সংবাদ শিরোনাম
Home / জাতীয় / এত বাস, তবুও সীতাকুন্ডের মানুষের জন্য বাস সার্ভিস নেই!

এত বাস, তবুও সীতাকুন্ডের মানুষের জন্য বাস সার্ভিস নেই!

BRTCসাইফুল মাহমুদ, ৪নভেম্বর (সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)- চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ডে সরাসরি কোন বাস সার্ভিস না থাকায় অতিকষ্টে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নিয়মিত যাতায়ত করে সীতাকুন্ডের হাজারো কর্মজীবি মানুষ। এসকল কর্মজীবি মানুষ ৩০ থেকে ৪০ কি.মি পথ হয়ত কোন দুর পাল্লার বাসে করে বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয় নতুবা কয়েকবার গাড়ি বদল করে লোকাল সিএনজি ট্যাক্সি কিংবা শহরের কাছাকাছি স্টেশনে পৌছে ছোট ছোট মিনিবাস যোগে তাদের কর্মস্থলে পৌছতে হয়। এদিকে নগরীর বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়মিত যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে যেমন যাতায়াত খরচ বেড়ে যায় তেমনি প্রচুর সময়ও নষ্ট হয়। অনেক সময় খোলা ট্রাকে করেও কর্মস্থলে যেতে দেখা যায়। জনগনের ভোগান্তি যেন দিন দিন বেড়েই চলছে। দীর্ঘ দিন ধরে শহরে কর্মরত শ্রমজীবি বা কর্মজীবি মানুষ সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম রুটে সরাসরি বাস সার্ভিসের দাবী করে আসছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন এদিকে দৃষ্টি পড়েনা।

জানাযায়, সীতাকুন্ড উপজেলাটি চট্টগ্রাম শহরের কাছাকাছি হওয়ায় হাজার হাজার কর্মজীবি মানুষ সীতাকুÐে বিভিন্নস্থান থেকে যাতায়াত করে আসছে। চট্টগ্রাম শহরে বাসা ভাড়া অত্যাধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে এ শহরে কাজ করতে আসা নি¤œ আয়ের শ্রমজীবি মানুষ গুলো শহরে না থেকে এরাও সীতাকুন্ডেÐ বসবাস করছে। প্রতিদিন সকাল থেকে দিনের বিভিন্ন সময় তাদের প্রয়োজনীয় অফিস আওয়ারে অফিসে যেতে হয়। কিন্তু সীতাকুন্ড থেকে সরাসরি কোন বাস সার্ভিস নাই। যার কারণে ঐসকল কর্মজীবি মানুষকে যাতায়াতের ভরসা করতে হয় বারৈয়ার হাট, ফেনী, নোয়াখালী, রায়পুর, লক্ষীপুর, রামগঞ্জ, কুমিল্লা সহবিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাস সার্ভিস গুলোর উপর। এসকল বাসগুলো ডাউন ট্রিপে তাদের পছন্দ ও প্রয়োজনমত সীতাকুÐ থেকে যাত্রী নিলেও আপ ট্রিপে অর্থাৎ চট্টগ্রাম থেকে সীতাকুন্ডেÐর যাত্রী বহন করেনা। যদি কোন যাত্রী চট্টগ্রাম থেকে এসকল বাস সার্ভিসে উঠতে পারে তাতে ডাইরেক্ট গন্তব্যের ভাড়া দিতে হয়। বারৈয়ার হাটস্থ চয়েস সাভিসে যোকোন যাত্রী উঠানাম ১০০ টাকা। বাধন সার্ভিসে ২৫০ টাকা, বলাকা সার্ভিসে ২০০ টাকা, সৈকত ২৫০ টাকা দিতে হয় যা একজন বেশি আয়ের চাকরিজীর পক্ষে মাসব্যাপী যাতায়াত করাও অসম্ভব। এ ছাড়া কুমিরা থেকে নিউমার্কেট রুটে মেট্রো সার্ভিস নামে একটি মিনিবাস সার্ভিস রয়েছে। এ সাভিসে সীতাকুÐের যাত্রীদের যাতায়াত করতে হলে প্রথমে সীতাকুন্ড বাজার থেকে সিএনজি যোাগে ২০ টাকা খরচ করে কুমিরা আসতে হয়। এর পর কুমিরা থেকে নিউমার্কেট ২৫ টাকা । সে ক্ষেত্রে একজন কর্মজীবিকে দৈনিক মোট ৯০ টাকা হারে যাতায়াত বাবত মাসে প্রায় ২হাজার ২শ ৫০ টাকা কিংবা তারো বেশি টাকা খরচ গুনতে হয়। আবার যে সিএনজি ট্যাক্সি গুলো রয়েছে তাতে ড্রাইভারদের ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করে। তাতেও শেষ নয় ড্রাইভারদের ইচ্ছে হলে যাত্রী তোলে । সন্ধ্যা গড়াতে না গড়াতে লোকাল সিএনজি ট্যাক্সির ভাড়া দ্বিগুন বেড়ে যায়। পুরো উপজেলার মানুষ এ সিএনজি ট্যাক্সি চালকদের উপর জিম্মি হয়ে পড়ছে। এদিকে সীতাকুÐ উপজেলাটি মেট্রোএলাকার কাছাকাছি এবং শিল্পাঞ্চল হওয়ায় শহর থেকেও অনেক কর্মজীবি মানুষকে তাদের কর্মস্থলে আসতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এখানকার শ্রমজীবি মানুষ সীতাকুÐ-চট্টগ্রাম রুটে বাস সার্ভিসের দাবী করে আসলেও সংশ্লিষ্ট কেউ এখনো পর্যন্ত এগিয়ে না আসায় হতাশ হয়ে পড়ছে মানুষগুলো।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত মুকিবুল ইসলাম বলেন, আমার অফিস পতেঙ্গা সীবিচের কাছে। যাতায়াতের জন্য অলঙ্কারের মোড় থেকে পতেঙ্গা বীচ পর্যন্ত বাস সার্ভিস থাকলেও সীতাকুণ্ড থেকে অলঙ্কার ৩ বার গাড়ি পরিবর্তন করতে হয়। এতে অনেক হয়রানীর স্বীকার হতে হয় এবং প্রচুর পরিমানে টাকাও নষ্ট হয়। সরকারের কাছে দাবী করছি যাতে সীতাকুণ্ড-চট্টগ্রাম রুটে অতিসত্ত¡র বাস সার্ভিস চালু করে।
সানম্যান টেক্সটাইল মিলসে কর্মরত অপর যাত্রী সমীর চন্দ্র দাস বলেন, আমাকে প্রতিনিয়ত সীতাকুÐ থেকে সকালে ২০ টাকা দিয়ে প্রথমে কুমিরা তারপর ২৫ টাকা দিয়ে মেট্রোসার্ভিসে করে শহরে যেতে হয়। চাকুরী শেষে বাসায় আসতে ১৫ টাকায় কুমিরা আসলেও সীতাকুÐে সিএনজিতে নেয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আয়ের প্রায় অর্ধেক গাড়ি বাড়ায় চলে যায়। যদি একটি ডাইরেক্ট বাস থাকত হয়ত এত খরচ হতনা।
শহরে একটি বেসরকারী কলেজ পড়–য়া ছাত্র বিধুর চন্দ্র দাস বলেন, অভিভাবকরা আমাদেরকে নিদিষ্ট পরিমান টাকা দেয়। কিন্তু সরাসরিকোন বাস সার্ভিস নাইতো তা ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাতায়াত করতে অনেকসময় বেশি টাকা লেগে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *