সংবাদ শিরোনাম
Home / প্রথম পাতা / উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একদিনে নরমাল ডেলিভারিতে ১৬ শিশুর জন্ম

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একদিনে নরমাল ডেলিভারিতে ১৬ শিশুর জন্ম

সীতাকুণ্ড টাইমস ডেস্কঃ
প্রতিদিনই গর্ভবতী মায়েদের স্বাভাবিক প্রসব হচ্ছে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। হাসপাতালটি এর মধ্যে প্রসূতি মায়েদের সেবা ও স্বাভাবিক প্রসবে অবদানের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালটিতে নরমাল ডেলিভারিতে ১৬টি নবজাতকের জন্ম হয়েছে।

গত কয়েক বছরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবামান দ্বিগুণ হয়েছে। সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার কারণে এ হাসপাতালের সেবা চিত্র অনেকাংশে পাল্টে গেছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই হাসপাতালটি গর্ভবতী মহিলাদের স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করছে।
স্থানীয়রা জানান, গত তিন বছর ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নূর উদ্দিন রাশেদ হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবকাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা বহুগুণ বেড়েছে। বিনা মূল্যে মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা পেয়ে সেবা গ্রহীতারাও উচ্ছ্বসিত।

জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ২৪ ঘণ্টায় নরমাল ডেলিভারিতে ১৬টি নবজাতকের জন্ম হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ ছেলে ও ৯ মেয়ের জন্ম হয়। শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে রবিবার পর্যন্ত স্বাভাবিক ডেলিভারিতে এসব শিশুর জন্ম হয়েছে। বর্তমানে শিশু ও মা সবাই সুস্থ আছেন। এর আগে এই হাসপাতালে গত (৭ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় ১৯ নবজাতকের জন্ম হয়েছিল। যা এই হাসপাতালের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে রবিবার পর্যন্ত মোট ১৬ জন গর্ভবতী মা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে সব মায়েরাই নরমাল ডেলিভারিতে নবজাতকের জন্ম দিয়েছেন। স্বাভাবিক প্রসবের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির পাশাপাশি সিজারিয়ান ডেলিভারির ঘটনাও কমতে শুরু করেছে এই উপজেলায়। সরকারি হাসপাতালের স্বাভাবিক প্রসব সেবা পেয়ে খুশি গর্ভবতী মায়েরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদের তত্ত্বাবধানে স্বাভাবিক প্রস্রব কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করেন ডা. রাশেদা পারভীন, ডা. জুয়াইরিয়া বন্যা, মিডওয়াইফ রাফিন, সিনিয়র স্টাফ নার্স মায়া রানী, সুপারভাইজার হোসনেয়ারা বেগম, সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমিত্রা, নার্সিং ইনচার্জ ইন্দিরা প্রমুখ।
গর্ভবতী মহিলা এবং তাদের পরিবারগুলো স্বাভাবিক প্রসবের সেবা পেয়ে খুবই খুশি। শনিবার সকালে সানজিদার (১৮) প্রসব বেদনা শুরু হলে তার স্বামী সোহেল তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এরপর তাকে ডেলিভারি ওয়ার্ডে নিয়ে যান চিকিৎসকরা। তার স্বাভাবিক প্রসব প্রক্রিয়া মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন হয়।

সানজিদা বলেন, নরমাল ডেলিভারি সেবা পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমি আসলে চিন্তিত ছিলাম যদি আমার সিজারিয়ান করতে হয়। তাছাড়া আমার স্বামীর আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। এখন আমি এবং আমার বাচ্চা সম্পূর্ণ সুস্থ।

একই কথা বললেন বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন থেকে আসা মো. ইব্রাহিমের স্ত্রী ফরিদা (৩৫)। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে এত সহজে নরমাল ডেলিভারি সেবা পাবো কখনো ভাবিনি। আমিও শিশু সুস্থ আছি। সরকারি হাসপাতালে আমাদের কোনো টাকার প্রয়োজন ছিল না। তিনি হাসপাতালের সকল চিকিৎসক ও নার্সদের ধন্যবাদ জানান।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নূর উদ্দিন রাশেদ বলেন, সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করছে। আমরা রোগীদের স্বাভাবিক ডেলিভারি সেবা দিতে সবসময় প্রস্তুত। গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত যারা সেবা নিয়েছেন তাদের অনেকেই ভালো অবস্থায় বাড়ি ফিরেছেন। তাদের অধিকাংশই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ শিশু স্বাভাবিক প্রসবে জন্ম হয়। প্রায় প্রতিদিনই স্বাভাবিক প্রসবে বাচ্চা জন্ম হচ্ছে এবং সুস্থভাবে তারা বাড়ি ফিরে যান। হাসপাতালটিতে প্রসূতিদের ছাড়াও সকল নাগরিকের সবধরনের চিকিৎসেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *