সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্কঃ
সীতাকুন্ডে নিজ বসতঘরে ফাঁসিতে ঝুলানো অবস্থায় দুই আদিবাসী ত্রিপুরা কিশোরীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকালে উপজেলার পৌরসদরস্থ ৫নং ওয়ার্ড জঙ্গল মহাদেবপুর এলাকার ত্রিপুরা পল্লী থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুই কিশোরী হলেন,ত্রিপুরা পল্লীর পুনেল কুমার ত্রিপুরার মেয়ে সুকুলতি ত্রিপুরা (১৫) ও সুমন কুমার ত্রিপুরার মেয়ে ছবি রানী ত্রিপুরা (১৪)।
এদিকে নিহতের পরিবারের দাবী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্থানীয় চৌধুরী পাড়া এলাকার বখাটে যুবক আবুল হোসেন (২৪) ও তার সঙ্গীরা ধর্ষনের পর পরিকল্পিতভাবে দুই কিশোরীকে হত্যা করেন। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে বখাটেরা দুই কিশোরীর মুখে বিষ ঢেলে বসতঘরের একটি কক্ষে দু’জনকে একসাথে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়।
নিহত সুকুলতি ত্রিপুরার বাবা পুনেল কুমার ত্রিপুরা জানান,‘গত একমাস ধরে স্থানীয় চৌধুরী পাড়ার ইসমাইল হোসেনের পুত্র আবুল হোসেন তার বখাটে সঙ্গীদের সাথে নিয়ে ত্রিপুরা পল্লীতে গিয়ে সুকুলতি ত্রিপুরাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এতে সুকুলতি অসম্মতি জানালে বখাটে আবুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে সপ্তাহখানেক আগে সুকুলতিকে তার হাতে তুলে দিতে আমার উপর জোর প্রয়োগ করেন। বিষয়টির প্রতিবাদ জানালে আবুল হোসেন আমার মেয়েকে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেন। তিনি আরো জানান,আমাদের অনুপস্থিতিতে আমার মেয়ে সুকুলতি ও তার বান্ধবীকে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে এবং পরবর্তীতে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছেন বখাটে আবুল হোসেন।’
ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়,সকালে জুমচাষের জন্য কিশোরী সুকুলতি ও ছবি রানীকে ঘরে রেখে তার বাবা,মা পাহাড়ে চলে যান। বিকালে নিজ ঘরে ফেরার পর পুনেল ত্রিপুরার বসতঘরের একটি কক্ষে দুই কিশোরীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে আত্মচিৎকার করেন সুকুলতির মা। এতে আশপাশের প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে সীতাকু- থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে সীতাকুন্ড উপজেলা আদিবাসি ত্রিপুরা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র ত্রিপুরা বলেন,‘এভাবে দুটি মেয়ে বিষপ্রাণ করে আত্মহত্যা কোনভাবে সম্ভব না,গত কয়েকদিন ধরে সুকুলতি ত্রিপুরাকে যেই ছেলে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল,সেই আজ পরিকল্পিতভাবে সুকুলতি ও তার বান্ধবীকে হত্যা করে। আমরা এই বিষয়ে আইনের সহায়তা কামনা করছি।’
সীতাকুন্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান জানান,‘সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় ঘটনাস্থল থেকে নিহত দুই কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এটাকে পরিকল্পিত হত্যা বলেও নিহতের পরিবার দাবী করছেন। মুখে বিষ প্রয়োগ ও একি কক্ষে দু’জনের ফাঁসিতে ঝুলানো অবস্থায় থাকায় এটি প্রাথমিকভাবে পরিকল্পিত হত্যা বলে ধারনা করছি আমরা। তবে ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে আসলে হত্যার সঠিক রহস্য বেরিয়ে উদঘাটন হবে।’
সুত্র- জনকন্ঠ অনলাইন।