মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,সীতাকুণ্ড টাইমস ঃ
মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম। সীতাকুণ্ড পৌরসভার শিবপুর গ্রামে তার বাড়ি। হামিদুল্লাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। দুই পায়ে সমস্যা থাকার কারনে হাঁটতে পারে না,দুই হাতে জোর কম থাকার কারনে লিখতে কষ্ট হয়। চোখেও কিছুটা সমস্যা আছে।
‘কেমন আছে তারা’ সীতাকুণ্ড উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক গৃহীত একটি উদ্যোগ-যার মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের খবরাখবর নেওয়া হয়। সরকারের ইউপেপের আওতায় উপজেলা শিক্ষা অফিস যে সকল শিশুকে হুইলচেয়ার,হিয়ারিং এইড,চশমা এবং চক্ষু চিকিৎসা সহায়তা বরাদ্দ দিয়েছে তারা কেমন আছে,তাদের লেখাপড়া কেমন চলছে,কোন ক্লাসে পড়ছে কিংবা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে কিনা—তালিকা ধরে তাদের খবর নেওয়া হয় এই উদ্যোগের মাধ্যমে।
মঞ্জুর ২০১৫ সালে যখন শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ত,ইউপেপ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা শিক্ষা অফিস তার জন্য একটা হুইলচেয়ার সরবরাহ করে। সেই চেয়ারে চড়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেত এবং সে গতবছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পাস করে।
মঞ্জুর কেমন আছে,কোথায় পড়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব রুবী খাস্তগীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান মঞ্জুর এখন হামিদুল্লা হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। তারই প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু প্রবীর কুমার নাথের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান,মঞ্জুর বেশ কিছু দিন ধরে বিদ্যালয়ে আসছে না। তিনি আরো জানান,মঞ্জুর বিদ্যালয়ে আসছে না অভিভাবকদের কিছু অন্ধ বিশ্বাসের কারণে।
গত সোমবার ঐ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জনাব ফারুখ হোসেনকে সাথে নিয়ে দুই সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব মোঃআলাউদ্দীন এবং জনাব ওমর ফারুক মঞ্জুরের বাড়িতে যান। তারা মঞ্জুরের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তার সাথে বেশ কিছু সময় কাটান। তারা মঞ্জুরের পরিবারের সদস্যদের সামনে একীভূত শিক্ষার বিভিন্ন ধারনা,এই ধরনের শিশুদের সম্ভাবনা তুলে ধরেন।মঞ্জুরের কেন স্কুলিং প্রয়োজন তা বিশদভাবে পরিদর্শনকারী বুঝিয়ে বলেন।
বিদ্যালয় কতৃপক্ষ মঞ্জুরকে অতীতে যেমন যাবতীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন, সামনেও তার ধারাবাহিতা রক্ষার আশ্বাস দেন প্রধান শিক্ষক।মঞ্জুরের পিতা জনাব মনিরুল ইসলাম তাকে বিদ্যালয়ে পাঠাবেন বলে নিশ্চয়তা প্রদান করেন।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলাউদ্দীনকে ‘কেমন আছে তারা’ উদ্যোগের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন,’সীতাকুণ্ড উপজেলা শিক্ষা অফিস বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের নিরবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিতা কামনা করে।সকল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে বিদ্যালয়মুখী করার প্রচেষ্টা নেওয়া হবে এই উদ্যোগের আওতায়’।