফুল ইসলাম আরো বলেন, বিষ মিশ্রিত সবজি খেয়ে মাঝে মধ্যেই হরিণ মারা পড়ছে বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ সবজি ক্ষেতের অনেক স্থানেই হরিণের হাড়গোড় পড়ে আছে এবং সেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ নেমে আসার মত পায়ের ছাপ আমরা দেখেছি। এছাড়া অনেক ক্ষেত ও উপকূলীয় এলাকায় শিকারীদের পেতে রাখা ফাঁদও দেখেছি। এজন্য উপকূলীয় এলাকায় একটি সভা করে এলাকাবাসীকে সচেতন করার উদ্দ্যোগের প্রস্তুতির কথা জানান তিনিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *