মুসলেহ উদ্দীন, সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ এলাকার ঢালিপাড়া সড়কে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান কাদায় মুড়িয়ে চলতে হয় এলাকাবাসীর। গ্রামের গুরুত্বপুর্ণ এই রাস্তাটি এখন ব্যবহারের অনুপযােগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারবিহীন থাকায় বর্তমানে এ সড়কের বেহাল দশা। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এলাকাবাসী সংষ্কারের দাবী জানিয়ে আসলেও এখনো হয়নি কাঙ্খিত সংস্কার কাজ। এভাবে বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও সড়কটির বিষয়ে এখনো দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারী। বর্তমান সরকারের আমলে দেশে কাঁচা রাস্তা নেই বললেই চলে, এই সরকার উন্নয়নের রোল মডেল। ইতিমধ্যে দেশের অলিতে-গলিতে সরকারের উন্নয়ন ছোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এই একটি একমাত্র মাটির সড়কটি যেন অভিভাবকহীন। বর্ষা আসলেই ওই এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দার চলাচলে পড়তে হয় সীমাহীন দুর্ভোগে। রাস্তার অবস্থা দেখে মনে হয় এ যেন আদিম যুগে বসবাস।
সরে জামিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর রাস্তাটি কাদাতে ভরপুর যেন চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে। অথচ এ সড়কেই প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষ চলাচলা করতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান কাদায় মাড়িয়ে বাজারে-ঘাটে যাতায়াতে হয় নানা অসুবিধা। এভাবে হাঁটু সমান কাদা নিয়ে মধ্যবয়সীরা বহু কষ্টে চলাচল করলেও বৃদ্ধ এবং শিশুরা চলাচলে আরো বেশি অনিরাপদ। এ পরিস্থিতিতে স্কু্ল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাফেরা চরম ঝুঁকিতে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় দৈনিক এই সড়ক দিয়ে কৃষক যেতে হচ্ছে ক্ষেত-খামারে এবং বিভিন্ন শ্রেণী প্রেশার মানুষদের নানা কাজে রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া বহু বসত-বাড়ি থাকায় বিভিন্ন বয়সের মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। কিন্তু রাস্তাটির অতিরিক্ত কাদার কারনে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে এলাকার হাজারো মানুষ।
এদিকে দীর্ঘ এক যুগ পার হলেও রাস্তার সংস্কার কাজ না করায় জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতা আর অবহেলাকে দ্বায় করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল নোমান নামে এক যুবক সীতাকুণ্ড টাইমসকে জানান,
আমাদের চলাচলের মূল রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক। রাস্তার মধ্যে হাঁটু সমান কাদায় আমাদের হাঁটা চলা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন যাবত আমরা এলাকাবাসীরা কষ্ট ভোগ করছি। আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এলাকার আরেক স্থানীয় বাসিন্দা শোয়েব মাহামুদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, সীতাকুণ্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম হাসনাবাদ। এ গ্রামের হাসনাবাদ- ঢালিপাড়া সড়কটি লম্বাঘরের মাথা হতে চলে গেছে পশ্চিমে সমুদ্র পর্যন্ত (হাসনাবাদ অংশ)। এ গ্রাম, ও আশেপাশের ৬ নং ৪ নং ওয়ার্ডের প্রায় ৫০০০ কৃষিজীবি মানুষ এ রাস্তাটি প্রতিদিন ব্যবহার করে। কিন্তু বর্ষায় কাদা ও পানিতে সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ইতোপূর্বে, সাবেক এমপি গনমানুষের নেতা জনাব আবুল কাশেম মাষ্টার,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সন্মানিত সভাপতি জননেতা আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুইঁয়া, ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদ হোসেন নিজামী এ রাস্তাটি সংস্কার ও পাকা করার বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। বিভিন্ন সময়ে আংশিক পাকা করার কাজ করবে বললেও । আমরা পূর্নাঙ্গ সড়কটি পাকা করার বিষয়ে বর্তমান নেতৃবৃন্দের নিরবচ্ছিন্ন মনযোগ ও আন্তরিকতা আশা করছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার মোঃ আকবর হোসেন বলেন; হাসনাবাদ ঢালিপাড়া সড়কটির বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা দেখছি। এই রাস্তায় অনেক মানুষ চলাচল করে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত কাদার কারনে কষ্টসাধ্য হয়। এলাকার মানুষ এই রাস্তা নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি এলাকার যুবকদের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেনের দৃষ্টি গোচর হয়। এরপর তিনি রাস্তার নাজুক পরিস্থিতি দেখে বিস্মিত হয়ে তিনি মন্তব্যে লিখেন, একটা রাস্তা এতো খারাপ হতে পারে না। আমি অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের সাথে বসে একটা সমাধান করবো ইনশাআল্লাহ, তিনি এভাবে আশ্বস্ত করায় ধন্যবাদ দেন স্থানীয়রা।