এম সেকান্দর হোসাইন, ১৬ জুন (সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
চট্টগ্রামের আন্তজেলা ডাকাত দলের হোতা জসিমকে পুলিশ আবারো আটক করেছে। শনিবার নোয়াখালী কবিরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার শশুর বাড়ী থেকে তাকে আটক করে সীতাকু- থানার পুলিশ। এছাড়া তার স্বীকারোক্তিতে পুলিশ শনিবার রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুকুরিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের অপর সদস্য ফারুক (৩২)কে আটক করে। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা, ৬টি স্বর্নের চেইন, ৩টি আংটি ও ৬টি মোবাইল উদ্ধার করে। এ সকল মালামাল ডাকাতির সময় তারা লুট করে নিয়ে গিয়েছিলো।
আটককৃত ডাকাতরা হলো, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার উত্তর বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের জেবল মেস্ত্রীর বাড়ীর সিরাজুল হকের পুত্র জসিম (৪২)। এক সপ্তাহ পূর্বে সে জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেছে। অপর ডাকাত হলো চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার পুকুরিয়া গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে ফারুক (৩২)।
জানা যায়, গত ৬জুন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আসলাম চৌধুরীকে জেলহাজতে পাঠানোর প্রতিবাদে বিএনপি নেতা কর্মিরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে ব্যারিকেড দেয়। এসময় কয়েকটি গাড়ীতে আগুন ও ভাংচুর করে তারা। এই সুযোগে কাজে লাগিয়ে আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা একত্রিত হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু-ের বাঁশবাড়ীয়া এলাকায় কয়েকটি কার ও মাইক্রোতে গণ ডাকাতি করে। এতে স্থানীয় কয়েকজন ক্যাডারও তাদের সাথে এ কাজে জড়িত হয়। পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম গোপন রেখেছে।
ডাকাতরা ডাকাতির পর মালামাল ভাগ ভাটোয়ারা করে আতœগোপন করে। পরবর্তীতে ডাকাতির ঘটনায় সীতাকু- থানায় মামলা হলে পুলিশ তদন্তে নামে। ডাকাতির সময় লুট হওয়ার মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশ শনিবার ফারুককে তার শশুরবাড়ী নোয়াখালী কবিরহাট এলাকা থেকে আটক করে। এসময় তার থেকে ৩ লাখ টাকা ৩টি মোবাইল, ৪টি স্বর্নের চেইন ও ৩টি স্বর্নের আংটি উদ্ধার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে শনিবার রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার পুকুরিয়া গ্রাম থেকে আটক করা হয় ডাকাত দলের অপর সদস্য ফারুককে। তার থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ৩টি মোবাইল, ২টি স্বর্নের চেইন উদ্ধার করা হয়। সীতাকু- থানার এস আই শফির নেতৃত্বে একদল পুলিশ গতকাল রোববার সকালে তাদের থানায় নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া মালামাল গত ৬ জুন তারিখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু-ের বাঁশবাড়ীয়া এলাকা থেকে ডাকাতির সময় লুট করে নিয়ে যাওয়া মালামাল বলে পুলিশ দাবী করে।
আটক ডাকাত জসিম জানান, তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা আছে সে জানে না। তবে এ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ বার পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল হাজতে গিয়েছে বলে সে জানান। ৬ জুন সে স্থানীয় কয়েকজন ক্যাডারদের সহযোগিতায় ডাকাতিতে অংশ নেয় বলে সাংবাদিকদের জানান।
অপর ডাকাত ফারুক জানান, তাদের ২০ জনের একটি দল রয়েছে। বিভিণœ গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা মহাসড়কের ডাকাতি করে। তবে তাদের দলের সবাই জসিমকে অভিজ্ঞ হিসাবে মনে করে। সে জসিমকে নিয়ে ৫০টি অধিক ডাকাতি করেছে বলে সাংবাদিকদের জানান।
সীতাকু- মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামিউল আলম জানান, আটককৃত ডাকাতরা আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। জসিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামসহ নগরীর বিভিন্ন থানায় ২০টি অধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। বেশ কয়েকবার জেল গেলেও জামিনে এসে আবারো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পন্যবাহী গাড়ী ও যাত্রীবাহী বাস, কার ও মাইক্রোতে ডাকাতি শুরু করে। এছাড়া এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের ও অবশিষ্ট লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারে পুলিশ চেষ্ঠা করছে।