সংবাদ শিরোনাম
Home / বিশ্ব সংবাদ / বিশুদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে রোযাই বড় নিয়ামক শক্তি

বিশুদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে রোযাই বড় নিয়ামক শক্তি

খেজুর গাছকাজি সাদেকুল ইসলাম,২৭জুন(সীতাকুণ্ড টাইমস)-
রোযা অবস্থায় যাবতীয় গুনাহের কাজ পরহেজ করা চলা অত্যাবশ্যক। আল্লাহর জন্য রোযা পালনকারী বান্দা যদি হাতের গুনাহ পরহেজ করে তা হবে হাতের রোযা;চোখের গুনাহ পরহেজ করলে তা হবে চোখের রোযা;কানের গুনাহ পরহেজ করলে হবে কানের রোযা;পায়ের গুনাহ পরহেজ করলে হবে পায়ের রোযা;জবানের গুনাহ যেমন মিথ্যা বলা, গীবত করা, চোগলখুরী করা, পাহেশা কথা বলা,গান বাজনা করা ও গানের প্রশংসা করা ইত্যাদি পরহেজ করলে হবে জবানের রোযা; চিন্তা চেতনার গুনাহ পরহেজ করা মানে ক্বালবের রোযা;দিনের বেলা খানা পরিহার মানে পেট ও জিহবার রোযা।এমনি করে করে আল্লাহর ও প্রিয় রাছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামের প্রতিটি নিষদ্ধ কাজ পরেহেজ করে চলা ও আদেশকৃত কাজ পালন করা চলাই হচ্ছে রোযার প্রশিক্ষন।আর ইহাই হচ্ছে তাক্বওয়া।বাইং মাছ যেমন কাদায় বসবাস করেও গায়ে কাদা লাগে না, ঠিক তেমনি দুনিয়ার নোংরামিতে বসবাস করেও যে বান্দার দুনিয়ার নোংরা কাদা গায়ে লাগায় না তিনিই হচ্ছেন সত্যিকার পরহেজগার তাক্বওয়াবান।আমার আল্লাহ এই প্রশিক্ষনের মাধ্যমে প্রিয় হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামের উম্মতদেরকে সবার উপরে সম্মাণিত করার জন্যেই রোযার বিধান দান করেছেন।#আমার আল্লাহ বলেছেন,’নিশ্চয়ই তাক্বওয়াবানরাই হবে জান্নাতের বাসিন্দা’।
#প্রিয় রাছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বলেছেন,”যে রোজাদার মিথ্যা কথা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ আল্লাহর কাছে কোন প্রয়োজন নেই।”(বোখারী শরীফ)
প্রিয় রাছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম আরও বলেছেন,”শুধুমাত্র পানাহার ত্যাগের নাম রোযা নয়।বরং, প্রকৃত রোযা হলো পানাহারের সাথে সাথে অনর্থক ও পাপের কাজ থেকে সম্পূর্ণ রুপে বিরত থাকা। রোযা থাকা অবস্থায় যদি তোমার সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় তুমি তাকে বল, আমি রোযাদার!আমি রোযাদার! আমার সাথে ঝগড়া করো না।”সুবহানাল্লাহ
#উপরোক্ত হাদীছ শরীফ দুটো পর্যালোচনা করে রোযার যা যা শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ মূলক নির্দেশনা পাওয়া যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
#মুসলিম অমুসলিম কাহারও সাথে প্রতারনা করা যাবে না।
#কাউকে ঠকানো যাবে না।
#কাহারও মাল সম্পদ আত্নসাৎ করা যাবে না।
#মজুদদার নীতিতে বা অন্যায়ভাবে ইচ্ছকৃতভাবে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষকে জুলুম করা যাবে না।
#আল্লাহ হক যা আল্লাহর নির্দেশিত ফরয কার্যাবলী ইচ্ছকৃতভাবে পরিত্যাগ করা যাবে না।
#বান্দার হক যেমন মা বাবার হক, স্ত্রী-সন্তানদের হক, ভাই বোনের হক, বাড়ীওয়ালা/ প্রতিবেশী(মুসলিম অমুসলিম)র হক, আত্নীয়ের হক, উস্তাদের হক, ছাত্র-ছাত্রীর হক, বন্ধু বান্ধবের হক, মালিক হয়ে শ্রমিকের হক, শ্রমিক হয়ে মালিকের হক, মেম্বার -চেয়ারম্যান-মেয়র-এমপি, মন্ত্রী-রাষ্ট্র প্রধান হয়ে নাগরিকের হক, বিচারক হয়ে বাদি-বিবাদির হক, নাগরিক হয়ে রাষ্ট্রের হক নষ্ট করা বা আত্নসাৎ করা যাবে না। মনে রাখতে বান্দার হক বান্দা মাফ না করা পর্যন্ত আল্লাহ কখনও মাফ করবেন না।
#নিশ্চত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কোন দোষে দোষী বলা যাবে না।
#গীবত, চোখলখুরী,মিথ্যা অপবাদ,জোচ্চুরী,অহংকার,হিংসা,বিদ্বেষ,ফেত্না সৃষ্টি অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
#অশ্লীল কথা,অশ্লীল গান বাজনা,শির্ক অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
#মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন, হলুদ সাংবাদাকিতার মাধ্যমে ব্যক্তির মানসম্মাণ ক্ষুন্ন করা, সমাজ রাষ্ট্রে বিশৃংখলা সৃষ্টি অবশ্যই পরিহার করতে হবে।ইত্যাদি যাবতীয় শরীয়তের বরখেলাপ কাজ পরিহার করতে না পারলে রোযার হক আদায় হবে না।সংক্ষেপে বলা যায়, উপরোক্ত নির্দেশনাবলী মেনে চলার নামই তাক্বওয়া যা সারা বছর মেনে চলতে পারলেই পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে শান্তি, সুবিচার,মানবতা প্রতিষ্ঠা নিশ্চত হবে;সহজ হবে স্বপ্নের দূর্নীতি মুক্ত আলোকিত বাংলাদেশ,আলোকিত পৃথীবি গড়া।যে আদর্শ সর্বকালের সর্বসেরা মাদিনা সনদ এর মাধ্যমে সর্বকালের সর্বজন বিদিত সেরা আদর্শ প্রিয় নাবী রাছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতীর জন্য উপস্থাপন করে রেখে গেছেন।তাই তো আল্লাহ বলেছেন, ‘আমার রাছুল হলেন তোমাদের জন্য সেরা আদর্শ’।
——————————————————
লেখক পরিচিতি- সাবেক প্রভাষকঃ সীতাকুণ্ড গার্লস কলেজ ও যুবাইদিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *