সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্কঃ
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান কলিযুগের মহাতীর্থ সীতাকু-ের চন্দ্রনাথ ধাম। সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক পূণ্যময় তীর্থস্থান। অথচ এই তীর্থ রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলিত। বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও উর্দ্বতন কর্মকর্তারা এইস্থানকে জাতীয় তীর্থকেন্দ্র হিসেবে ঘোষনার আশ্বাস দিলেও সনাতনী সম্প্রদায়ের এই প্রত্যাশা এখনো পুরণ হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন, দেশের সনাতন সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ধর্মীয় এ তীর্থস্থানটিকে জাতীয় তীর্থ ঘোষণা করা। অথচ চন্দ্রনাথধামকে জাতীয় তীর্থের আওতায় এনে কোটি কোটি টাকা আয়ের সমূহ সম্ভাবনা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভুমিকা পালন করছে।
আজ শুক্রবার সীতাকুণ্ড মেলা কমিটির উদ্যোগে সাইন স্টেট এনজি সাহা যাত্রী নিবাস প্রাঙ্গনে ‘ সীতাকুণ্ড মেলা পুনমির্রনী ও ভবিষ্যতে মেলাকে আরো সুন্দও, সক্রিয় ও সকরের অংশগ্রহন নিশ্চিতকরণ এবং চন্দ্রনাথ মহাতীর্থসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সার্বিক উন্নয়নে সকলের সম্মিলিত সমন্বয় উদ্যোগ” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা একথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, হামিদউল্লা হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার নাথ এবং মধ্যম মহাদেবপুর ভোলাগিরী পুজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি তাপন চক্রবর্তী।
অধ্যাপক সুনিল বন্ধু নাথ এর সভাপতিত্বে এবং সীতাকু- মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাক(ভারপ্রাপ্ত) পলাশ চৌধুরী সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে মতামত উপস্থাপন করেন, সীতাকুণ্ড তীর্থ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন দাশ, সীতাকু- জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল পালিত, সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব, চট্টগ্রাম সনাতন বিদ্যার্থী সংঘের প্রধান উপদেষ্ঠা মিলন শর্মা, ইপসার প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান, সীতাকু- মডেল থানার ওসি(অপারেশন) রাজিবুল ইসলাম, চট্টগ্রামস্থ সীতাকু- সমিতির সভাপতি লায়ন গিয়াস উদ্দিন, বাড়বকু- ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী, সীতাকু- পৌর ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, সাবেক সম্পাদক রেজাউল করিম বাহার, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র চক্রবর্তী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, সীতাকু- পূজা উদ্যাপন পরিষদেও উপদেষ্ঠা প্রেমতোষ দাশ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দে, সহ-সভাপতি সজল কুমার শীল, সীতাকু- জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত পাল প্রমুথ।
মতবিনিময় সভায় বিশিষ্টজনেরা কয়েকটি সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন, তা হলো- সুপারিশমালা উপস্থাপন করছি।
সীতাকুন্ড মেলা কমিটিতে বিভিন্ন আলংকরিক পদ, পদাধিকার বলে সদস্য সহ বিশাল সংখ্যক সদস্য নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়ে থাকে। প্রকৃত অর্থে এত বিপুল সদস্যের কমিটি বাস্তবিক অর্থে তেমন কোন ভূমিকা পালন করে না। ভবিষ্যতে কমিটি গঠনকল্পে অন্তত পোর্ট পোলিও পদগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্তরা অবশ্যই নিঃস্বার্থভাবে সার্বক্ষনিকভাবে সময় দিতে হবে। মেলা কমিটির কোন পোর্ট পোলিও পদগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ মেলায় কোন প্রকার লাভ জনক কাজের সাথে জড়িত থাকা উচিৎ হবে না।
সীতাকুন্ড মেলাকে সক্রিয় ও স্থায়ীত্বশীল করতে হলে কমিটির নিজস্ব স্বকীয়তা অর্থাৎ স্বয়ং সম্পূর্ণ অবস্থান তৈরী করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মেলা আয়োজনের জন্য নিজস্ব তহবিল স্থায়ীত্বতার বিষয়টি খুবই জরুরী বিধায় ¯্রাইন স্টেটের মাধ্যমে জায়গা লীজ বা বর্তমানে লীজকৃত জায়গায় নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করা। সরকারী অনুদান নিয়মিত ও ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি করা, মেলার সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু সরকারী বেসরকারী ও স্বায়িত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানকে(যেমন; চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিভিল সার্জন অফিস, সীতাকুন্ড পৌরসভা, জেলা পরিষদ উপজেলা পরিষদ ইত্যাদি) মেলাকে স্থায়ীত্বতা প্রদানে সর্বাতœকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এব্যাপারে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সাইন কমিটির সাথে সুসমন্বয়ের মাধ্যমে মেলা উপলক্ষে স্থায়ীভাবে জায়গা লীজ প্রদান করে মেলার নিয়মিত আয় হিসাবে প্রদান করে তহবিল বর্দ্ধিত ও নিয়মিতকরন করা যেতে পারে।
মাজ হিতৈষী ব্যক্তিবর্গ থেকে অনুদান আদায়ের সর্বাতœক উদ্যোগ গ্রহণ করা। মাননীয় এমপি মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় সহ আরো অনেকে অর্থাৎ ব্যবসায়ী শিল্পপতিবৃন্দ মেলার স্থায়ীত্বশীলতায় সহায়তা করতে পারে।
সীতাকুন্ড মেলা কমিটি মেলা ব্যবস্থাপনা ছাড়াও আরো কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে যেমন ; ধর্মীয় আলোচনা সভা, ধর্মীয় কির্ত্তন আয়োজন ইত্যাদি)
সরকারী, বেসরকারী ও স্বায়িত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানগুলোও মেলার সার্বিক আয়োজনে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যেমন; স্থায়ী ও অস্থায়ী পয়ঃ নিস্কাশন ব্যবস্থা, স্থায়ী ও অস্থায়ী নিরাপদ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, স্থায়ী বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, মেলা উপলক্ষ্যে সরকারী অথবা বেসরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকাশনায় সৌজন্যমূলক সহায়তা করা, সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা করা। সীতাকু-ে ধর্মীয় চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে প্রায় ৩০-৪০টি সংগঠন নিজ নিজ স্বকীয়তা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করছে। এই সকল প্রতিষ্ঠান সমূহকে সীতাকুন্ডের মহাতীর্থ চন্দ্রনাথ ধাম এর উন্নয়নে ব্যক্তি স্বার্থের সম্পূর্ণ উর্দ্ধে উঠে সমন্বয়ের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মহাতীর্থ চন্দ্রনাথ ধামের অধীনস্থ সকল মন্দিরের পরিচালনা, সম্পত্তিসমূহ রক্ষনাবেক্ষন, সার্বিক ব্যবস্থাপনা করার আইনসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান সীতাকুন্ডড সাইন লমিটি। সাইন কমিটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত প্রতিষ্ঠিত সকল ধর্মীয় মন্দিরে নিয়মিতভাবে সম্পূর্ণ ভাবগাম্ভির্য্যতার সাথে পূজা অর্চনা সম্পাদন করা অতীব প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এই মুহুর্তে উদ্যোগ গ্রহণ করা। কোন প্রকার লোভ, হিংসা, বিদ্বেশ, ব্যক্তি স্বার্থে কোন কিছুর বিনিময়ে কোনভাবেই নিজেদেরকে সমর্পন করবো না। বিশেষ করে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নের্তৃবৃন্দ নিজেরা ঐক্যবদ্ধভাবে সু সমন্বয়ের মাধ্যমে মহাতীর্থ উন্নয়নে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেয়া।
Home / প্রথম পাতা / সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধামকে জাতীয় তীর্থ ঘোষণার দাবীঃ ‘মহাতীর্থের সার্বিক উন্নয়ন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা