সংবাদ শিরোনাম
Home / উপজেলা সংবাদ / সীতাকুণ্ডের সাবেক এমপি আবুল কাসেম আর নেই||রাজনৈতিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের শোক ||

সীতাকুণ্ডের সাবেক এমপি আবুল কাসেম আর নেই||রাজনৈতিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের শোক ||

Abul Kashemকামরুল ইসলাম দুলু/নন্দন রায়,২৪নভেম্বর(সীতাকুণ্ড টাইমস)- সীতাকুণ্ডের সাবেক এমপি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এবিএম আবুল কাশেম (৭৭) আজ দুপুর আড়াইটায় ঢাকাস্থ একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন(ইন্না লিল্রাহে…….. রাজিউন)। আওয়ামীলীগ নেতা দিলসাধ মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুকালে তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আল মামুনসহ ৫ ছেলে ১ মেয়ে,স্ত্রীসহ অনেক গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সীতাকুণ্ডের সাংসদ আলহাজ্ব দিদারুল আলম,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান,জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম বাচ্চু, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুইয়া,চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লায়ন আসলাম চৌধুরী এফসিএ,সাবেক উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান এড.মোস্তফানুর,সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম হেদায়েত,যুগ্মআহ্বায়ক আলহাজ্ব সেকান্দার হোসাইন, সীতাকুণ্ড অনলাইন জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,যুগ্ম আহ্বায়ক কাইয়ুম চৌধুরী, সদস্য সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বিএসসি,জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার জেলা সেক্রেটারী খাইয়রুল ইসলাম প্রমুখ । নেতৃবৃন্দরা শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং মরুহমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন।

এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র নায়েক (অব) সফিউল আলম,সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আযাদ,উপজেলা আওয়াগীলীগের সহ সভাপতি মোঃ ইসহাক, সীতাকুণ্ড পৌর ব্যবসায়ী কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম ওয়াহিদী,পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব বদিউল আলম,সহসভাপতি আলহা্জ্ব ইঞ্জিনিয়ার শাহআলম,উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন,যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম, উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি রেজাউল করিম বাহার,সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিক, সীতাকুণ্ড ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি নাছির উদ্দিন,সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন।

বুধবার সকাল ১০.০০ টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বাদে যোহর সীতাকুন্ড সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২য় জানাজা এবং বাদে আছর নিজ বাড়ীতে ৩য় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন উনার বড় ছেলে সীতাকু- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম আল মামুন।

তিনি ১৯৩৯ সালে জন্ম সীতাকু-ের দক্ষিণ ছলিমপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। পিতার নাম মরহুম আব্দুল জলিল, মাতার নাম মরহুমা আমেনা বেগম। চট্টগ্রামের কাট্টলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা দিয়ে শুরু হয় জীবনযাত্রা। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঐ সময় চট্টগ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ছিলেন। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনসহ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা পত্রটি ছলিমপুর ওয়ারলেস সেন্টারে আসলে অপারেটর আব্দুর গাফ্ফারের সহযোগিতায় সাবেক মন্ত্রী এম আর সিদ্দিকী ও জহুর আহম্মদ চৌধুরীর নিকট হস্তান্তর করেন। ১৯৭৫ সালে সীতাকুন্ড আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের তিনি হাল ধরেন। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চার বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেন। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ২ বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ঐ সময় স্পীকারের অনুপস্থিতিতে সফলভাবে স্পীকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য এই রাজনৈতিক ব্যক্তির সীতাকু-ের ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।

সূত্রে আরও জানা যায়

আবুল কাশেম মাস্টারের দু’টি কিডনিই অকেজো হয়ে গিয়েছিল। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় ছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন একাধিকবার। সর্বশেষ অসুস্থ হয়ে পড়লে সোমবার তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার তিনি ইন্তেকাল করেন।
ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত আবুল কাশেম মাস্টার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সীতাকুন্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এবিএম আবুল কাশেম মাস্টার ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারী দক্ষিণ সলিমপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল জলিল সওদাগর।
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।ওই নির্বাচনে ২হাজার ৩৫৭ভোটের ব্যবধানে সাবেক মন্ত্রী এলকে সিদ্দিকীকে হারান তিনি। এলকে সিদ্দিকী পান-৪৩,১২১ভোট, এবিএম আবুল কাশেম পান-৪৫৪৭৮ভোট। এর পর ২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নবাগত বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে হারিয়ে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এবার এবিএম কাশেম পান ১,৩৬২৯৮ আর আসলাম চৌধুরী পান ১,১২৯৩০ভোট। ২০০৯ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালে তার বদলে আওয়ামী লীগে নবাগত দিদারুল আলমকে মনোয়ন দেওয়ার পর থেকে জনসম্মুখে আর দেখা যায়নি এই প্রবীন রাজনীতিবিদকে। এর পর থেকে তিনি মূলত অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁর মরদেহ চট্টগ্রামে আনা হবে। চট্টগ্রাম ও সীতাকুন্ডে কয়েকদফা জানাযার পর তাকে দাফন করা হবে।
12080352_710287532440040_5071532569416806532_o

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *