সংবাদ শিরোনাম
Home / জাতীয় / চট্টগ্রামে অস্ত্রোপচারের পর শরীরে নিডেল রেখে দেয়া ডাক্তার কারাগারে

চট্টগ্রামে অস্ত্রোপচারের পর শরীরে নিডেল রেখে দেয়া ডাক্তার কারাগারে


অস্ত্রোপচারের পর শরীরে নিডেল রেখে দেয়া ডাক্তার কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক,৩মে (সীতাকুন্ড চট্টগ্রাম) : অস্ত্রোপচারের পর রোগীর শরীর থেকে নিডেল বের করতে ভুলে যাওয়া দু`চিকিৎসকের মধ্যে ডা.মো.সুরমান আলী নামে একজনের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অপর চিকিৎসক ডা.জাকির হোসেন উচ্চ আদালতের জামিনে আছেন।

সোমবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম নূরে আলম ভূঁইয়া অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা.মো.সুরমান আলীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির সময়ে আসামী ডা.মো.সুরমান আলী আদালতে হাজির ছিলেন। বিচারক ইতোপূর্বে তাকে দেয়া জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অ‍াসামী জাকির হোসেন উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে আছেন। তিনি গতকাল (রোববার) আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।’

অভিযুক্ত দু’জন চিকিৎসকের মধ্যে ডা.মো.সুরমান আলী চমেক হাসপাতালের ল্যাপরোস্কোপিক, কলোরেক্টাল ও জেনারেল সার্জন। অবশ্য বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন। ডা.জাকির হোসেন বেসরকারী ল্যানসেট ডায়‍াগনস্টিক এন্ড রিসার্স সেণ্টারের চিকিৎসক।

২০১২ সালের ৩০ মে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আমিনুল ইসলামের মলদ্বারের অপারেশন করার সময় শরীরের ভেতর নিডেল রেখে দেন অভিযুক্ত দু`চিকিৎসক।

অপারেশনের পর থেকে আমিনুল প্রচন্ড ব্যথায় ভুগতে থাকেন। আমিনুল চিকিৎসককে জানান, তার মনে হচ্ছে অপারেশনের স্থানে কিছু একটি রয়ে গেছে। একথা শোনার পর চিকিৎসক আরও দু`দফা অপারেশনের নামে তার সঙ্গে প্রতারণা করেন। এসব অপারেশনে তার শারিরীক অবস্থার আরও অবনতি হয়। যন্ত্রণা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে।

এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য ভারতের কোলকাতায় এ্যপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত বছরের ৩০ জুন এ্যপোলো হাসপাতালের কনসালটেন্ট রেডিওলজিস্ট ডা.দেবাশীষ দত্ত তার অস্ত্রোপচার করে তার আগের অপারেশনের স্থান থেকে নিডেল বের করেন।

এ ঘটনায় গত ২৮ জানুয়ারি মহানগর হাকিম আদালতে দু`চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ২৬৯, ২৭০, ৩২৬, ৪২০ ও ৩৪ ধারায় আমিনুলের মা দেলোয়ারা বেগম অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর মহানগর হাকিম আলী মনছুর অভিযোগটিকে সরাসরি মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

এ মামল‍ার আসামী হিসেবে দু’চিকিৎসক প্রথমে হাইকোর্ট থেকে দু’সপ্তাহের জামিন নেন। এরপর গত ১৪ মার্চ চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন নেন।

গত ৩০ মে পাঁচলাইশ থানার এস আই রহুল আমিন আদালতে দু’চিকিৎসককে আসামী করে অভিযোগপত্র জমা দেন। সোমবার মামলার নির্ধারিত দিনে অভিযোগপত্রটি মহানগর হাকিম নূরে আলম ভূঁইয়ার কাছে দাখিল করা হয়।

আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘আগে দেয়া জামিনের শর্ত অনুযায়ী সুরমান আলী সোমবার অভিযোগপত্র দাখিলের সময় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচারক মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হিসেবে অভিমত দিয়ে সেটি সিএমএম’র কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’

অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার উপর শুনানিতে আসামীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সালাহউদ্দিন হায়দার সিদ্দিকী, ফেরদৌস আহমদ, কফিল উদ্দিন, স্বভু প্রসাদ বিশ্বাস, রেজাউল করিম অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *