সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / বাড়বকুণ্ডে পরিবেশ বিরোধী কারখানা স্থাপনের প্রতিবাদে সভা

বাড়বকুণ্ডে পরিবেশ বিরোধী কারখানা স্থাপনের প্রতিবাদে সভা

সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্কঃ
পরিবেশ বিরোধী শিল্প কারখানা স্থাপনের প্রতিবাদে গত ১৫ মে বিকেল ৪টায় সীতাকুণ্ডের মান্দারীটোলা গ্রামের হাজ্বী মহরম আলী কন্ট্রাক্টার বাড়ী মাঠ প্রাঙ্গনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান আলোচক ডক্টর ফসিউল আলম, প্রাক্তন ভি সি ফেনী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ৫ নং বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব ছাদাকাত উল্ল্যাহ মিয়াজী। এলাকার বিরাজমান সমস্যা নিয়ে সূচনা বক্তব্য রাখেন লতিফা সিদ্দিকী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ লোকমান মিয়া, এছাড়া বাড়বকুণ্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব রবিউল হোসেন, মান্দারীটোলা ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব দিদারুল আলম, জনাব আব্দুল আলীম, জনাব কামরুল হাসান আজাদ, জনাব আলমগীর, জনাব আকবর হোসেন জসীম ও এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। উক্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য জনাব মোঃ জামাল উল্লাহ ।
উল্লেখ্য যে, বিগত ১৩ মার্চ, ২০১৮ তারিখ আমরা ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সহ ২০/২৫ জন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির একটি প্রতিনিধি দল বর্ণিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শন করতঃ কারখানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা / কর্মচারীগণকে এ বিষয়ে জোড়ালো আপত্তি জানাই। উক্ত বিষয়সহ সড়কটিতে পানি দিয়ে ধূলাবালি ওড়ানো বন্ধ করা ও বড় গাড়ী দিনের বেলায় না চালিয়ে রাতের বেলায় চালানোর কথা ও জানিয়ে দেয়া হয়। এবং মালিক পক্ষের সাথে কয়েকবাব বৈঠকে বসলে তারা মৌখিকভাবে সম্মতি জানালেও কিছুই বাস্তবায়ন কর হয়নি, এমনকি সড়কটিতে পানি দিয়ে ধূলাবালি ওড়ানো বন্ধ করা ও বড় গাড়ী দিনের বেলায় না চালিয়ে রাতের বেলায় চলাচল করাটা ও বাস্তবায়িত হয়নি।
কারখানা স্থাপিত হলে এলাকায় নিন্মোক্ত সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমনঃ
নিরাপদ ও স্থায়ী রাস্তার অভাবে জনগণের চলাচল ও যোগাযোগের মারাত্মক বিঘ্ন ঘটবে।
রাস্তায় দূর্ঘটনার পরিমান বেড়ে যাবে।
কাওনিয়া খালের পানি চলাচল বন্ধ হলে এলাকার বসতবাড়ী, ফসলী খেত খামার, রান্তা-ঘাট পানিতে প্লাবিত হবে ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।
কৃষি জমি কমে যাওয়ার কারনে এলাকায় ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে ,বেকার সমস্যা বেড়ে যাবে, ফলে তাদের কর্ম সংস্থানের অভাব দেখা দিবে।
এলাকায় ভূ-গর্ভে পানির স্তর নষ্ট হবে, পানীয় জলের অভাব হবে ও জল দূষিত হবে।
শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণ বেড়ে গিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হবে।
সমুদ্রে যাওয়ার পথ বন্ধ হলে এলাকার সাধারণ মানুষের বিশেষ করে পশু পালন, মাছ ধরা, মাছের পোনা সংগ্রহ ও অন্যান্য কাজের বিঘ্ন ঘটবে।
এ সবের কারণে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানী, ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি এবং শিশুসহ জনগণের দৃষ্টি-শক্তি ও শ্রবণ-শক্তি হ্রাস পাবে।
কারখানা পরিবেশ বান্ধব না হলে যে কোন সময়ে গ্যাস বিস্ফোরণে এলাকা ও জন বসতিতে প্রাণ হানির সম্ভাবনা থাকবে ।
আইনগতভাবে দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের এলাকার এসব সমস্যা নিয়ে আবেদনসহ যোগাযোগ করা হলেও বাস্তবায়িত না হওয়ায় গত ০৫/০৫/২০১৮ তারিখে আমরা পূনরায় যথাযথ প্রশাসন/ কর্তপক্ষ, আমদের ইউ পি চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধিসহ পরিবেশ অধিদপ্তর আবেদন করি। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত JMI কে তাদের কাজ বন্ধ রাখার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর চিঠি দিয়েছে।

তবে আমরা দেশের উন্নয়নের পক্ষে। শিল্প কারখানাসহ সকল উন্নয়নে আমরা সরকারের সাথে আছি এবং থাকবো। পরিবেশ বান্ধব শিল্প কারখানা স্থাপন করা হলে, এতে এলাকাবাসীর জোরালো কিছু দাবী রয়েছে। যা নিন্মরূপঃ
জনগণের চলাচলের উপযোগী নিরাপদ ও স্থায়ী রাস্তা নির্মান করতে হবে।
কাওনিয়া খালের পানি চলাচলের সুব্যবস্থা করতে হবে।
গ্রামে জনগণের বসবাসে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী ও পরিবেশ দূষণকারী শিলপকারখানা নির্মান করা যাবেনা।
এলাকাবাসীর হাজার বছরের সমুদ্র উপকূলে যাতায়তের রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।
মাওলানা ওবায়দুল হক সড়ক বিলুপ্ত বা বন্ধ করা যাবে না।
স্কুল- কলেজে যাওয়া ছাত্র- ছাত্রীসহ জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে দিনের বেলায় সকাল ৮ টা হতে সন্ধ্যে ৬ টা পর্যন্ত ভারী যানবাহন চালানো যাবেনা।
পরিবেশ বান্ধব শিল্প কারখানা স্থাপন করা হলে এলাকার ৬০% লোককে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরী দিতে হবে ( যারা কারখানা চালু করেছেন যারা চালু করবেন)।

এলাকার বর্ণিত সমস্যার সমাধান ও এলাকাবাসীর দাবীগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে অতিসত্ত্বর বাস্তবায়ন না করলে এলাকার জনগণ মানববন্ধনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহন করতে বাধ্য হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *