সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / ‘গল্পগুলো প্রেমের, না-বলা স্মৃতির পাহাড়ের’- জয়নুল টিটু

‘গল্পগুলো প্রেমের, না-বলা স্মৃতির পাহাড়ের’- জয়নুল টিটু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ

এবার বইমেলায় প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে সাড়া ফেলেছে গল্পকার জয়নুল টিটোর ‘বিউটিবোনে লাল পিঁপড়া’। এখানে শুধু গল্প বলেননি গল্পকার। মারপ্যাঁচহীন সহজ-সরল, সাবলীল ভাষায় মানুষের জীবনযাত্রার খুঁটিনাটি তুলে এনেছেন। গ্রন্থভুক্ত প্রতিটি গল্প মুগ্ধ করেছে পাঠককে। ইতোমধ্যে প্রথম সংস্করণ শেষ হয়েছে।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে বইমেলায় গতকাল জয়নুল টিটোর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের । নিজের প্রথম গল্পগ্রন্থ সম্পর্কে তিনি বললেন, এতে ১৮টি গল্প আছে। প্রত্যেকটি গল্প আলাদা। গল্পগুলো লেখা হয়েছে গত ১৮-২০ বছর সময়কালে। এখানে দুই হাজার সালে লেখা গল্পের পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে লেখা গল্পও আছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২০ বছরের সময়ের ঘটনা প্রবাহের একটা চিত্র পাঠক গ্রন্থভুক্ত গল্পগুলো পাঠে জানতে পারবেন। তবে তা উপস্থাপন করা হয়েছে সহজ-সরলভাবে।
তিনি বলেন, গল্পগুলো আসলে প্রেমের, ভালোবাসার। পাওয়া, আবার না পাওয়ার। কখনো বেদনার। গল্পগুলো তারুণ্যের। ফেলে আসা ক্যাম্পাসের। আবার এই অবেলায় হাতড়ে বেড়ানো সময়ের। গল্পগুলো অতীত খোঁজার। না-বলা স্মৃতির পাহাড়ের। স্বপ্ন ভাঙা-গড়ার। প্রত্যেকটা গল্পে একটা বার্তা দেয়া আছে। আমার সবসময় লক্ষ্য থাকে, সহজ-সরলভাবে মূল কথাটা পাঠককে বলা। এখন অস্থির সময়। ঢাউস সাইজের কিছু পড়ার সময় নাই মানুষের।
গল্পগ্রন্থের নামকরণ প্রসঙ্গে গল্পকার বলেন, গ্রন্থে ‘বিউটিবোনে লাল পিঁপড়া’ শিরোনামে একটি গল্প আছে। এটার নামেই নামকরণ করা হয়েছে। এটা একটা নিটোল প্রেমের গল্প। এ গল্পের নায়ক বাঙালি, নায়িকা পাহাড়ি। চিরায়ত নিয়মে পাহাড়ি সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির ভিন্নতা আছে। ফলে পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হলে সেটা সমাজ অনেক সময় মেনে নিতে চায় না-এটাই বাস্তবতা। গল্পে বিউটিবোনে ও লাল পিঁপড়া রূপক অর্থে এসেছে। নারী চরিত্রটি পাহাড়ি, সেটাকে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে বিউটিবোন বলেছি। পুরুষ চরিত্রকে পিঁপড়াকে ধরতে পারি। পিঁপড়া সাধারণত বিষাক্ত হয়। পিঁপড়া বিউটিবোনে ভ্রমণ করে। যেহেতু কিন্তু একটা পর্যায়ে সমাজ তাদের পরিণয় মেনে নেবে না, তাই পিঁপড়াটাকে ঝেড়ে ফেলতে হয়। পুরো গল্পে দুইটা সমাজ ও সংস্কৃতির বৈপরীত্ব এবং পৃথক দুই সমাজের নারী-পুরুষের প্রণয়ের পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্ব উঠে এসেছে।

আজাদীর সাপ্তাহিক আয়োজন ‘আজমিশালী’র লেখক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৯০-এর দশকে পাতাটি বের হওয়ার অল্পদিনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আজমিশালীকে ঘিরে একটা লেখক বলয় তৈরি হয়েছিল। লেখক সৃষ্টির সূতিকাগার ছিল আজমিশালী। বর্তমান সময়ের অনেক জনপ্রিয় লেখকের লেখালেখির শুরুটা ছিল আজমিশালী দিয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের আবেগ ‘আজমিশালী’র নামটা পরিবর্তন করা হয়। এটা আমরা যারা এই পাতায় লেখালেখি করতাম তাদের আহত করেছে। আজাদী কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ থাকবে, আজমিশালী যেন আবার চালু করা হয়।

প্রসঙ্গত, পেশাগত জীবনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) পদে কর্মরত আছেন তিনি। পারিবারিক নাম জয়নুল আবেদীন হলেও লেখালেখি করেন জয়নুল টিটো নামে। ‘বিউটিবোনে লাল পিঁপড়া’ তাঁর প্রথম গ্রন্থ। দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি করে আসছেন। আজাদীসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকীতে গল্প লিখেছেন নিয়মিত। তাঁর বাড়ি সীতাকুণ্ড কুমিরায়।
সূত্র- আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *