খুরশেদ আলম,৪আগষ্ট(সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশে বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ী ফেরা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যোগাযোগ মন্ত্রনালয় কর্তৃক সড়ক ও জনপদ বিভাগের ছুটি বাতিলসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নাজুক অবস্থার নিরসন না হওয়ায় ঈদ মহাসড়কেই হয়ে যাবে কিনা এই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে চারলেনের কাজও চলছে ধীর গতিতে। এই অবস্থায় চারলেনের কাজে ব্যবহৃত মাটি মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে উচু স্তুপ করে রাখা হয়েছে। একারনেই বৃষ্টি হলেই রাস্তার পাশে জমে থাকা পানি ও কাদায় যানবাহন আটকে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া মহাসড়কে কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া স্থান গুলোতে গাড়ীর গতিও কমে যায়। এসময় বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালিয়ে ওভারটেক করার সময় যানজট লেগে যাত্রীদের দূর্ভোগ বেড়ে যায়। সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, সিলেট, ফেনী, উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন জেলাসহ প্রত্যন্ত এলাকার অসংখ্য মানুষ ব্যবসা ও কর্মের খাতিরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাণিজ্যক রাজধানী চট্টগ্রামে বসবাস করেন। তাছাড়া মঙ্গা এলাকার লাখ লাখ দরিদ্র মানুষ সীতাকু-ে অবস্থিত শিপ ইয়ার্ডে চাকুরী করেন। তাই বন্দর নগরী ও বাংলাদেশের শিল্পাঞ্চল খ্যাত সীতাকু- থেকে এসব বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের মাধ্যমে সীতাকু-ের উপর দিয়ে গড়ে উঠা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কই।
ঢাকা-চটগ্রাম মহাসড়ক সীতাকু-ের বিভিন্ন এলাকায় খানা খন্দকে বেহাল অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে। সীতাকু-ের সলিমপুর, কালীর হাট, ফকিরহাট ওভার ব্রীজ, বাংলা বাজার পোর্ট লিংক রোড মোড়, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল, জলিল গেইট, বিএমএ গেইট, বারআউলিয়া, জোড়ামতল, কুমিরা রয়েল গেইট, বাইপাস রোড, ছোট কুমিরা, বাঁশবাড়ীয়া, বাড়বকু-, সীতাকু- উত্তর বাইপাস ও বড়দারোগারহাট বাজার এলাকায় মহাসড়কে বড় বড় গর্ত ও উচু-নিচু স্তুপের সৃষ্টির কারণে যানবাহন স্বাভাবিক ভাবে চলতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব খাদা খন্দকে ভারী যানবাহন হোচট খেয়ে অনেক সময় স্কেল ও স্প্রীরিং ভেঙ্গে যানবাহন অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া রাতের আধাঁরে মোটর সাইকেল ও সিএনজি টেক্সী সহ ছোট যানবাহন গুলো চলতে গিয়ে উচু-নিচু স্তুপে ও গর্তে পড়ে দূর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে। এছাড়াও স্বাভাবিক গতিতে গাড়ী চললে যানজটের কোন সম্ভাবনা থাকে না। ইতিপূর্বে ভাটিয়ারী এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু ইট-বালি দিয়ে ভরাট ও কার্পেটিং করতে দেখা গেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে। কিন্তু ভারী বর্ষন হলে এসব ইট গুলো ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে গুড়ো হয়ে সরে গিয়ে পুনঃরায় গর্তে সৃষ্টি হয়। তাছাড়া অনেক স্থানে কার্পেটিং দিয়ে গর্ত ভরাট করলেও বৃষ্টি হলে ঐ গর্তের পাশেই পুনরায় আবার গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে বলে ভূক্তভোগিদের আশাবাদ। এদিকে পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহম্মদ জানায়, মহাসড়ক বেহাল দশা হওয়ায় ভারী পরিবহন যানগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে না পারায় অনেক স্থানে রোড ডাকাতের কবলে পড়ে। গত ১মাসে সীতাকু-ে ৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সীতাকু- প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রাতে ছিনতাই ও ডাকাতী রোধে পুলিশের ৭টি টিমের মহাসড়কে টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সীতাকু- বিভিন্ন স্থানে প্রায় যানজট লেগে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে, হাইওয়ের সার্জেন্ট শ্যামল জানান, অনেক সময় অকারনেই যানজট লেগে থাকে। মহাসড়কের বড় বড় গর্ত ও উচু-নিচু স্তুপে সৃষ্টি হওয়ায় ভারী যানবাহন গুলো স্বাভাবিক নিয়মে চলতে না পারায় বন্দর ও চট্টগ্রাম নগরী থেকে অসংখ্য যানজট একত্রিত হয়ে পড়ে সীতাকু-ের ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাট এলাকায়। ফলে এসব গাড়ী ধীর গতিতে চলতে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে কোন গাড়ী যদি চলার পথে নষ্ট হয়ে পড়ে এর খেসারত রাতভর চলতে থাকে। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন দেশের অর্থনীতির চাকা সচল ও জনসাধারণ দূর্ভোগ লাঘবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সীতাকু- অংশ মেরামত খুবই জরুরী।
Home / উপজেলা সংবাদ / ” ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ী ফেরা নিয়ে সংশয়” ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশে বেহাল দশা