নিজস্ব প্রতিবেদক,২৯সেপ্টেম্বর(সীতাকুণ্ড টাইমস)-
সৌদি আরবে মীনা ট্রাজেডির পর নিখোঁজ সীতাকুণ্ডের মুক্তিযোদ্ধা দীন ইসলাম (৬২) ৬দিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মিলেনি। এখন তিনি কোথায় কি অবস্থায় আছে তা জানতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সেখানে (হজ্বে) অবস্থানরত তার স্ত্রী তাহেরা বেগম। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোন আশ্বাস মিলেছে না। ফলে দেশেও গ্রামের বাড়িতে পড়েছে কান্নার রোল।
দেশের জন্য অবদান রাখা মুক্তিযোদ্ধা হাজ্বী দীন ইসলামের সন্ধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার পুত্র সীতাকুণ্ড পৌরসভা ছাত্রলীগ নেতা মোঃ আমজাদ হোসেনসহ পরিবারের সদস্যরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভাধীন পশ্চিম আমিরাবাদ গ্রামের রস্তুম আলী সুকানি বাড়ির মৃত রস্তুম আলী সুকানির পুত্র মুক্তিযোদ্ধা দীন ইসলাম (আইডি নম্বর ০৭২০১৫৮) গত ২৬ আগষ্ট স্ত্রী তাহেরা বেগমকে (৫৫) নিয়ে হজ্ব পালনের উদ্দ্যেশ্যে ক্লাব ট্রাভেল নামক একটি হজ্ব এজেন্সীর মাধ্যমে সৌদি আরব যান। সেখানে যাবার পর বাড়ির সাথে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিলো। কিন্তু মীনা জামারাতে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে যাওয়ার সময় পদপিষ্ট হয়ে শত শত হাজ্বীর মৃত্যুর পর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান দীন ইসলাম। তার সঙ্গে থাকা স্ত্রী তাহেরা বেগম পাগলের মত হয়ে সর্বত্র খোঁজাখুঁজি করেও স্বামীর সন্ধান পাননি। এ খবর দেশে আসার পর কান্নার রোল পড়ে যায় গ্রামের বাড়ি সীতাকু-ের আমিরাবাদেও। আজ সরেজমিনে মুক্তিযোদ্ধা দীন ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সবাই হতাশ হয়ে পড়েছে। একজনকে শান্তনা দেবার মত অবস্থা নেই অন্যজনের। বিভিন্ন স্থান থেকে স্বজনরা ছুটে আসছেন খোঁজ নিতে।
তার পুত্র মোঃ আমজাদ হোসেন প্রতিবেদককে বলেন, গত ২৬ আগষ্ট আমার বাবা-মা হজে¦র উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যান। সেখানে যাবার পরও বাবা প্রতিদিন একবার হলেও দেশে পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। গত বৃহস্পতিবার মীনা ট্রাজেডির (পদপিষ্ট হয়ে নিহত) সময় ভিড়ের ধাক্কায় বাবা ও মা আলাদা হয়ে যায়। এরপর বন্ধ হয়ে যায় বাবার মোবাইল। ফলে ঘটনার কথা শুনে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেও বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে অন্য এক হাজ্বী (আত্বীয়) জানিয়েছেন তিনি ভিড়ের মধ্যে হটাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় আত্বীয়টি তার সাথে যেতে চাইলেও পুলিশ নিয়ে যায়নি। ফলে কোন হাসপাতালে নিয়ে গেছে তা তিনি বলতে পারেননি। এরপর হজ্ব এজেন্সীসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে মীনায় অবস্থানরত মা একা হয়ে কান্নাকাটি করছেন। বাড়িতে পড়ে গেছে কান্নার রোল।