সংবাদ শিরোনাম
Home / উপজেলা সংবাদ / বাঁশবাড়ীয়ায় নদীর পানি থৈ থৈ করছে গ্রামে:: সীমাহীন দূর্ভোগে হাজার হাজার উপকূলবাসী::

বাঁশবাড়ীয়ায় নদীর পানি থৈ থৈ করছে গ্রামে:: সীমাহীন দূর্ভোগে হাজার হাজার উপকূলবাসী::

Sitakund Berbad watar Photo-2
কাইয়ুম চৌধুরী,২৩আগষ্ট (সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
সীতাকুন্ডের বাঁশবাড়ীয়া ও কুমিরা ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকায় বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে হাজার একর ফসলি জমি ও ৪টি গ্রামের বসতঘর। ফলে আতংকে দিনাতিপাত করছে কুমিরা ও বাঁশবাড়ীয়া দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার উপকূলবাসী। গত দুই দিনের জোয়ারের পানি এলাকাবাসীর ঘরে হাটু পানি পর্যন্ত হয়ে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া বেশকয়েকটি পোন্ট্রি ফার্ম পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপকূলীয় এলাকার বাঁশবাড়ীয়া ইউপি সদস্য মোঃ হারুন জানায়, সীতাকু-ের কুমিরা এবং বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়ন এলাকায় আকিলপুর ও জমাদার পাড়া বেড়ীবাঁধ গত বছর থেকে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ১ হাজার একর ফসলি জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। যা বর্তমানে প্রতিনিয়ত জোয়াড়ের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। অপরদিকে কুমিরর শেষ সীমানায় থেকে বাঁশবাড়ীয়া পর্যন্ত বেড়ীবাধে কয়েক কিলোমিটার বাধ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় একটু জোয়ার হলেই গ্রামে পানি প্রবেশ করে বাড়ীঘর তলিয়ে যায়। এই দৃশ্য প্রতিদিনই জোয়ারের সময়কালের। জোয়ারের পানির সঙ্গেঁ প্রতিদিন মোকাবেলা করে হচ্ছে কুমিরার জেলেপাড়া, আকিলপুর, বাঁশবাড়ীয়া আকিলপুর, জমাদারপাড়া, নোনাবিল সহ কয়েকটি গ্রামের উপকূলবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইউসুফ আজাদ জানায়, গত চার বছর পূর্বে থেকেই বেড়ীবাধগুলো ভেঙ্গে সাগরে বিলীন হয়ে গেলে বাধ নির্মানে অনেক আবেদন নিবেদন করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুরু থেকেই ভাঙ্গা স্থানগুলো পুর্ণনির্মান করলে এই ভয়াবহ আকার ধারন করত না। গত দুই দিন ধরে এলাকাবাসী ঘরে রান্না-বান্না এবং ঘোমাতে পারছে না। মসজিদে নামাজ পড়তে পারছে না মসল্লিরা জোয়ারের পানির কারনে। উপকূলীয় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকার কৃষকরা গত চার বছর ধরে তাদের জমিতে চাষ না করায় জমিগুলো উপকূলীয় খড়ে জঙ্গলে পরিনত হয়েছে। ফলে ঐসব এলাকার কৃষকরা তাদের বাপ-দাদার আমলের জমি চাষ না করে অন্য পেশা ধরেছেন। অনেকে জমির আইল বেধে মৎস্য চাষে নেমেছেন। তবে এর সংখ্যা খুবই নগন্য।
কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানায়, ভাঙ্গা স্থানগুলো মেরামতের সোয়া কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। লুটেপাটে খেয়েছে ঠিকাদাররা। সম্প্রতি নৌ পরিবহন মন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রীসহ অনেক সরকারী আমলা এসব ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাধ পরিদর্শন করে গেছেন এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা নিজ চোখে দেখে গেছেন। আশস্ত করে গেছেন তিনিরা গিয়েই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। এভাবে প্রায় চার বছর অতিবাহিত হতে চললো। বাস্তবায়নের মুখ দেখা যায়নি।
বাঁশবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর জানায়, এই ইউনিয়নের উপকূলীয় বেড়ীবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সাগরে কোন দূর্যোগ দেখা দিলে প্রায় বিশ হাজার পরিবার চরম আতংকে দিনাতিপাত করে থাকে। গত দুই দিন মঙ্গল-বুধবারের অতিমাত্রার জোয়ারে হাজার হাজার মানুষের সীমাহীন দূর্ভোগে পড়ে। তাদের বসত ঘরে পানি ওঠে রান্না বান্না এবং নির্ঘম রাত পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাড়ীঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া ও সমস্যা, গরু, ছাগল মানুষ মালামাল এত কিছু নিয়ে কোথায় গিয়ে উঠবে। এখানে পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেন্টারও নেই। তিনি আরো বলেন, একটু বড়ধরনের জোয়ার আসলেই গ্রামগুলো তলিয়ে যায়। আর ঘূর্ণিঝড় কিংবা কোন জলোচ্ছাস হলে কি-হবে ভাবা বড় মুসকিল বলেও মন্তব্য করেন। কয়েক হাজার জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে। এব্যাপারে প্রশাসনিক ভাবে জরুরী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
এদিকে পানি সম্পদ কর্মকর্তা স্বপন কুমার জানায়, অনেক তদবিরে বেড়ীবাধ মেরামতে অনুমোদন পেয়েছেন। শুষ্ক মৌসুমে বেড়িবাধ নির্মানের কাজ ধরা হবে।
upkul-times

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *