সংবাদ শিরোনাম
Home / বিশ্ব সংবাদ / এক নজরে পবিত্র হাজ্জ্ব মুবারক-কাজি সাদেকুল ইসলাম

এক নজরে পবিত্র হাজ্জ্ব মুবারক-কাজি সাদেকুল ইসলাম

ককককাজি সাদেকুল ইসলাম,৯আগষ্ট (সীতাকুণ্ড টাইমস)-

তালবিয়া : লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক,লা-শারীকালাকা।
বাংলা অনুবাদ :হাজির হয়েছি আমি, ইয়া আল্লাহ আপনারি দরবারে, সাড়া দিয়েছি, ইয়া আল্লাহ
আপনারি আহবানে। নেই কোন অংশীদার, সম্পদরাজি আর প্রশংসা সবি কেবল আপনি আল্লাহর।
সমগ্র বিশ্বের একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার, আপনি আমার এক আল্লাহ,নেই কোন অংশীদার।

হজ্জ তিন প্রকার:

১।ইফরাদ হজ্জ: মীকাত হতে অথবা বিমানে থাকা অবস্থায় মীকাত অতিক্রম হয়ে যাবে এই ভয়ে নিজ নিজ দেশ হতে শুধু হজ্জের নিয়তে ইহরাম বাঁধা এবং ওমরা কে হাজ্জের সাথে মিলিত না করে হাজ্জ কে হাজ্জে ইফরাদ বলে।
২।ক্বিরান হজ্জ: হজ্জের সাথে ওমরাকেও মিলিত করা অর্থাৎ একই সাথে হজ্জ ও ওমরার নিয়তে ইহরাম বাঁধে যে হজ্জ তাকে ক্বিরান হজ্জ বলে।হযরত ইমামে আযম আবু হানিফা রহ: এইরুপ করতেন।
৩।তামাত্তু হজ্জ: হজ্জ ও ওমরাহ কে একই সফরে মিলিত করা, কিন্ত সেটি এভাবে যে, মীকাত থেকে শুধু ওমরাহ র জন্য ইহরাম বাঁধা এবং মক্কা শরীফে পৌঁছে ওমরাহ শেষে চুল কেঁটে বা মুণ্ডন করে ইহরাম খুলে ফেলা।আবার ৭ জিলহাজ্জ মাসজিদুল হারাম হতে হজ্জের নিয়তে ইহরাম বাঁধা।এরুপে পালন করে হাজ্জ কে তামাত্তু হজ্জ বলে।বাংলাদেশ থেকে হাজীরা সাধারনত: এই নিয়মে হাজ্জ্ব পালন করে থাকেন।

হজ্জের ফরয:

হজ্জের ফরয তিনটি:
১।নিয়ত করা, ইহরাম বাঁধা এবং তালবিয়া পাঠ করা–এই তিনটি কাজ এক সংগেই হয়।তাই এই তিনটি এক সংগেই এক ফরয।‪#‎প্রিয়‬ নবী রাছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বলেছেন,”ওয়া ইন্নামাল আ’মালু বিননিয়্যাতি ওয়া ইন্নামা লিকুল্লিমরিয়িম মা নাওয়া।”(আমলের নির্ভরতা নিয়তের উপর।প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিয়ত অনুসারেই ফল দেয়া হয়।)
২। ওকুফে আরাফাত অর্থাৎ ৯জিলহজ্জ যোহর(বারটার পর থেকে) থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বা ১০জিলহাজ্জ সুবেহ সাদেক পর্যন্ত সময়ের যে কোন এক মূহুর্ত আরাফাতে অবস্থান করা।#প্রিয় রাছুল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বলেছেন,”আলহাজ্জু আরাফাতু।”(আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের নাম হাজ্জ)
৩। তাওয়াফে যিয়ারত করা অর্থাৎ ১০জিলহজ্জ এর সকাল থেকে ১২জিলহজ্জ এর মধ্যে সুবিধা জনক সময়ে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করা।‪#‎আল্লাহর‬ বাণী,”ওয়ালইয়াত্বাওয়াফূ বিল বাইতিল আতীক্ব।”(বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা হাজীদের কর্তব্য-সুরা হাজ্জ)‪#‎ওয়ালিল্লাহি‬ আ’লান্নাসি হিজ্জুল বাইতি মানিসতাত্বা’আ ইলাইহি সাবিলা ওয়া মান কাফারা ফাইন্নাল্লাহা গানীয়্যুন আনিল আ’লামিন- সুরা আলে ইমরান-৯৭(পবিত্র কাবা শরীফ এর হাজ্জ করা মানুষের উপরে আল্লাহর প্রাপ্য, যারা সেখানে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।আর যে তা মানে না-আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না।)

হাজ্জের ওয়াজিব সমুহ:

১। আরাফাত হতে ৯ জিলহাজ্জ সূর্যাস্তের সাথে সাথে রওয়ানা হয়ে রাতে যতক্ষনেই মুযদালিফায় পৌঁছবেন তখনিই এক আযানে দুই ইকামতে মাগরিব ও ঈশা নামায আদায় করে মুযদালিফায় খোলা আকাশের নিচে যেখানে জায়গা পাওয়া যাবে সেখানে রাত্রি কাটাতে হবে।ফজরের নামাযের আগে মুযদালিফা থেকে ছোট সাইজের ৭০টি বা বেশী কম কংকর সংগ্রহ করতে হবে।যদিও কংকর মারতে হয় ৪৯টি।সাবধানতা এই জন্যে যে, জামরাতে শইতানকে কংকর মারার সময় যদি কোনটি হাত থেকে ছুটে যায় সেটি নিয়ে পূনরায় মারা যাবে না।
২।সাফা ও মারওয়া সাঈ করা অর্থাৎ দৌড়ানো।
৩।জামারাতে/শইতানকে কংকর মারা।১০জিলহাজ্জ বড় শইতানকে সাত টি; ১১জিলহজ্জ বড়, মেঝ ও ছোট শইতানকে সাত টি করে একুশটি; অনুরুপে ১২ জিলহাজ্জ ২১টি সর্বমোট ৪৯টি কংকর নিক্ষেপ করতে হবে।
৪। হজ্জ্বে কিরান ও তামাত্তু পালন কারীরদের জন্য কুরবানী করা।
৫। মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছাঁটা/ মহিলারা শুধু চুলের অগ্রভাগ কাটবে।
৬। যাঁরা মক্কাবাসী নন তাঁরা মক্কা শরীফ থেকে ফেরার আগে বিদায়ী তাওয়াফ করবেন।উল্লেখ্য যে, বিদায়ী তাওয়াফে সাফা মারওয়া সাঈ করতে হবে না।
হাজ্জ পর্ব-৫।
‪#‎ইহরাম‬ অবস্থায় যে সব কাজ করা নিষিদ্ধ:
ইহরাম পরিধান করে ছুন্নাতুল ইহরাম এর দুই রাকাত নামায আদায় করাপূর্বক হাজ্জ বা ওমরার নিয়ত করার পর হতে হাজ্জ বা ওমরা শেষে করে মাথা না মুণ্ডানো পর্যন্ত একজন হাজী ছাহেব নিজেকে ভাবতে হবে আমি একজন কাফনের কাপড় পরা মৃত মানুষ।সে অবস্থায় নিম্নে উল্লেখিত কাজ করা অবৈধ—
১। আতর সহ সব প্রকারের সুগন্ধী ব্যবহার নিষেধ।তবে নিয়তের আগে লাগানো যাবে।
২।নখ, চুল, পশম ছেঁড়া কাটা যাবে না।
৩।মশা, মাছি, উকুন মারা যাবে না;শিকার করা বা শিকারীকে শিকারের দিকে ইংগিত দেয়াও যাবে না।
৪।পুরুষের সেলাই করা কাপড় পরা যাবে না।তবে কোমরে থলে, বেল্ট, গলায় থলে ব্যবহার করা যাবে।
৫। মাথা ও মুখ ঢাকা যাবে না;মুখ ঢেকে শুয়া বা ঘুমানো যাবে না।
৬।মহিলারা মাথায় কাপড় ও পর্দা করবে;ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মুখে নেকাব এবং হাতে হাত মোজা ব্যবহার করবে না।(বুখারী শরীফ-৩/১৭১৯)
৭।সাবান, শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করা যাবে না, চুঁল আঁচড়াবে না।
৮।শরীর, মাথা জোরে জোরে চুলকাবে না যাতে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে।
৯।ঝগড়া, বিবাদ,চোগলখুরী,গীবত, অশ্লীল কথাবার্তা বলা যাবে না।
১০।মাথায় পাগড়ী, টুপী, পায়ে মোজা পরিধান করা যাবে না।
১১।বাথরুম সারার পর সুগন্ধহীন সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
১২।স্ত্রী সহবাস বা আবেগে স্পর্শ করা বা চুমু দেয়া নিষিদ্ধ।
১৩।কাহারও দিকে কুদৃষ্টিতে তাকানো যাবে না।
বি:দ্র: উপরোক্ত নিষদ্ধ কর্মের কোনটি যদি ভূলক্রমেও হয়ে যায় তবে জরিমানা স্বরুপ দম অর্থাৎ পশু কুরবানী দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *