সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / ইসলামী ব্যাংকগুলো থেকে বিনিয়োগ পাবেন যেভাবে

ইসলামী ব্যাংকগুলো থেকে বিনিয়োগ পাবেন যেভাবে

গোলাম মওলা, সীতাকুণ্ড টাইমস ঃঃ

১৯৮৩ সালে দেশে প্রথম চালু হয় ইসলামি ব্যাংকিং। এখন এ ধরনের ব্যাংক আছে ১০টি। দেশের ইসলামি ব্যাংকিং নিয়ে আছে আলোচনা-সমালোচনা ও জিজ্ঞাসা। এ সব নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ রইলো পঞ্চম ও শেষ পর্ব।

ইসলামি ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, প্রচলিত ব্যাংকগুলোর মতো সহজে ঋণ পাওয়ার সুযোগ নেই ইসলামি ব্যাংকগুলোতে। বিনিয়োগ পেতে হলে গ্রাহককে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের নিয়ম-নীতি ভালো করে জেনে নিতে হবে।

ইসলামি ব্যাংকিং সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রচলিত ব্যাংকগুলোর মতো ইসলামি ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহ করে ঋণ বিতরণ করে না। একইভাবে সুদের হিসাবও করে না। ইসলামি ব্যাংকগুলো গ্রাহকের চাহিদানুযায়ী পণ্য বিক্রি করে। এ ব্যাংকগুলোকে দোকানের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এই পদ্ধতিতে প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও বাংলাদেশি নাগরিক ইসলামি ব্যাংক থেকে শরিয়াহ অনুযায়ী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে বিনিয়োগ নিতে পারবেন।

প্রাথমিক যোগ্যতা

ইসলামি ব্যাংকগুলো থেকে বিনিয়োগ পেতে প্রথমে একজন ‘ভালো গ্রাহক হতে হয়’, বলছেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। যে কোনও শাখায় একাউন্ট খুলে ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে হয়। পাশাপাশি শাখার ম্যানেজার বা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে সম্পর্কও গড়তে হয়।

এরপর শাখার বিনিয়োগ বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে হয়। একাধিক দিনের আলোচনার মধ্য দিয়ে গ্রাহকের ব্যবসা সংক্রান্ত, কখনও পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান বিষয়ে আলোচনার পর আসে জামানত সংক্রান্ত আলোচনা। তারপর ব্যাংকের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হয় গ্রাহককে। এরপর ব্যাংক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জোনাল অফিস অথবা প্রধান অফিসের সঙ্গে আলোচনা করে। এরপর যদি ব্যাংক বিনিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগতভাবে আগ্রহ প্রকাশ করে, তখন বেশ কিছু কাগজপত্র পূরণ করে জমা দিতে হয়।

যে সব কাগজপত্র লাগে

বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ধারার পথিকৃৎ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। ব্যাংকটি ছয়টি পদ্ধতিতে গ্রাহকদের মধ্যে অন্তত ২৩ ধরনের বিনিয়োগ দিয়ে থাকে।

উদাহরণ হিসেবে ব্যাংকটিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ পেতে যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে তা তুলে ধরা হলো—

১। গ্রাহকের বিনিয়োগ সংক্রান্ত আবেদনপত্র।

২। ব্যাংক নির্ধারিত বিনিয়োগ আবেদন ফরম।

৩। ফরম নং-১ (সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ বিনিয়োগের প্রাপ্যতা সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র)।

৪। ফরম নং-২ (আবেদনকারী কর্মচারীর অনলাইনে বেতন বিল সংক্রান্ত প্রত্যয়ন)।

৫। গ্রাহকের ছবি।

৬। তারিখসহ প্রজেক্টের ছবি।

৭। গ্রাহকের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বায়োডাটা ও ছবি।

৮। গ্রাহকের আয়ের বিস্তারিত বিবরণ।

৯। হালনাগাদ ইনকাম ট্যাক্স সনদ।

১০। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত ইমারত কাঠামো নকশা।

১১। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জমি ব্যবহারের অনাপত্তি সনদ।

