সংবাদ শিরোনাম
Home / আইন আদালত / স্ত্রীর প্রতারণার স্বীকার হয়ে হাত পেতেছে সেই খোকন ও তার মা

স্ত্রীর প্রতারণার স্বীকার হয়ে হাত পেতেছে সেই খোকন ও তার মা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ
এক বছর আগেও মানুষকে দান খয়রাত করত, আশেপাশের অনেকেই তাদের জায়গা জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতো, এছাড়াও বিপদগ্রস্ত মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতেন। আর এখন নিজেরাই সাহায্যের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, ত্রাণ সংগ্রহের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। বলছিলাম সীতাকুন্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের কেদার খিল গ্রামের আলোচিত খোকন ও তার মায়ের কথা। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম নেওয়া খোকনের পিতার ছিল অগাধ সম্পদ। পিতার মৃত্যুর পর খোকন তার পৈত্রিক সূত্রে মালিক হয় এক একর বিশ শতক জমির। এছাড়াও মা সালেহা বেগম ও বোন আসমা আক্তার নিজেদের মালিকানাধীন আরো ৬৫ শতক জমি খোকনকে দান করেন। ২০০৬ সালে মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরপুর গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে সেলিনা আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় জন্ম থেকে কিছুটা মানসিক সমস্যাগ্রস্ত খোকন। বিয়ের পর থেকে সংসারের সুখের জন্য এক একর ৮৫ শতকের সম্পূর্ণ জমি বিক্রি করে প্রায় দুই কোটি টাকা স্ত্রীর হাতে তুলে দেন তিনি। এছাড়াও অবশিষ্ট বাড়ি ভিটার ২৮ শতক জায়গা কৌশলে স্ত্রী তার নামে লিখে নিয়ে খোকন ও তার মাকে ঘর থেকেও বিতাড়িত করার চেষ্টা করেন। এই ঘটনায় গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে যেকোনো মূল্যে খোকন ও তার মায়ের একমাত্র আশ্রয়স্থল পারিবারিক ভিটা অন্যত্র বিক্রির হাত থেকে রক্ষার জন্য সংকল্পবদ্ধ হয়।
অন্যদিকে টাকার লোভে অন্ধ সেলিনা বাড়ি ভিটার জমিতে দখল পেতে প্রাণপণ চেষ্টা শুরু করে। খোকন ও তার মামা মোঃ মহিউদ্দিনের নামে একটার পর একটা মামলা দায়ের করতে থাকেন। এছাড়াও জসিম নামের এক চিহ্নিত ডাকাত কে দিয়ে খোকনকে তার বাড়ি ভিটা থেকে উচ্ছেদ করার একাধিকবার চেষ্টা করেন তিনি।
অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অক্ষম খোকনের চিকিৎসা ব্যয় ও সংসার খরচ চালাতে সাহায্যের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন তার মা সালেহা বেগম। সালেহা বেগম বলেন, ছেলের বউ ছেলেকে এবং আমাকে একেবারে নিঃস্ব করে দিছে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সাহায্যর টাকা নিয়ে ছেলে এবং আমি কোন ভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। সেলিনা আক্তার এখন চেষ্টা করছে বাড়ি ভিটা থেকে আমাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য। সে একটার পর একটা মামলা দায়ের করছে, এক ডাকাতকে দিয়ে আমাদেরকে বারবার হুমকি দিচ্ছে। আমার ছেলে ইতিমধ্যে সেলিনা আক্তারকে তালাক প্রদান করেছে এরপর থেকে সে আরো বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে।
খোকনের মামা মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, আমার ভাগিনা কিছুটা মানসিক সমস্যাগ্রস্ত এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্ত্রী সেলিনা আক্তার তার নামে থাকা ব্যাংকের সব টাকা-পয়সা এবং জমি বিক্রি করার সমস্ত টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা একটা চরম অমানবিক কাজ হয়েছে। সহজ সরল, মানসিক সমস্যা গ্রস্ত ছেলেটার কাছ থেকে সব টাকা এবং সহায় সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে তাকে বিতাড়িত করা অত্যন্ত জঘন্যতম একটা অন্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *