সংবাদ শিরোনাম
Home / উপজেলা সংবাদ / সীতাকুন্ডে নির্বাচনে জমে উঠেনি চায়ের দোকান ঃ নৌকার পাশে থাকবে মশাল,মোট ভোটার ৩,৫০,০৮৯জন

সীতাকুন্ডে নির্বাচনে জমে উঠেনি চায়ের দোকান ঃ নৌকার পাশে থাকবে মশাল,মোট ভোটার ৩,৫০,০৮৯জন

Mp-2014 - Copyএ কে চৌধুরী,২জানুয়ারী(সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
আগামী ৫ জানুয়ারী হতে যাচ্ছে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কাল থেকে নির্বাচনী প্রচারনা হয়ে যাচ্ছে বন্ধ। গ্রামে গঞ্জে এবারের নির্বাচনে নেই কোন আমেশ। চায়ের দোকান গুলো রয়েছে ফাঁকা। নেই কোন আলোচনা সমালোচনার ঝড়। প্রার্থীদের কয়েকটি পোষ্টার, রাস্তায় কিছু মাইকিং ও আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কিছু প্রচারনা ছাড়া নির্বাচনের বড় ধরনের কোন প্রচারনা চোখে পড়েনি। তবে প্রার্থীরা সবাই নির্বাচনী বিধিবিধান মেনে চলছে শতভাগ। সীতাকুন্ডে কোথাও কোন প্রার্থীর সাজ সজ্জিত নির্বাচনী কেন্দ্র চোখে পড়েনি। বড় ধরনের কোন মিছিল মিটিং হয়নি এবার। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জানেনা রবিবারে সংসদ নির্বাচন(মন্ত্রী ভোট)। সীতাকুন্ডের এয়াকুব নগরের বাসিন্দা রুহুল আমিন জানায় নির্বাচনের খবর জানিনা তবে রাত গভীর হলে গ্রামবাসীরা পুলিশের গাড়ি আতংকে থাকতে হয়। কখন পুলিশ এসে কাকে নিয়ে যায় ধরে। সকাল হলে সবাই খবর রাখে কোন বাড়ি থেকে কাকে ধরে নিয়ে গেল পুলিশ। এভাবেই গ্রেফতার আতংকে দিন যায় রাত পোহাই। তিনি আরও জানায় ১৯৭১ সালের মত যেন দেশে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ঘরে থাকতে পাচ্ছেনা যুবসমাজ।
এদিকে আসন্ন ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকু-, পাহাড়তলী, আকবরশাহ, খুলশীর আংশিক) আসনে প্রার্থী রয়েছেন চারজন। আওয়ামীলীগের মনোনীত আলহাজ্ব দিদারুল আলম (নৌকা), জাসদের আ.ফ.ম মফিজুর রহমান(মশাল), জাপা (মঞ্জু) হায়দার আলী চৌধুরী(সাইকেল) ও ওয়ার্কাস পার্টির দিদারুল আলম চৌধুরী(হাতুড়ি)।
সীতাকুন্ড বাসীর জন্য এ চারজনই অচেনা মুখ। প্রচারনার পর দিদারুল আলম ও মফিজুর রহমান এর পরিচয় হলেও বাকী ২জন রয়ে গেছে অচেনা রাজ্যে।
সীতাকুন্ডে এবারের ভোটার সংখ্যা ৩,৫০,০৮৯জন । প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না নিয়ে লাগাতার অবরোধের মাধ্যমে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষনা দেওয়ায় সাধারণ ভোটাররা শংকিত। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ র‌্যাব বিজিবির পর সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে থাকবে।
ভোটের ফলাফল কি হবে তা ভোটের আগেই মানুষের মুখেমুখে । সীতাকুন্ডে সংসদ নির্বাচনে নৌকার জয় শতভাগ নিশ্চিত হলেও লড়াই করে যাচ্ছে মশাল প্রার্থী। জাসদ ইনুর মনোনীত কুমিরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আ.ফ.ম মফিজুর রহমান মশাল প্রতীক নিয়ে সীতাকুন্ডে ডিটি রোডে মিনি ট্রাক নিয়ে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে দিন রাত।
সীতাকু-ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে জানা গেছে, গ্রামের বিভিন্ন চা দোকান ঘুলোতে দু’য়েকটি নৌকার পোষ্টার চোখে পড়েছে, মহাসড়কের আশপাশে মশাল মার্কা পোষ্টার। উপজেলা চত্বরে কয়েকটি হাতুড়ী মার্কার পোষ্টার নজরে পড়েছে। বাকী অপর প্রার্থীর হায়দার ্আলীর বাইসাইকেলের কোন পোষ্টার সীতাকু-ে চোখে পড়েনি। তবে পাহাড়তলী এলাকায় দু’চারটি দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে জাসদ প্রার্থীর মশালে ভোট চেয়ে পি-আপ ও টেক্সী করে মাইকিং করতে দেখা গেছে লাগাতার ভাবে। অপরদিকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী দিদারুল আলম নৌকায় ভোট দিতে সীতাকু-ের বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভোট চাইছেন ভোটারদের কাছে তার সঙ্গে সার্বক্ষনিক রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। গুলিয়াখালী গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি আবদুল গনির সঙ্গে আলাপকালে ভোট কাকে দিবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নৌকা ও মশালের পাবলিসিটি তিনি শুনেছেন। তবে প্রার্থী চিনেন না। বাকী দুই প্রার্থীর প্রতীকের নাম শুনেননি। নৌকা বা মশাল যে কোন একটিতে দিতে পারেন। আওয়ামীলীগ প্রার্থী দিদারুল আলম ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগকর্মীদেরকে নিয়ে সভা সমাবেশ, মতবিনিময় করেছেন। পূর্বে দলের ভূলত্রুটি সবাই তোলে ধরেছেন এসব সভা সমাবেশে ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আনার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে নানান কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি নগরীর সিটি গেইট এলাকার বাসিন্দা হিসাবে নগরীর পাহাড়তলী, আকবরশাহ, খুলশী এলাকার এক তরফা ভেট পাবেন বলে এলাকাসূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া সীতাকু-ের ৯টি ইউনিয়নে ও একটি পৌরসভা এলাকার আওয়ামীলীগের ভোট ছাড়াও কিছু নিরপক্ষ ভোট তিনি পাবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। অনেকেই তার জয় নিশ্চিত বলে ধরে নিয়েছেন।
অপরদিকে জাসদ প্রার্থী আ.ফ.ম মফিজুর রহমান কুমিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন দু’বার। তাছাড়া জাসদ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় বিভিন্ন সভা সমাবেশে তাকে দেখা গেছে। মানবতাবাদী লেখক হিসাবেও তার পরিচিতি রয়েছে সীতাকু-ে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর তার বক্তব্যও পরিবর্তন দেখা গেছে। নির্বাচনী প্রচারনাকালে তিনি দাবী করেন যে সীতাকু-ের মাটি ও মানুষের বন্ধু, অসহায় গরীব সর্বহারা লোকদের একমাত্র সঙ্গী তিনি। সীতাকু- বাসী উপকার করতে পারলে তিনিই করতে পারবেন। তাই ভোট তাকেই দেয়া উচিত বলে তিনি দাবী করেন।
জাপা প্রার্থী হায়দার আলী সীতাকু- ছাড়া ও দক্ষিণ জেলায় আরো একটি উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। তার তেমন প্রচারনা চোখে পড়েনি। তার বাড়ীও সিটিতে পড়ায় সিটি গেইট এলাকায় দু’চারটি পোষ্টার দেখা গেছে। সীতাকু-ের কোথাও তিনি সাইকেল মার্কায় ভোট চাইতে চোখে পড়েনি। তবে সীতাকু- থেকে দক্ষিন জেলায় তার অবস্থান ভাল বলে সূত্রে জানা গেছে। অপর প্রার্থী ওয়ার্কাস পাটির প্রার্থী দিদারুল আলম চৌধুরী একসময় সোনাইছড়ি ইউপি মেম্বার ছিলেন। বর্তমানে তিনি হাফিজ জুট মিলে কেন্টিন ঠিকাদার। সোনাইছড়ি এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে মোটামুটি। এমপি প্রার্থী হিসাবে তিনি কোথাও ভোট চাইতে চোখে পড়েনি। হয়তো তিনি নিজেকেই বিব্রত বোধ করছেন। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিও তার অনুকুলে নেই। তার দু’চারটি পোষ্টার সীতাকু- উপজেলা গেইটে যুবলীগের কর্মীরা লাগাতে দেখা গেছে। তবে ভোটের মাঠে তার প্রতীক নিয়ে তেমন আলোচনা কোথাও শুনা যায়নি।
হাফিজ জুট মিলের এক শ্রমিক নেতা জানান, ওয়াকার্স পার্টির প্রাথী দিদার ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর ছায়া প্রার্থী হিসাবে কাজ করছেন। তাই তার নিজের জন্য ভোট চাইছেন না কোথাও। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন তার দলের নেতা-কর্মীরা। চট্টগ্রাম-৪ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৩,৫০,০৮৯জন (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার উনানব্বই জন) এর মধ্যে মহিলা ভোটার ১লক্ষ ৬৩ হাজার ৮শত ২০ জন, পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ২শত ৬৯জন। ভোট কেন্দ্র হচ্ছে ১০৩টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *