কামরুল ইসলাম দুলু,(সীতাকুণ্ড টাইমস)
চলতি বছর ইলিশের সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। গত কয়েক বছর ইলিশ মাছের অনেকটা আকাল ছিল সমুদ্রে। কিন্তুু এবার দেশের সবগুলো উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের মুখে হাসি। প্রতি ১৪ থেকে ১৫ বছর অন্তর এ ধরনের
পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলেও জানিয়েছেন
সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা। সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন, এবারও প্রশান্ত মহাসাগরে ‘এল নিনোর’ প্রভাবে
ইলিশের ঝাঁক গতিপথ পাল্টে বঙ্গোপসাগরমুখী হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের উপকূল এবং সমুদ্রে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। এর ফলে
চলতি বছর ইলিশ মাছ ধরার পরিমাণ এ
যাবত কালের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে
বলে আশা করছে মৎস্য অধিদপ্তর। দেশের অন্যান্য জেলার মত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডেও সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। লবণ ও বরফের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব মাছ সংরক্ষণ করতে না পারায় ইলিশ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা। অনেকেই তরতাজা মাছগুলো রেখে বাসি-পচা মাছ ফেলে দিচ্ছেন। উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের কুমিরাঘাট, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল, সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ফকিরহাট সাগরপাড়ে সরেজমিনে দেখা যায়, যেখানে-সেখানে পচে যাওয়া
ইলিশ পড়ে আছে। এতে পুরো এলাকায়
দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। খালের পানিতেও প্রচুর পচা ইলিশ ভাসতে দেখা গেছে। জেলেরা তরতাজা ইলিশগুলো রেখে বাকি মাছ ফেলে দিচ্ছেন। কুমিরার জেলে নিতাই দাশ বলেন, গত
তিন দিন এত বেশি মাছ পড়েছে যে অনেকে জালের কিছু অংশ কেটে সাগরে ফেলে দিয়ে এসেছেন। অনেকে জাল থেকে মাছ খুলতে না পারায় জাল- মাছ একসঙ্গে তীরে নিয়ে এসেছেন। এ সময় পচে যাওয়ায় অনেক মাছ ফেলে দিতে হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছরের জন্য ইলিশের
এটাই শেষ জো। এরপর ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। গত মাসে সীতাকুণ্ডে ৬১০ মেট্রিকটন ইলিশ ধরা পড়েছিল। ছলিমপুর, ভাটিয়ারি, সোনাইছড়ি ও কুমিরা ইউনিয়ন অংশে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছে। শুধু চট্টগ্রামের পাঁচটি উপজেলায় এবার ৮ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ সংগ্রহের
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা দশ
হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে
ধারণা করা হচ্ছে। পুরো বছর জুড়ে সাগরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেলেও আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসকে ধরা হয় ইলিশের ভরা মৌসুম। মাছের বাজারগুলো এখন ইলিশ মাছে ভরপুর। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় দামও অনেক কম। সংরক্ষণের অভাবে প্রচুর ইলিশ পচে যাচ্ছে।
Home / গ্রাম-গঞ্জ / সীতাকুণ্ডে ইলিশ নিয়ে বিপাকে জেলেরা, সংরক্ষণ করতে না পারায় পচে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকার মাছ