মুহাম্মদ অারমান চৌধুরী, সীতাকুণ্ড টাইমসঃ
মানব জাতি জন্মলগ্ন থেকে অাজকের অাধুনিক সভ্যতা পথে উন্নতির চরম শিখর স্পর্শ করেছে। মানবজাতি সম্পূর্ণ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তাঁদের অাধিপত্যে বিস্তারে প্রচেষ্টায় মগ্ন। কিন্তু হঠাৎত পৃথিবী স্থবির হয়ে পড়ল। ক্ষুদ্র একটি অদৃশ্য ভাইরাসে থমকে গেল অাধিপত্য বিস্তারের মহাযজ্ঞ। অাজ পরাস্ত প্রায় একটি ক্ষুদ্র অদৃশ্য ভাইরাসের কাছে মানবজাতি। যে প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন এর কি কোনো পরিত্রাণ অাছে? কিভাবে করব এ মহাসংকটে ভয়ংকর বিপর্যয়ের মোকাবেলা? মানবজাতি কি পৃথিবী থেকে বিপন্নের পথযাত্রী?
অামি মনে করি, ” করোনা” সংক্রান্ত বিষয়ে অাপনারা যথেষ্ট অবগত রয়েছেন। তাই বিশাদে এর প্রকৃতি সম্পর্কে বলার অবকাশ নেই। কিন্তু এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক, অামাদের জন্য হলো এটি কোনো পানি বাহিত বা প্রাণী বাহিত রোগ নয়। এটা মানব জাতি ধারা বাহিত ভাইরাস। সেক্ষেত্রে বলা বলা যায়, অামরা-ই ভাইরাস’টির বাহক। বেশ্ , এটাই সমস্যা অাবার বিশাল সুবিধাও বটে। কারণ, অামরা মানব সত্তা। এমুহূর্তে অামাদের মস্তিষ্ককে ঠিক করে নিতে হবে, “অামরা মানব সত্তা নাকি মানুষ নামক একটি প্রাণী”। যদি সত্যিকার অর্থে অামরা মানব সত্তার হয়, সেক্ষেত্রে অামাদের করণীয় কি? সেটা অামরা জানি। এবং অামাদের “করোনা” প্রতিরোধে বিধিনিষেধ নিয়ম পালন এর মাধ্যমে “করোনা” বিস্তার রোধ করতে সক্ষম হব। অন্যাথায় অামরা যদি মানুষ নামক প্রাণী হয়, সেক্ষেত্রে অামরা “করোনা” এজেন্ড হিসাবে মহামারী সৃষ্টি করার সুযোগ তৈরী করে দিব। কারণ, অামরা করোনা’র বাহক মানে অামরাই এজেন্ড। তাই করোনা প্রতিরোধে অামাদের মানব সত্তা হতে হবে।
করোনা কালীন অামাদের মৌলিক দায়িত্ব বেঁচে থাকা। সেক্ষেত্রে অর্থনীতি একটি বিশাল সমস্যা অামাদের জন্য। জীবন মৃত্যুর সমীকরণ জীবিকা। অামাদের অর্থনীতি সচল রাখতে হলে কর্মক্ষেত্র চালু রাখতে হবে। তবে, সময়ের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী অামাদের সকলকে অন্তর্মুখী হতে হবে। অামরাই যদি না বাঁচি, অর্থনীতি কি কাজে অাসবে? অামাদের জীবন কে অন্তর্মুখী করা অতন্তত জরুরি। অামাদের অর্থনীতি কর্মকান্ড ও অর্জন সবই বহির্মুখী দূর্যোগ পরবর্তীকালে যা সময়ের সাথে গুছিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু একটি প্রাণ হারিয়ে গেলে কখনো তাঁর ক্ষতি পূরণ করতে পারবো না। তবে, অামরা অতিপ্রয়োজনীয় অর্থনীতি খাত গুলো সচল রাখতে পারি সীমিত অাকারে। প্রজন্ম এখন অনলাইন নির্ভর ঘরে বসে অামরা সামর্থ্যানুযায়ী অর্থনীতি সচল রাখার প্রয়াস করতে পারি। অামাদের অর্থনীতি নির্ভর একটি জনগোষ্ঠী গ্রামীণ জনপদ। এবং অর্থনীতিক ভাবে ভঙ্গুর গ্রামীণ জনপদ। যেখানে কাজ করছে অনেক বেসরকারি ক্ষুদ্রঋণ দাতা সংস্থা। বর্তমানে “করোনা” সংকটে স্থবির অর্থনীতিও গ্রামীণ জনপদেও অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই ক্ষুদ্রঋণ দাতা সংস্থা গুলোর প্রয়োজন গ্রামীণ জনপদে সুদের হার সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে অাসে। মানবজাতি বিপদসংকুল সময়ে অতিবাহিত হচ্ছে । অামাদের সকলের প্রয়োজন বিপদে একে অপরের সাথে সহনশীল হওয়া।
সরকারি ইতিমধ্যে অনলাইনে ভিত্তিক অনেক খাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁরমধ্যে উল্লেখ যোগ্য টেলিমেডিসিন ও শিক্ষাখাত। ঘরে বসে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করার সুবিধাও শিক্ষার্থীদের সংসদের টেলিভিশন এর মাধ্যমে পাঠদান প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে । সরকার প্রদত্ত “করোনা” কালীন বিধিনিষেধ ও নিয়ম মেনে চলা সুনাগরিক হিসাবে দায়িত্ব। মানব জাতির সংকটাপন্ন এমুহূর্তে অামাদের মানব সত্তাও সচেতন সুনাগরিক হতে হবে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল অাচারণ করতে হবে। এবং পরিশেষে মানব জাতি বিজয়োৎসব করবে।
@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@
>> মুহাম্মদ অারমান চৌধুরী
দর্শন বিভাগ,৪র্থ বর্ষ
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ,চট্টগ্রাম।