১২। বিএসসি প্রকৌশলীর নিকট থেকে প্রস্তুতকৃত ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয়ের তালিকা (সরকারি সংস্থা কর্তৃক নির্মিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।

১৩। আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপি।

১৪। বিক্রেতা এবং প্রস্তাবিত বিনিয়োগ গ্রাহকের মধ্যে সম্পাদিত বায়না দলিল।

১৫। গ্রাহকের ঘোষণাপত্র। ক) শরিয়াহ পালন সংক্রান্ত, খ) অন্যান্য ব্যাংকের দায়দেনা সংক্রান্ত। গ) যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ফ্ল্যাট নির্মাণের অঙ্গীকার সংক্রান্ত।

১৬। গ্রাহকের বেতন হিসাব বিবরণী (কমপক্ষে এক বছরের)।

১৭। জমির মালিকানার দলিল (শাখা প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত)।

১৮। বায়া দলিল সমূহ।

১৯। সিএস, এসএ, আরএস, বিএস, সর্বশেষ মাঠ পর্চা ও সিটি জরিপ খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি।

২০। রেজিস্টার্ড পার্টিশন দলিল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

২১। নামজারি খতিয়ানের কপি, ডিসিআর হাল সনের খাজনা রশিদ।

২২। জেলা/সাব রেজিস্ট্রি অফিস কর্তৃক ইস্যুকৃত হালনাগাদ (কমপক্ষে ১২ বছর) নির্দায়ী সনদ (এনইসি)।

২৩। ফ্লাটের মালিকানা দলিল।

২৪। মৌজা ম্যাপ।

২৫। মিউনিসিপাল হোল্ডিং ট্যাক্স সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

২৬। ১০ তলার অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট ভবন অথবা ৪০-এর অধিক ফ্ল্যাট বিশিষ্ট ভবনের ক্ষেত্রে পিডিবি, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনাপত্তি পত্র।

সরকারি বা লিজ প্রাপ্ত প্লটের ক্ষেত্রে আরও কিছু অতিরিক্ত দলিলের প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে প্লটের বরাদ্দপত্র, দখল হস্তান্তর পত্র, মূল লিজ দলিল ও ব্যাংকের অনুকূলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিক্রয় ও বন্ধক অনুমোদনপত্র জমা দিতে হবে।

গ্রাহককে এসব তথ্য-উপাত্ত ও ডকুমেন্টস তার একাউন্ট সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হয়। এরপর শাখার নিজস্ব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে অভ্যন্তরীণ কাগজপত্র প্রস্তুত করে তা অনুমোদনের জন্য জোনাল অফিসে পাঠানো হয়।

এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শাখা যেসব কাগজপত্র পাঠায়— শাখার বিনিয়োগ প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট জোনাল অফিসের যথাযথ সুপারিশসহ ফরওয়ার্ড কপি; সিআইবি রিপোর্ট (অনধিক একমাস মেয়াদি); ব্যাংক নির্ধারিত ফরম্যাটে (২৩ কলাম) পরিদর্শন রিপোর্ট; গ্রাহক, বিনিয়োগ ইনচার্জ এবং শাখা ব্যবস্থাপক কর্তৃক স্বাক্ষরিত লোকেশন ম্যাপ; ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী কর্তৃক শর্তবিহীন আইনগত অভিমত এবং এ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট এবং ব্যাংকের তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার কোম্পানি প্রদত্ত সার্ভে রিপোর্ট।

এ ছাড়াও শাখা থেকে তৈরিকৃত মূল্যায়ন পত্র, প্রস্তাবিত মর্টগেজ সম্পত্তির যথাযথ সনদ এবং কেওয়াইসি, টিপি, এফএটিসিএ, পিইপিএস, আইপি সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো হয়। আর ঢাকার হলে বর্তমান এইচপিএসএম পারফরম্যান্সও পাঠানো হয়।

ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ

গৃহায়ন বিনিয়োগ প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ দিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। নিজ জমিতে নতুন বাড়ি নির্মাণ, নির্মিত বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কিংবা ফ্ল্যাট ক্রয়, নির্মিত বা নির্মিতব্য বাড়ির সম্প্রসারণ, লিফট ও জেনারেটর স্থাপন ও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য ব্যয়ের ৭০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়া হয়।

পল্লী গৃহনির্মাণ বিনিয়োগ প্রকল্প: পল্লী অঞ্চলে বসতবাড়ি নির্মাণ, মেরামত ও উন্নতকরণ, পাকা-আধাপাকা বাড়ি তৈরি, বাড়ি বা ফ্ল্যাট ক্রয়ের সম্পূর্ণ খরচের ৬০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ।

ফলবাগান বিনিয়োগ প্রকল্প: বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক ফলের (লেবু, পেয়ারা, জাম্বুরা, কমলালেবু, পেঁপে, কলা, লিচু ,আম আনারস, তরমুজ ইত্যাদি বাগান এবং মিশ্র সাথী ফসলের (বেগুন, শসা, টমেটো, কাঁচা মরিচ, আদা, হলুদ, সরিষা ইত্যাদি) চাষের জন্য এই প্রকল্পে একজন গ্রাহক চাইলে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ নিতে পারেন। শুধু ব্যক্তিগত জামানতের বিপরীতে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ পাওয়া যায়।

সোলার প্যানেল বিনিয়োগ প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে যে কোনও গ্রাহক চাইলে বসতবাড়ি এবং ব্যবসায়িক স্থাপনায় সোলার সিস্টেম স্থাপনের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছরের জন্য মোট খরচের ৭০ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ পেতে পারেন।

ডাক্তারদের জন্য বিনিয়োগ প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি, চেম্বার-ক্লিনিক স্থাপন ও চেম্বার সুসজ্জিতকরণের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ সুবিধার সুযোগ আছে। এমবিবিএস, ডেন্টিস্ট, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি-আয়ুর্বেদিক ও ফিজিওথেরাপি ডাক্তাররা এই বিনিয়োগের সুযোগ পেয়ে থাকেন।

প্রবাসী উদ্যোক্তা বিনিয়োগ প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে প্রবাসী বাংলাদেশি, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা নাগরিক, প্রবাসীর স্বামী বা স্ত্রী কিংবা সন্তান উৎপাদনশীল সেবা ও বাণিজ্য খাতে বিনিয়োগ সুবিধা পেতে পারেন। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদি ৫ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ নেওয়ার সুযোগ আছে।

ফ্রিল্যান্সার ইনভেস্টমেন্ট স্কিম: ফ্রিল্যান্সার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস) অনুমোদিত আইটি ফ্রিল্যান্সার নতুন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট, মডেম, সফটওয়্যার ও আনুষাঙ্গিক সামগ্রী ক্রয় করতে চাইলে ব্যক্তি পর্যায়ে দেড় লাখ টাকা থেকে এবং প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ নেওয়ার সুযোগ আছে।

ওয়ার্ক অর্ডার ফাইন্যান্সিং স্কিম: সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের জন্য হাইওয়ে, রোড, ব্রিজ-কালভার্ট বিল্ডিং ইত্যাদি নির্মাণে প্রয়োজনীয় সহায়ক জামানতের বিপরীতে ওয়ার্ক অর্ডারে উল্লিখিত পরিমাণের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ নেওয়ার সুযোগ আছে।

ট্রান্সপোর্ট ইনভেস্টমেন্ট স্কিম: কেউ ইচ্ছা করলে কার, মাইক্রোবাস, বা, ট্রাক, ট্রাক্টর, ড্রেজার, মিনিবাস ও অটো রিকশা, ট্রেন-পিকআপ ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, লঞ্চ, স্টিমার ওয়াটার বাস, কার্গো ভেসেল, সমুদ্রগামী ট্রলার ইত্যাদির ক্রয়মূল্যের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ সুবিধা নিতে পারেন।

গৃহ সামগ্রী: চাইলে গৃহস্থালী জিনিসপত্র যেমন রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মোটরসাইকেল, এয়ার কুলার, এয়ারকন্ডিশনার, মোবাইল, কম্পিউটার, ওয়াশিং মেশিন, কিচেন অ্যাপ্লায়ান্স, ওয়াটার ফিল্টার, হোম জিম ইন্সট্রুমেন্ট, ফার্নিচার, সেলাই মেশিন, আইপিএস, ইউপিএস, জেনারেটর, মোটর পাম্প, গৃহ নির্মাণ সামগ্রী, ডেকোরেটিভ সামগ্রী, স্বর্ণালঙ্কার, মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইকুইপমেন্ট ও শিক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ দিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংক।

কৃষি বিনিয়োগ প্রকল্প: কৃষির বিভিন্ন সেক্টর/সাব-সেক্টরে (ধান, গম, আলু, ডাল ইত্যাদিসহ সব ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, পোল্ট্রি, গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল ও ভেড়া পালন) উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও কৃষিকাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে বর্গাচাষীসহ সকল ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ৬ মাস থেকে ৫ বছর মেয়াদি বিনা জামানতে এক লাখ টাকা ও সহজ আমানতের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ দিয়ে থাকে ইসলামী ব্যাংক।

কার ইনভেস্টমেন্ট স্কিম: ব্র্যান্ড নিউ বা রিকন্ডিশন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, জিপ, অটোরিকশা ইত্যাদি ক্রয়ে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত (অনধিক ৪০ লাখ টাকা) বিনিয়োগ সুবিধা পাওয়া যাবে।

কৃষি সরঞ্জাম বিনিয়োগ প্রকল্প: এই প্রকল্পের অধীনে বিনিয়োগ দেওয়া হয় মূলত পাওয়ার টিলার, পাওয়ার পাম্প, মাড়াই কল, টিউবওয়েলসহ বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র বা সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য। গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ দেওয়া হয়।

ইসলামি ধারার ব্যাংকের একটি সাধারণ চর্চা হলো, এই ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ তথা পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে একবার মুনাফা ধার্য করার পর তা মেয়াদোত্তীর্ণ হলে অতিরিক্ত সময়ের জন্য দ্বিতীয়বার কোনও মুনাফা ধার্য করতে পারে না। কিন্তু সুদি ব্যাংক তাদের কোনও হিসাব মেয়াদোত্তীর্ণ হলে অতিরিক্ত সময়ের জন্য চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ আদায় করে।

এ ছাড়া ইসলামি ব্যাংক গ্রাহকদের মূলত ব্যক্তিগত ধার-এর মতো ঋণ দিয়ে থাকে। এর বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করে না। তবে এর জন্য গ্রাহকের উপযুক্ত জামানত থাকতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) ২০১৯ সালে প্রায় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা কর্জ প্রদান করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রতি পাঁচ বছরে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায়িক পরিধি দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাতের ২৭ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ইসলামিক ব্যাংকিং খাতে। এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক।

বিদেশেও ইসলামী ব্যাংকের বিচরণ বাড়ছে। ইতিমধ্যে বিদেশে ইসলামী ব্যাংককে শাখা খোলার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অচিরেই সৌদি আরবে ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

অনেকেই বলছেন, ভবিষ্যতে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার যোগ্যতাও অর্জন করতে যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘আমরা শ্রীলংকা ও নাইজেরিয়ায় ইসলামিক ব্যাংক স্থাপনে টেকনিক্যাল সহায়তা দিয়েছি। ইসলামী ব্যাংকের ট্রেনিং একাডেমি থেকে শ্রীলংকার একটি ব্যাংককে প্রশিক্ষণ কোর্স দেওয়া হয়েছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, বিদেশে শাখা ও রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিস করার মাধ্যমে আমরা ইসলামী ব্যাংককে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের সৌদি আরবে শাখা করার অনুমতি দিয়েছে। সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের কাজ চলছে।

এদিকে কদিন আগে এশিয়ার সেরা ইসলামিক রিটেইল ব্যাংকের স্বীকৃতি হিসেবে ‘স্ট্রংগেস্ট ইসলামিক রিটেইল ব্যাংক ইন এশিয়া ২০২১’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *