সৌমিত্র চক্রবর্তী,২ডিসেম্বর(সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
সীতাকুন্ডে আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহে পিছিয়ে নেই আ.লীগ, বিএনপি-জামায়াত কেউই। দলীয় সব ক্যাডার এখন অস্ত্র হাতে নিয়ে অনেকটা প্রকাশ্যে মিটিং মিছিল করছে। শুধু তাই নয়, সুযোগ পেলেই এক দলের ক্যাডার অন্য দলের উপর গুলি করতেও পিছপা হচ্ছে না। আর চোখের সামনে অস্ত্রের এই ঝনঝনানি দেখে আতংকিত সাধারণ মানুষ। কিন্তু এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষী বাহিনীর কঠোর কোন পদক্ষেপ নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা যত বাড়ছে সীতাকুন্ডে, অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি ততই বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে আ.লীগ-বিএনপি-জামায়াত সব দলের ক্যাডাররা মিছিল মিটিংয়ের সময় অনেকটা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এলজি, ককটেল, শর্টগানসহ বিভিন্ন রকম অস্ত্র এখন দলীয় ক্যাডারদের হাতে হাতে। শুধু তাই নয়, পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থানকালে কিংবা রাতের আঁধারে একদল অন্য দলের উপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে গুলি করতেও পিছপা হচ্ছে না। নিজেদের ক্ষমতা বোঝাতে একদল অন্য দলের চেয়ে বেশি অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামছে। ফলে সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কিন্তু অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের উল্লেখযোগ্য কোন সফলতা নেই। সূত্র জানায়, গত একমাসে অবৈধ অস্ত্রধারীদের হাতে পুলিশ, বিজিবি সদস্য, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ অন্তত গুলিবিদ্ধ হয়ে ২৫ জন নারী পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, ২১ নভেম্বর বড়দারোগারহাট এলাকায় ছাত্রলীগের গুলিতে জামায়াত নেতা নুরম্নল করিম ও ছাত্রশিবির নেতা তৌহিদুল ও জাহেদ আহত, ২৪ নভেম্বর বিএনপি ও শিবিরের গুলিতে ২ পুলিশ ও এক বিজিবি সদস্য আহত, সর্বশেষ গত শুক্রবার বিএনপি-জামায়াত সলিমপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনের বাড়িতে হামলা করে গুলি চালালে ঐ বাড়ির ১১ নারী-পুরুষ ও শিশু গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও পুরো নভেম্বর মাস জুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা গুলির ঘটনায় অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পাশাপাশি অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে ককটেল হামলা হয়েছে স্থানীয় এমপির বাড়ি ও চট্টগ্রাম উত্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীদুল্লার গাড়িতে। এখানেই থেমে নেই বিএনপি-জামায়াত কিংবা আ.লীগের রাজনৈতিক মিছিলে হাতে হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, ধামা, চাপাতি, কিরিসের প্রদর্শনী বেড়ে গেছে। কোন কারণ ছাড়াই তারা ককটেল বিষ্ফোরণসহ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আতংক ছড়াচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, উপজেলার রাত নামলেই মহাসড়কের পন্থিছিলা, বটতল, শেখপাড়া, পৌরসদর, উপজেলা সদর, সিরাজ ভূঁইয়া রাসত্মার মাথাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মুহূর্মুহূ গুলির শব্ধ শোনা যায়। এতে সাধারণ মানুষ চরম আতংক নিয়ে বিনিন্দ্র রাত যাপন করছেন। এ উপজেলায় বর্তমানে থানার পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি ক্যাম্প স্থাপন করা হলেও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কারো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। গত ১৪ নভেম্বর উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলার জরুরি সভায় স্থানীয় সাংসদ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম আবুল কাসেমও অবৈধ অস্ত্রের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তার কাছে খবর রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছে। এমনকি কয়েকটি একে ৪৭ রাইফেলও আছে তাদের কাছে। এগুলি উদ্ধারে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সীতাকু- থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধারও করেছি। গত শুক্রবারও একটি আগ্নেয়াস্ত্র অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। আশা করি আরো অনেক অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হবে।