সাইফুল ইসলাম ইনসাফ, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রামঃ
দলিল যার জায়গা তার বিধান রেখে ভূমি আইন করায় ভূমিমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন নামক সামাজিক সংগঠন। ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেল ৪ টায় এ আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলা কমপ্লেক্সস্থ সুরমা প্লাজা থেকে শুরু করে উপজেলা কমপ্লেক্স গেইট এসে শেষ হয়। প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল-২০২৩ গেজেট আকারে পাস হয়েছে।
শোভাযাত্রা শেষে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন আমিন রসুল রিয়াদ,এ আর রাশেদ, সাংবাদিক বাদল রায় স্বাধীন, মোহাম্মদ সাকিল খাঁন, সাহেদ খাঁন, সেলিম সওদাগর। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি লেখক ও সাংবাদিক মোঃ হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি। সভায় বক্তারা বলেন নতুন আইনে বৈধ দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি কোনো ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। পাশাপাশি জমির মিথ্যা দলিল করলে হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড । দলিল বিহীন অবৈধ ভাবে মন্দির, মসজিদ বা যে কোন স্থাপনা করে থাকুকনা কেন, ১শ বছর দখলে থাকলেও সেটি এখন ফৌজদারী আদালতে ৬ মাসে নিস্পত্তি হবে বা দখল মুক্ত হবে।
শোভাযাত্রা শেষে পথসভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য নজরুল ইসলাম, শিমুল, সাজ্জাদ, মুন্না, জিয়া রহমান, সজীব, নয়ন, কার্তিক চক্রবর্তী, তাফসীরুল আলম, মোঃ সৌরভ, মাহমুদ প্রমুখ।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, কোনো দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনো অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করা, প্রতারণামূলকভাবে কোনো ব্যক্তিকে কোনো দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে। ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনো ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ কারও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনো দলিলে স্বাক্ষর করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
এতে বলা হয়েছে, হালনাগাদকৃত সর্বশেষ খতিয়ান মালিক বা তার উত্তরাধিকারসূত্রে বা হস্তান্তর বা দখলের উদ্দেশে আইনানুগভাবে সম্পাদিত দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোনো মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি ওই ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। অবৈধ দখলের সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির নামে স্টেট একুইজিশন অ্যানড্ টিন্যান্সি অ্যাক্টের অধীনে প্রণীত বা হালনাগাদ বলবৎ সর্বশেষ খতিয়ান না থাকলে এবং খতিয়ান ও হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তিনি ওই জমি বিক্রি, দান বা হেবা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন বা দলিল নিবন্ধন করতে পারবেন না। বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া আবাদযোগ্য জমির উপরিস্তর কাটলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
এছাড়া সংসদে ১৯৮৪ সালের ল্যান্ড রিফর্মস অর্ডিন্যান্স রহিত করে ভূমি সংস্কার বিল পাশ হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ৬০ প্রমিত বিঘার বেশি কৃষি ভূমির মালিক বা তার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষিভূমি অর্জন করতে পারবে না। তবে আটটি ক্ষেত্রে এটি শিথিল থাকবে।