সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / ঈদের আমেজে সীতাকুণ্ডে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে

ঈদের আমেজে সীতাকুণ্ডে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সীতাকুণ্ড(চট্টগ্রাম) ঃ
ঈদ উপলেক্ষে সীতাকুণ্ড পর্যটন কেন্দ্র গুলো সেজেছে নতুন সাজে। ঈদ আনন্দে স্থানীয়দের পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ভীড় করছে নারী পুরুষ। পর্যটকরা পাহাড় ও সমুদ্্ের ছুটছে মুক্ত বাতাস উপভোগ করতে। সীতাকুণ্ড গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ,বাঁশবাড়িয়া ও আকিলপুর, সী বিচ, ইকোপার্ক, চন্দ্রনাথ পাহাড় পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলছে দিন দিন। পর্যটকরা সকালে পাহাড়ের চূড়ায় আর বিকালে সমুদ্রের বাতাস উপভোগ করতে ভীড় জমাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডে শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মাধুর্য প্রতিনিয়ত বিস্তৃত হচ্ছে এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সাড়া দিচ্ছে। সরকারী স্বীকৃতি পাওয়ার পর নতুন লে-আউটে সৈকতটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। নোনা-বালুকাময় বাতাসে শরীর ও মনের আলিঙ্গনে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে সমুদ্র সৈকত।
এদিকে, ঈদুল ফিতরকে ঘিরে পর্যটকের ঢল নেমেছে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে। ঈদের প্রথমদিন থেকেই পর্যটকে মুখরিত সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থানগুলো। একদিকে পাহাড় অন্যদিকে সমুদ্র হওয়ায় ভ্রমণ প্রিপাসুদের বাড়তি আগ্রহ দেখা যায় এই অঞ্চলে। ঈদের দিন থেকে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটে।
সরে জমিনে দর্শনীয় স্থান ঘুরে ঘরে দেখা যায়, সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থানে ঈদের আনন্দ উপভোগে করতে কেউ পরিবার-পরিজন, কেউ বন্ধু-বান্ধব, কেউ নতুন বউ, আত্নীয়স্বজন নিয়ে ঘুরাঘুরি করে সময় কাটাচ্ছেন। অনেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘুরতে আসেন ঈদের ছুটিতে।
পর্যটকদের অভিযোগ করে বলেন, ঈদের সময় আসায় আবাসিক হোটেলে বাড়তি ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। হোটেল মালিকরা ইচ্ছা মাফিক ভাড়া নিচ্ছেন। প্রশাসনের কোন ধরনের অভিযান ও তদারকি না থাকায় হোটেল মালিকরা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন বলে জানান দুর দুরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।
সীতাকুণ্ড পৌরসদর বাজার থেকে ৩ কিঃমিঃ পশ্চিমে নামার বাজার রোডে সমুদ্র তীরে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত। কেওড়া বাগানের পাশ দিয়ে ১ কিমি পথটি মাটির চেয়ারে ঢাকা, কাদা এবং ঘাসে ঘেরা, এটি ফোমে মোড়ানো প্রাকৃতিক সোফার মতো মনে হয়। আবার দূর থেকে ঘাসের জমির দিকে তাকালে চোখের সামনে ছোট ছোট টিলার মতো সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাবেন। মনোরম গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, বিভিন্ন সৌন্দর্য এবং মাধুর্যে সজ্জিত, দেশী এবং বিদেশী পর্যটকদের তার জাদু জালে আকৃষ্ট করে। সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের পাশাপাশি বাড়ছে হোটেল-রেস্তোরাঁর সংখ্যা, সৈকতমুখী সড়কে বাড়ছে যাত্রীবাহী গাড়ি।

এদিকে পর্যটকদের অভিযোগ, সৈকতে তীরে সন্ধা পর সিএনজি চালকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন। আসার সময় দু’শ থেকে আড়াই’শ টাকা নেয়। কিন্তু সন্ধা হলেই চার’শ থেকে পাঁচ’শ টাকা নাহলে যেতে চাই না চালকরা। অনেকটা বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে যেতে হয়। এছাড়া, সন্ধার পর যে সব পর্যটকদের সমুদ্রবিলাসে ঘুরতে যায় তারা নিরাপত্তা ঝুুঁকিতে থাকেন বলেও জানান কয়েকজন পর্যটক। যেহেতু সৈকতে এখনো কোন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এর আগে সন্ধার দিকে পর্যটকদের সাথে প্রায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল।
সম্প্রতি গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ঘুরতে আসেন অভিনেতা সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত সীতাকুণ্ডকে দেশ-বিদেশের মর্যাদার আসনে সাজিয়েছে। মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের সম্ভাবনা নিয়েও সমস্যা রয়েছে। এমতাবস্থায় সীতাকুণ্ডে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে সি-বিচের উন্নয়ন ও নানা সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে হবে।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা পর্যটকরা বলেন, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত অন্যরকম মনোরম পরিবেশ তাইতো বারবার ফিরে আসি। সরকারিভাবে সৈকতের সুন্দর্য বর্ধনের কাজ হলে এটি আরো সুন্দর্য মন্ডিত হবে। সৈকতের তীরে যাতায়াত ব্যবস্থা এবং উন্নতমান খাওয়ার হোটেল-মোটেল বা রেস্টুরেন্ট না থাকায় পরিবার নিয়ে আসলে কিছুটা বেকায়দায় পড়তে হয় বলে তারা জানান।
মুরাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রেজাউল করিম বাহার জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও গণমাধ্যমে প্রচারণার কারণে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা বা আবাসিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সরকারের সহযোগিতা অপরিহার্য। কারণ গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যবস্থাপনা, সুরক্ষা বা উন্নয়নের জন্য সরকারি উদ্যোগ অপরিহার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *