সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / সন্দ্বীপে শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা মনিরের অস্ত্রের কারখানায় পুলিশের হানা ঃ বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার

সন্দ্বীপে শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা মনিরের অস্ত্রের কারখানায় পুলিশের হানা ঃ বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার

সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্কঃ
সন্দ্বীপ উপজেলার দুর্গম এলাকায় একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। সেখান থেকে বিভিন্ন সাইজের পাইপগান, শর্টগান, বন্দুকসহ প্রায় ২০টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে। দেশপ্রেম, সৎ মনোভাব, বুকে সাহস এই নিয়ে সবর্দা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ চাইলে কি না পারে। তার আরেকটি উদাহারণ প্রমাণ করে দেখাল চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর দুইটার দিকে সন্দ্বীপের রহমতপুর এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানায় এঅভিযান চালানো হয়।

এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারী মো. ইউসুফ প্রকাশ কালা মনিরের অস্ত্রের কারখানায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করায় এলাকাবাসি পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এলাকাবাসি আনন্দ মিছিলও করেছে। কেউ কেউ আবার মিষ্টি বিতরণ করেছেন। তবে কালা মনিরকে আটক করতে পারলে তারা বেশি খুশি হতেন বলে লোকজন জানান। তবে পুলিশ বলছে কালা মনিরকে ধরার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যহত থাকবে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর দুইটার দিকে সন্দ্বীপের রহমতপুর এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পান পুলিশ। পরে সেখানে তিনঘন্টা অভিযান চালিয়ে অস্ত্রের কারখানা থেকে ৬টি দোনালা বন্দুক, ১১টি একনলা বন্দুক ৩টি পাইপগান, ৫টি বন্দুকের কার্তুজ সহ ২০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এসময় কারখানা থেকে ১০টি পাইপগান তৈরীর বিভিন্ন সাইজের পাইপ, ১০টি ট্রিগার, ১৮টি স্প্রিং, ৫০টি বিভিন্ন সাইজের লোহার পাত, ৮টি ফায়ারিং পিন রড, অনুমান ২৫০টি অস্ত্র তৈরী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ, ৫টি বিভিন্ন সাইজের অস্ত্র তৈরীর কাঠের টুকরা, একটি হেক্সোব্লেড সংযুক্ত, দুইটি লোহা রেত, দুইটি কাঠের বাটসহ হাতুড়ী, তিনটি প্লাস, দুইটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি স্কেল, একটি বাইশ মেশিন(যার দ্বারা লোহা চাপে ধরা হয়), একটি ড্রিল মেশিন, একটি ছোট হাওয়ার মেশিন, একটি গ্রেন্ডার মেশিন(যার দ্বারা লোহা কাটা হয়), ১০টি গ্রেন্ডার মেশিনের ব্লেড, ৫০টি লোহা জ্বালাই করা রড, একটি টাইগার কোম্পানীর জেনারেটর, অনুমান ৬শ গ্রাম গুনা, দুইটি কালো স্কচটেপসহ আরো বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ ও কারিগর সাইফুল (২৮) ও কারখানা মালিক কালা মনিরের স্ত্রী হীরামনি আক্তার প্রিয়া (২১) গ্রেফতার করা হয়।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. শাহাজাহান পিপিএম অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপারে জানান, ২৫ অক্টোবর সন্দ্বীপ থানা পুলিশ বিভিন্ন গোপন সংবাদে জানতে পারে থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারী মো. ইউসুফ প্রকাশ কালা মনিরের একটি অস্ত্র তৈরীর কারখানা আছে। সেখানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র মজুদ আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে আমি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল হালিম, পরিদর্শক সোহরাওয়ার্দীসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রহমতপুর ইউপি’র হাদী বাড়ী সাকিনের বাড়ীতে অভিযান চালায়। প্রায় তিন ঘন্টা অভিযান চালিয়ে ৬টি দোনালা বন্দুক, ১১টি একনলা বন্দুক ৩টি পাইপগান, ৫টি বন্দুকের কার্তুজ সহ ২০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এবং এছাড়া অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয় অস্ত্র কারখানার কারিগর সাইফুল ও কারখানা মালিক কালা মনিরের স্ত্রী হীরামনি আক্তার প্রিয়া। ঘটনাস্থল থেকে কালা মনির সুকৌলে পালিয়ে যায়।

ওসি মো. শাহাজাহান আরো বলেন, পালাতক মো. ইউসুফ প্রকাশ কালা মনির একজন কুখ্যাত খুনি ও অস্ত্রধারী। সে সন্দ্বীপ থানার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার নামে সন্দ্বীপ থানায় দুইটি খুন, তিনটি অস্ত্র, একটি মাদকদ্রব্য, একটি পুলিশের উপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট ৮টি মামলা রয়েছে। এবং আটক মো. সাইফুল ইসলাম একজন কুখ্যাত খুনি ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। সে পেশায় একজন অস্ত্রের কারিগর। তার নামে সন্দ্বীপ থানায় খুন, অস্ত্র, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট ৩টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. ইউসুফ প্রকাশ কালা মনিরকে আটকের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে। তাকে যে কোন সময় আটক করবে পুলিশ। পুলিশ সবর্দা জনগণের সাথে রয়েছে।

অস্ত্রের কারখানা থেকে অস্ত্র উদ্ধার ঘটনার বিষয়ে সন্দ্বীপ
থানায় ২টি মামলা রুজু হয়েছে। মামলাগুলো যথাক্রমে: ১। মামলা নং-১২ তারিখ-২৫-১০-১৮খ্রি: ধারা-১৮৭৮সনের অস্ত্র আইন ১৯-(অ) (ঋ) এবং
২। মামলা নং-১৩ তারিখ-২৫-১০-১৮ইং তারিখ ধারা-১৯৯০সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯(১) টেবিল ৯(খ)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *