নিজস্ব প্রতিবেদক,১৬জুন(সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
জোড়ামতল বাজারের ডাক্তার বাবুল আর নেই একথা বিশ্বাস করতেই পাচ্ছেনা এলাকার কেউ। সবে মাত্র গাড়িতে উঠে নিজের মেয়ে স্কুলে পৌছাতে ব্যস্ত ছিলেন বাবুল ভাই। মেয়েকে ভাল স্কুলে পড়ানোর স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। তাইতে নিজের এলাকার প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি না করিয়ে মেয়েকে ভর্তি করিয়েছে এলাকার ভাল স্কুল নামের খ্যাত সবুজ শিক্ষায়তনে। বাবুলের আশা ছিল বড় মেয়ে অনন্যাকে পড়ালেখা শিখিয়ে ডাক্তার বানাবে। কিন্তু যিনি স্বপ্ন দেখলেন আর যাকে দিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে সেই দ্ইুজনেই আজ চলে গেল না পেরার দেশে। সোমবার দুপুরে জোড়ামতল ঘোড়ামারা এলাকায় নিহত বাবুলের বাড়িতে গেলে মামুন কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো প্রতিবেদককে জানায়। হাজার হাজার মানুষ তাদের প্রতিনিধির মৃত্যুর খবর শুনে আসতে থাকে বাড়ির দিকে। পুরো বাড়ি কানায় কানায় ভরে নারী পুরুষ,বৃদ্ধ শিশুরাও। অনন্যার মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও ছোট্ট বন্ধুরাও । কান্না থামাবার যেন কেউ নেই । সবাই কাঁদছে আর কাঁদছে। জানা যায় বাবুল ডাক্তারের ৩ মেয়ের মধ্যে অনন্যা হচ্ছে বড়। আরও ফুট ফুটে ২ মেয়ে রয়েছে। বাবুল মেম্বার ছিলা এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। ৪০ বছরের এই টগবগে যুবক সবার সাথে মিলে মিশে হাস্যোজ্জ্বল মুখে চলা ফেরা করতে বিধায় বাবুল ছিল সোনাইছড়ি ইউপির জনপ্রিয় প্রতিনিধি। স্থানীয় সাবেক মেম্বার তৌফিুকুল ইসলাম জানায় দীর্ঘদিন পর্যন্ত বাবুল জোড়ামতল বাজারে ফার্মেসী ব্যবসা করে আসছিল। সাথে সে রোগীদেরও সেবা করতো। তার আচার ব্যবহার এতো অমায়িক ছিল তা বলা বাহুল্য। তার সুপরিচিতির জন্যই গত ইউপি নির্বাচনে ৩নং ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোটে মেম্বার নির্বাচিত হয়।
বাবুল ডাক্তার জোড়ামতল ঘোড়ামারা এলাকার ডাক্তার ফোরক আহমদের পুত্র। তারা ৩ভাই ৩ বোন। ৬০ বছরেরর বৃদ্ধা মাতা ছেলে ও নাতনির জন্য অবিরাম কেঁদে যাচ্ছে। সীতাকুন্ড টাইমস এর প্রতিবেদক সাইফুল মাহমুদ ও কামরুল ইসলাম দুলু জানায় বাবুল মেম্বারের বাড়ি শুধু কান্নার রোল শুনাযাচ্ছে। দুপুর থেকে জানাযা পর্যন্ত হাজার মানুষের ঢল নামে তাদের বাড়িতে। একই ভাবে পাশের বাড়ির মাহবুুবুল আলম চৌধুরীর ৩য় শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে রাউজাতুন জান্নাত চৌধুরীর(৮) মায়ের বুকফাটা কান্নাও আকাশ বাতাশ ভাড়ি করে তুলছে। একই গ্রামের ৩জন এক সাথে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামের মানুষ শোকে পাথর হয়ে যায়। শুধু কান্না আর কান্না। শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুনসহ অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছুটে যান বাবুল মেম্বারের বাড়িতে। উল্লেখ্যযে, আজ সকালে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে বারাউলিয়ায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবুল ডাক্তার,মেয়ে ও জান্নাতসহ মারা যায়।