সংবাদ শিরোনাম
Home / জাতীয় / প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৩২তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ

প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৩২তম শাহাদাৎবার্ষিকী আজ

bnp_Zia৩০ মে ( সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-আজ শোকাবহ ৩০ মে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩২তম শাহাদাৎবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এদিনে স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে শহীদ হন। সে থেকে এ দিনটি বাংলাদেশের মানুষের কাছে বেদনাবিধুর দিন হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। এবারের ৩০ মে পালিত হচ্ছে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩২তম শাহাদাৎবার্ষিকী হিসেবে। দিনটি উপলক্ষে তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি নিয়েছে ১৪ দিনের কর্মসূচি। বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আজ থেকে ২ জুন পর্যন্ত বিএনপি ও বিভিন্ন সংগঠন আয়োজিত দরিদ্রভোজে খাদ্য বিতরণ করবেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শাহাদৎবার্ষিকীর প্রস্তুতি হিসেবে প্যান্ডেল নির্মাণে পুলিশ বাধা দিচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি নাম। আপন মহিমায় উজ্জ্বল সে নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও স্বনির্ভরতা অর্জনের আন্দোলনের ইতিহাস। ১৯৭১ সালে এদেশ ও জাতির ঘোরতর দুর্দিনে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন ত্রাণকর্তারূপে। পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দান তাকে এদেশের ইতিহাসের অংশে পরিণত করে। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর আরেক সঙ্কটময় দিনে তিনি আবির্ভূত হন দেশ ও জাতিকে রক্ষার সিপাহসালার হিসেবে। সেদিন থেকেই শুরু হয় জাতীয় রাজনীতিতে তার পদাচরণা। রাষ্ট্র ক্ষমতার সংস্পর্শে এসে তিনি উপলব্ধি করলেন, পুরনো ধাঁচের রাজনীতি এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে পারবে না। তাই তিনি নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করলেন। তার সে রাজনীতির মূলমন্ত্র ছিল উন্নয়ন ও উৎপাদন।

বাংলাদেশকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এক সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করেছিলেন। তার প্রণীত ১৯ দফা কর্মসূচি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ম্যাগনাকার্টা হিসেবে স্বীকৃত। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কর্মতৎপর করে তুলতে তিনি গ্রহণ করেছিলেন যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নিরক্ষরতা দূর করে জাতিকে সুশিক্ষিত করে তোলা, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বনির্ভরতার মাধ্যমে জনসংখ্যার অর্ধাংশকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি। প্রকৃতপক্ষে একটি জাতির উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন দরকার, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার স্বল্পকালীন রাজনৈতিক জীবনে তার প্রায় সবগুলোই গ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশের পরবর্তী সরকারগুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে তার প্রণীত কর্মসূচির বাইরে আজও যেতে পারেনি।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রবাদপুরুষ। একদলীয় শাসনের নিগড় থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দিয়েছিলেন তিনি। পুনঃপ্রবর্তন করেছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের। তিনি বাংলাদেশের মানুষকে আত্মপরিচয় সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের যে আলাদা জাতিসত্তা রয়েছে, সে সত্য তিনি উদঘাটন করেছিলেন তার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ তত্ত্বের মাধ্যমে। স্বাধীনতা ঘোষণা, বহুদলীয় গণতন্ত্র, আর বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ- এ তিনটি কাজ প্রেসিডেন্ট জিয়াকে ইতিহাসে দিয়েছে অনন্য স্থান।

তার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী ও উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ঈর্ষান্বিত আধিপত্যবাদী শক্তির চক্রান্তে তিনি নিহত
হন।

কৃতজ্ঞ জাতি আজ শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাদের প্রিয় নেতাকে। ফুলে ফুলে ঢেকে দেবে তার সমাধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *