সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / সীতাকুণ্ডে সীমা গ্রুপের চেয়ারম্যান পারভেজকে কোমরে দড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়

সীতাকুণ্ডে সীমা গ্রুপের চেয়ারম্যান পারভেজকে কোমরে দড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়

নজরুল ইসলাম,সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান সীমা গ্রুপের পরিচালক ফারভেজ উদ্দিন সান্টুকে গ্রেপ্তার করে শিল্প পুলিশ। মঙ্গলবার রাত ১২টার সময় নগরীর একটি বাড়ি থেকে সীমা অক্সিজেন কারখানায় বিষ্ফোরণ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে আজ বুধবার দুপুরে পুলিশ তাকে আদলতে হাজির করে। এসময় তার হাতে হ্যান্ড কাপ ও কোমরে দড়ি বেঁধে টানতে টানতে আদালতে খাস কামরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ( ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে এবং তা “টক অবদা সীতাকুণ্ড” রুপান্তরিত হয়। সেই থেকে সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীক হাজার হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের নিজস্ব টাইম লাইনে এ ছবিটি দিয়ে নানা রকম মন্তব্য করছেন। কৃষ্ণ চন্দ্র দাশ নামে একজন লিখেছেন, কোমরে এ দড়ি মানে, দেশের হাজারো শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোমরে দড়ি। তিনি একজন উদ্যোক্তা। সেই হিসেবে হাজারো উদ্যোক্তার কোমড়ে দড়ি।
যেহেতু তিনি মামলায় আজহার নামীয় আসামি। তাকে দাগি আসামীর মত দড়ি বেঁধে না নিয়ে, ভিন্নভাবে নেয়া যেত। আডিএল সরওয়ার্দী নামক একজনে লিখেছেন, করোনা কালে যখন মানুষ অক্সিজেন এর অভাবে মরে যাচ্ছে তখন এই মানুষটা ফ্রি তে অক্সিজেন দিয়ে মানুষের পাশে ছিল। আমি বলছি না উনার দোষ নেই উনাদের ভুলের কারণে হয়তো এমন দুর্ঘটনা হয়েছে বিপরীতে ক্ষমা চেয়েছেন। আইন অনুযায়ী ২ লক্ষ টাকার পাশাপাশি আরও ৮ লক্ষ সহ মোট ১০ লক্ষ টাকা করে নিহত পরিবারের হাতে তুলে দেয়া ও আহতদের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন কর। ঘটনার ৫ দিনের মধ্যে সব কিছু দিয়ে দেওয়ার পরও আজ তাকে জেলে যেতে হবে কেন। পূর্বে একটি কন্টিইনার ডিপু তে ৫১ জন নিহত হওয়ার পরও তাদের কেন জেলে নেওয়া হল না?। নুরুল হুদা নামে একজন মন্তব্য করেন সান্টু সাহেব এমপি হতে ছেয়েছিলেন সীতাকুণ্ড থেকে। তাই এ প্রতিহিংসা। সাহাব আজিজ নামে একজন লিখেছেন, করোনা কালীন সময়ে আমার মা ছিল ডায়ালাইসিস রুগী। হঠাৎ শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালী সিলিন্ডার নিয়ে দৌড়াদৌড়ি ও চারিদিকে ফোন করেও অক্সিজেন রিফিল করতে পারছিলাম না। হঠাৎ উনার ফেজবুক পোষ্টটা চোখে পড়লো,ফোন করতেই সাথে সাথে সাড়া পেলাম। ফ্যাক্টরীতে গিয়ে রিফিল করে নিয়ে আসলাম কোন টাকা নেয়নি। সত্যিই পারভেজ ভাই খুব ভালো মানুষ। আপনারা উনার সম্মানহানী করবেন না। উনাকে নিঃশর্তে মুক্তি দিন। ওমকর নন্দি নামে অন্য এক ব্যক্তি লিখেন,দুনিয়াতে ভালো মানুষের দাম নেই, ক্ষতি পূরন ও দিলো ক্ষমাও চাইলো তারপর পুলিশ ধরে নিয়ে গেলো৷ দুঃখজনক। দুনিয়াতে ভালো মানুষের দাম নেই, ক্ষতি পূরন ও দিলো ক্ষমাও চাইলো তারপর পুলিশ ধরে নিয়ে গেলো৷ দুঃখজনক। ফজলে করিম চৌধুরী নিউটন নামে একজন লিখেছেন, প্রতিষ্ঠানে দূর্ঘটনা ঘটতেই পারে। একজন শিল্পপতিকে এভাবে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে তোলার তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ বাড়াবাড়িতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম সেকান্দর হোসাইন তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে ছবিটি পোস্ট করে লিখেন, অপরাধ কি? তার কারখানায় বিষ্ফোরণ হয়েছে। বিষ্ফোরণ- দুর্ঘটনা কি আর কোথাও হয় না? প্রতিদিন মহাসড়কে দুর্ঘটনা হয় না? উনি তো চুরি করেননি। কোন খুনও করেননি। দুর্ঘটনার নিউজ করেছি। তারা সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। এরপরও তিনি গ্রেপ্তার হলেন। এখন দেখছি কোমরে দড়ি দিয়ে টেনে নেওয়া হচ্ছে!!! দৃশ্যটা মোটেও ভালো লাগেনি। সকল শিল্পপতিকে বলব হয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করুন না হয় এরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকুন। ছিঃ এ কেমন আচরণ?। এস,এম সফিউল আজম লিখেছেন, নিন্দা জানার ভাষাই নাই। আহত এ নিহতদের ক্ষতিপূরন এভাবে না দিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করলে ভালো হত। এভাবে কোমরে দড়ি পড়তে হত না। যেভাবে কোমরে দড়ি পড়তে হয়নি অন্য একটি ডিপোর মালিক কে। প্রসঙ্গতঃ গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন কারখানায় বিষ্ফোরণে ৭ জন নিহত ও ২৭ জন শ্রমিক আহত হন। গত ৯ মার্চ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) মাসুদ কামালের উপস্থিতিতে নিহত পরিবার গুলোকে ১০ লক্ষ টাকা ও অঙ্গহানিদেরকে ৫ লক্ষ টাকার চেক প্রদান এবং আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যায়ভার বহনের ঘোষনা দেন নিহত ও অঙ্গহানী পরিবারের একজন সদস্যকে সীমা গ্রুপে চাকরীর ব্যবস্থা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *