সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / জ্ঞানদানের মনোরম পরিবেশ এম এ কাসেম রাজা স্কুলে

জ্ঞানদানের মনোরম পরিবেশ এম এ কাসেম রাজা স্কুলে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সীতাকুণ্ড টাইমসঃ
সীতাকুণ্ড মহাসড়কের পাশেই শীতলপুরে একই ক্যাম্পাসে দঁাড়িয়ে আছে ২টি বিদ্যাপীঠ। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও ফুলের বাগানের মাঝে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সকলের নজর কেড়ে নেই।

যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালে ভরে উঠে মন। তা হল এম এ কাশেম রাজা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মহাসড়কের পাশ ঘেষে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে দৃষ্টি নন্দন প্রাকৃতি ঘেরা সাড়া জাগানো প্রতিষ্ঠানটি যেন একটি ফুলের বাগান। স্কুল আঙ্গিঁনার চারপাশে হরেক রকমের ফুল-ফল ও ঔষুধী বৃক্ষের ছায়া ঘেরা মায়া জড়ানো প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে শান্তির নীড়। চোখ জুড়ানো মন ভোলানো প্রতিষ্ঠানের অবয়ব উপজেলা জুড়ে লাগিয়ে দিয়েছে তাক। তাই প্রতিষ্ঠানের পাশ দিয়ে চলতে চোখ ধাধাঁনো দৃশ্য দৃষ্টি গোচর হলে চোখ ফেরানো দায়। ফলে আনন্দে আত্মহারায় পাঠ গ্রহনকারীরা হয়ে উঠেন বাগানে বিচরন করা অপরুপ সুন্দর্য্য মাখা পরীর রুপে।

আধুনিক শিক্ষাকে এগিয়ে নেয়ার প্রতিযোগীতায় সর্বোচ্চ স্থানে পৌছাতে সীতাকুন্ড উপজেলায় চলছে চরম প্রতিযোগীতা। তাই নানা রঙে-নানা সাজে শিক্ষার প্রতি শিশুদের মানোযোগ ব্যাতি ব্যাস্ত হয়ে উঠেছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা। আর যতজন প্রতিযোগীতায় সামনের সারিতে রয়েছেন তাদের মধ্যে সর্বোত্তম স্থান দখলে নিয়েছেন সোনাইছড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত কাশেম রাজা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরকারের সহযোগী হয়ে সম্পূর্ন নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবাক এম এ রাজা কাশেম। গরীব দুখী মেহনতি মানুষের ঘরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে তাঁর এই মহতি উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নজর কাঁড়া সকল প্রকার সহযোগীতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে করেছেন আলোচিত। ফলে মেধা ও বিচক্ষনতা দিয়ে তিলে তিলে গড়ে তোলা দৃষ্টি নন্দন প্রতিষ্ঠানটি নজর কেড়েছে সকলের। প্রতিষ্ঠানের চারপাশ ঘেরা সুবিশাল মাঠে ফুলের বাগানে রয়েছে ছায়া ঘেরা বৃক্ষরাজি। সুন্দর আনন্দঘন পরিবেশে দিনভার দৌড়াদৌড়ির আর খেলাধুলায় মত্ত্ব থাকলেও ক্লান্তি আসে না শিশুদের। আলো বাতাস বেষ্টিত শ্রেণী কক্ষগুলোতে পাঠদানের উপযোগী পরিবেশের ফেেল মনোযোগী থাকে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিনোদনমুলক পরিবেশে ঘুরতে এসে অভিবাবকদের উৎফুল্লা হয়ে উঠে মন। যে কারনে শিক্ষালয়টি শিক্ষার পাশাপাশী বিনোদন কেন্দ্রে রুপ নেয়ায় লেখা-পড়ার প্রতি শিক্ষার্থীদেরও মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান অভিববাকরা।

তারা বলেন,‘ মনের মধ্যে সুন্দর্য না থাকলে সুন্দরকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব না। যে কারনে প্রতিষ্ঠানটি গড়ার পর থেকে অন্ধকারে জ¦লছে আলো। সুনামধন্য ব্যবসায়ী হওয়ার পর সুন্দর মন ও হাতের ছোয়ায় গড়ে উঠেছে সুন্দর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর প্রতিষ্ঠানটি গড়ার পর থেকে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতে সব ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন রাজা কাশেম। যা আলোচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনসম্মুখে স্বীকৃতি লাভ করেছে বলে জানান তারা।

উপজেলা ১০২ টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পরিবেশ ও মানগত শিক্ষার ক্ষেত্রে সামনের সারিতে রয়েছে কাশেম রাজা প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরকারী করন করার পর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দেখা দিয়েছে শিক্ষক সংকট। ছাত্র-ছাত্রীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় পাঠদানে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। এরপরও শিক্ষার গুনগত মান ঠিক রেখে প্রতিষ্ঠানের সন্মান অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে বলে জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তাাহমিনা আক্তার।

তিনি বলেন,‘ শিক্ষার মানদন্ড ঠিক রাখতে সব সময় হাতে নেয়া হচ্ছে নতুন নতুন কলা- কৌশল। বিনোদনে ও সমাপনী পরীক্ষায় ফলাফল ভাল রাখতে থাকে বিশেষ ব্যবস্থা। ফলে শতভাগ পাশের সাথে মেধা তালিকায় স্থান অর্জন করছে শিক্ষার্থীরা। ৫৩২ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানে রয়েছে মাত্র ৫ জন শিক্ষক। এরপরও শিক্ষার্থীদের মননশীলতায় মুক্তিযোদ্ধা কর্নার, দেয়ালিকা প্রকাশ, শিক্ষা উপকরন পদর্শনী স্থপান করা হয়েছে। এছাড়া পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় ওয়াশ বেসিন, চিরুনী, ও নেইল কাটার ও লুকিং গ্লাস কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’ তবে শিক্ষক সংকট কমানো গেলে ফলাফল দিকে প্রতিষ্ঠান শীর্ষস্থানে থাকবে বলে জানান তিনি।

সোনাইছড়ি ইউনিয়নের লালবেগ এলাকায় ১৯৮৮ সালে বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী এম এ কাশেম রাজা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু ছিল জন সম্মুখে। বিশিষ্ট শিল্পপতি রাজা কাশেমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে আলোর মুখ। একই ছাদের নিচে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠা গড়ে তুলে সুনামের খ্যাতি অর্জন করেন প্রতিষ্ঠাতা। তাই তিনিও মনে করেন মৃত্যুর পরে জনগন প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তাকে রাখবে স্বরনে।

বিশিষ্ট সমাজ ব্যাক্তিত্ব এম এ কাশেম রাজা বলেন,‘ আমার সন্তানদের শিক্ষিত করার পাশাপাশী এলাকার মানুষদের শিক্ষিত করা লক্ষে গড়ে তুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নিশ^াস শেষ হলে সব কিছু হয়ে যাবে শেষ। জনগনের জন্য কিছু করতে পারা ভাগ্যের ব্যাপর। অর্থশালী হওয়ার পর জনগনের উপকারার্থে কিছু করতে না পারলে অর্থভিত্তের কোনো অর্থ থাকে না। তাই নিজ বাড়ির সামনে জনগনের মাঝে আলো ছড়িয়ে দিতে গড়ে তুলা হয়েছে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সব রকমের শিক্ষা এক স্থান হতে পেতে প্রাথমিক,মাধ্যমিক ও ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছি। এছাড়ও বিভিন্ন স্থানে জনগনের কল্যার্থে আরো একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে উপজেলাব্যাপী হয়ে উঠেছেন পরিবেশ ও মানগত শিক্ষার উদাহারন। এই পন্থায় অন্যন্য প্রতিষ্ঠান অনুকরন করলে দেশব্যাপী আধুনিক শিক্ষার রোল মডেল হবে সীতাকুন্ড। শিক্ষক,শিক্ষার্থী,অভিববাকসহ দানশীল ব্যাক্তিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারে সীতাকুন্ডের প্রতিষ্ঠান সমূহ সরকারের সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে পারেও বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সার্বিক তত্বাবধানে রেখে শিক্ষার মান উন্নযনে স্বচেষ্ট ভূমিকা পালনকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন,‘ শিক্ষার গুনগতমানে এগিয়ে থাকায় একাধিকবার জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্টত্ব লাভ করেছে সীতাকুন্ডের একাধিক প্রতিষ্ঠান। সে সাথে প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে সফলতা লাভ করে সুনাম অর্জন করেছে দেশব্যাপী। আর পরিবেশ ও সুন্দর্য বর্ধক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি রয়েছে এম এ কাশেম রাজা স্কুলের। তাই সীতাকুন্ড উপজেলা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদাহারন হওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *