এস এম ইকবাল , সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ
সীতাকুণ্ডে ফৌজদারহাটে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ‘ফ্লাওয়ার ফেস্টিভেল’। আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া ৯ দিনব্যাপী ফুল উৎসব চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গতকাল বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান।
উপজেলার ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের পাশে ১৯৪ একর খাস জমির ওপর গড়ে উঠছে এই ডিসি পার্ক। এক সময় সেখানে ছিল অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও মাদকের আড্ডা। গত ৪ জানুয়ারি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এসব অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে সেখানে লাগানো হয় ফুলের গাছ। ইতোমধ্যে সেখানে রোপণ করা হয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি বিভিন্ন জাতের ফুলগাছ। ফুটতে শুরু করেছে নানা রঙের ফুল। প্রথম দেখাতেই যে কারো নজর কাড়বে বাতাসে দোল খাওয়া নানা রঙের এই ফুলগুলো। বিকেল হলে এখানে এখন বৃদ্ধি পায় সাধারণ মানুষের আনাগোনা।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, অবৈধ এই স্থানটির বর্তমান বাজার মূল্য অন্তত এক হাজার কোটি টাকা। এ পার্কটি ‘ডিসি ফ্লাওয়ার পার্ক’ নামে পরিচিত হবে। এ স্থানটি নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, যুব-বৃদ্ধ সব বয়সী ও শ্রেণিপেশার মানুষের চিত্ত-বিনোদনের উদ্দেশ্যে সাজানো হয়েছে। দেশি-বিদেশি শতাধিক প্রজাতির কয়েক লাখ ফুলের গাছ এখানে শোভা পাবে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো নিজেদের রোপণ করা বাহারি টিউলিপ ফুল থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য।
তিনি জানান, ফুল উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দৃষ্টিনন্দন দুই দিঘির মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তা, দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাস্তাকে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে ও রং তুলির আঁচড়ে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণকে। অনুষ্ঠানস্থলের পাশেই বিনামূল্যে পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা থাকবে। সার্বিক নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সম্পূর্ণ এলাকা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক টিমও দায়িত্ব পালন করবে। তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য একটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর ও এতিমদের ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা আয়োজন করা হয়েছে। ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ও বয়োবৃদ্ধদের জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানটি সকলের জন্য বিনামূল্যে উন্মুক্ত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়-সমুদ্রে ঘেরা অনন্য অসাধারণ চট্টগ্রামকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে আমরা বদ্ধপরিকর। সরকারের এই ১৯৪ একর জায়গাকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা করে দেশবাসীকে আমরা একটি নান্দনিক আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট উপহার দিতে চাই। সর্বোপরি এই আয়োজন চট্টগ্রামের মানুষকে মেধা, মনন ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করবে।’
জেলা প্রশাসক জানান, এই ফ্লাওয়ার পার্ককে কেন্দ্র করে রয়েছে আরও অনেক পরিকল্পনা। ফুল ছাড়াও এখানে থাকবে কায়াকিং, ঘুড়ি উৎসব, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা, নৌকা বাইচসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিশুতোষ প্রদর্শনী। মেলাটি সকল শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।