সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / আতংকে সীতাকুণ্ডের মানুষ ঃ ১দিন পর নিভল আগুন

আতংকে সীতাকুণ্ডের মানুষ ঃ ১দিন পর নিভল আগুন

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ
সীতাকুণ্ড কুমিরায় তুলার গোডাউনে লাগা ভয়াবহ আগুন ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট পর্যায়ক্রমে কাজ করে ২৪ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রনে এনেছে। শনিবার সকালে ছোট কুমিরা এলাকার এস এল লোকমানের গোডাউনে লাগা আগুনকে গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ঝুঁকিমুক্ত ও নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসার ঘোষনা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট গুলো পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহারের ঘোষনা দেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল মালেক। সারাদিন আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে না পারায় সেনাবাহিনী,নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ফায়ার ঠীম সারারাত কাজ কাজ করে সকালে আগুন নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। অগ্নিকান্ডের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হোসেন নিজে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেছে। রাতেই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অগ্নিকান্ডের স্থান পরিদর্শন করে।

ঘটনার পর থেকেই আতংকে রয়েছে কুমিরার কয়েকশত মানুষ। একের পর এক বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আতংকে আছে সীতাকুণ্ডের মানুষ। জনবসতির মাধ্যখান দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক। আর মহাসড়কের প্রতিকিলোমিটারেই রয়েছে ৫/৬টি করে ছোট বড় কারখানা। সাথে রয়েছে বড় বড় কন্টেইনার ডিপো। বাড়বকুণ্ড থেকে শুরু করে দক্ষিণ সীতাকুণ্ডের সলিমপুর পর্যন্ত এসব কারখানা গুলো প্রতিষ্ঠিত। অন্য দিকে সমুদ্র উপকুলে রয়েছে অর্ধশত শিপইয়ার্ড। প্রতিনিয়ত শিপইয়ার্ড গুলোতে দূর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে শ্রমিকের। গত বছর থেকে শুরু হয়েছে জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠা ডিপো গুলোতে বিস্ফোরণ। বিএম ডিপোর বিস্ফোরণের শতাধিক লোক হতাহতের পর সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে আবারও বিস্ফোরণের ঘটনায় সীতাকুণ্ডের মানুষ রয়েছে আতংকে। তারপরও সীতাকুণ্ডের স্থানীয় জনতা জীবন মরণ বাজি রেখে যে কোন বিপদে ঝাপিয়ে পড়েছে। কিন্তু জিপিএইচ,পিএইচপি বিএসআরএম,কেএসআরএম সহ বড় কারখানা গুলোতে স্থানীয় বেকার যুবকদের নেই কোন চাকরী।
ঘটনাস্থলে আসা সীতাকুণ্ড সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মোঃ আশরাফুল আলম জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এখন শেষ পর্যায়ে তল্লাশি চালিয়ে দেখছেন কোথাও আর আগুন রয়েছে কিনা। তিনি আরো জানান,গুদামের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা এবং পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের উৎস না থাকায় আগুন নেভানো সময় লেগেছে। ফায়ার কর্মীদের দক্ষতায় গুদামের পাশেই কন্টেইনার ডিপুটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ চৌধুরী বলেন, আগুনের লেলিহানের তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো গুদাম। ভেঙে পড়েছে বিশাল এ গুদামের অবকাঠামো। তিনি আরও জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তৎপরতায় আগুন পাশ^বর্তী কন্টেইনার ডিপো গুলো ছড়াইনি।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ নুরুল আলম দুলাল বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সকাল থেকে পুড়ে যাওয়া স্তূপে তুলার বেল্টে পানি ছিটাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস । বিশাল এ গুদামের কোথাও যেন আগুনের অবশিষ্ট না থাকে, তা নিশ্চিতে কাজ চলছে। গুদামের আশপাশে বেশ কয়েকটি কন্টেইনার ডিপো থাকায় ডাম্পিংয়ের কাজ সাবধানে করতে হচ্ছে।

ইউনিটেক্স সুতা ফেক্টরীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ফারহান আহম্মদ জানান, এ আগুনে গুদামে মজুত থাকা ২ হাজার ৭০০ টন তুলার সবই পুড়ে গেছে। এতে আমাদের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এদিকে এ ঘটনা তদন্তে স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছেন। গঠিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর ডিআইজি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিটিএমসি প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদফতর প্রতিনিধি, বিটিএমইএ প্রতিনিধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *