সংবাদ শিরোনাম
Home / উপজেলা সংবাদ / মায়ের স্মৃতিকে ধরে রাখতেই ১৬বছর ধরে ঈদপুনর্মিলনী- হাসিনা খান

মায়ের স্মৃতিকে ধরে রাখতেই ১৬বছর ধরে ঈদপুনর্মিলনী- হাসিনা খান

eid pic-1মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,৩০জুলাই(সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
সীতাকুন্ড কুমিরা মছজিদ্দা গ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী বাড়িতে পালিত হয়েছে ১৬তম ঈদপুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। প্রতিবছর ঈদের ২য় দিনেই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। ঈদের নিয়ম অনুযায়ী সেমাই নুডুলস,মিষ্টিসহ চলে নানা আয়োজন। চৌধুরী বাড়ির প্রায় ৩০পরিবারের নিকটতম আত্মীয়দের এ মিলন মেলায় চার শতাধিক লোক অংশগ্রহণ করেছে এবার। দুপুরে ছিল খাওয়ার ব্যবস্থা। বিকালে ছিল হাতে তৈরী নাস্তাসহ চা কপির আয়োজন। সুন্দর নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে আত্মীয় স্বজনদের এ মিলন মেলা। অনুষ্ঠানের আয়োজক জহুর আহমদ চৌধুরীর মেয়ে হাসিনা খান জানায় মায়ের স্মৃতিকে ধরে রাখতে প্রতিবছর ঈদের ২য় দিনে আয়োজন হয় এ অনুষ্ঠান। বাড়ির সকল আত্মীয় স্বজন এঅনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করায় আমরা খুব অনন্দবোদ করি। এতো আত্মীয়কে এক সাথে অন্য কোন অনুষ্ঠানে আনা সম্ভব হয়না। তিনি জানায় ১৯৯৮ সালে অন্যান্য বছরের মত ঈদের ২য় দিনে আমি আমার শ্রদ্ধেয় মা আনোয়ারা বেগমকে দেখতে আসি। সারা দিন মায়ের সাথে কাটিয়ে বিকালে চট্টগ্রামস্থ বাসায় চলে আসি। সন্ধ্যায় আমার মা আমার অন্যান্য বোনের সাথে চলে আসে চট্টগ্রামে। ঐদিন রাতেই মা অসুস্থ হয়ে পড়লে চট্টগ্রামের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি আমাদের থেকে চির বিদায় নিয়ে যায়। পরের বছর ঈদের ৩/৪দিন আগে আমার ছোটভাই রাসেদ ফোন করে বলে ‘আপু প্রতিবছর তো ঈদের ২য় দিন বেড়াতে আসিছ এবার আসবিনা। তখন আমি বলছিলাম এবারতো মা বাবা কেউ নেই একথা বলাতে না বলতে চোখদিয়ে পানি গড়িয়ে যায়। কয়েক ঘন্টা পর রাসেদকে মোবাইল করে বললাম ঠিক আসে আমরা আসবো তবে তুই বাড়ির সবাইকে নিয়ে একটি পিকনিকের আয়োজন কর। প্রয়োজনে সবাই চাঁদা দিব। ১৯৯৯সালে শুরু হয় আমাদের বাড়িতে এ অনুষ্ঠান। এর পর বছর আমি নিজেই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। আমি খুব আনন্দিত যে আমাদের বাড়ির সবাই প্রতিবছর এঅনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। আনুষ্ঠানে আসা জয়নাল আবেদীন জানায় আমি এ বাড়ি থেকে বিয়ে করার পর থেকে প্রতিবছর এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। এখানে এসে এক সাথে শশুড়বাড়ির সব আত্মীয়দের দেখা যায়। এধরনের অনুষ্ঠানে সীতাকুন্ডে বিরল। বিশেষ করে আমরা অনেক জামাই এক সাথে মিলিত হতে পারি।
DSC05674
আনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাফি আহমদ চৌধুরী,রাসেদ আহমদ চৌধুরী,আলমগীর চৌধুরী, রহিমগীর চৌধুরী,মোরশেদ চৌধুরী,শহীদুল্লাহ চৌধুরী,শাকিল চৌধুরী,ডাক্তার শামীম,ইমরান, নোমান,বাবর চৌধুরী,ফারুক চৌধুরী, সাজ্জাদ চৌধুরী,আব্দুল মান্নান,জয়নাল আবেদীন, রিপন,আলাউদ্দিন প্রমুখ।
হসিনা খান আরও জানায় এ মিলন মেলা আগামীতেও অব্যহত থাকবে। তিনি সীতাকুন্ড টাইমসকে বলেন বিয়ে হওয়ার পরও বাবার বাড়িতে এ আয়োজন সম্পর্কে শশুর বাড়িরও কেউ কেউ অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রশ্ন করতে চেয়েছে।কিন্তু সেদিকে কর্ণপাত না করে বরং তার শশুড় বাড়ি ফটিকছড়িতেও ঈদের দিন শুরু করে একই অনুষ্ঠান। তার স্বামী চট্টগ্রামের বিশিষ্ট শিল্পপতি নাদের খান তাদের গ্রামের বাড়িতে ঈদের দিন এ সুন্দর আয়োজনে খুব খুশী। এখন থেকে প্রতিবছর শশুড় বাড়ীতে ঈদপুনর্মিলন চলবে ঈদের দিন আর পরের দিন চলবে বাবার বাড়ী। অনুষ্ঠানগুলো দিনদিন আরও সুন্দর করতে নেয়া নতুন নতুন পদক্ষেপ।
DSC05670
হাসিনা খানের সাথে আলাপ কালে তিনি জানান ১৯৭৪ সালে এসএসসি পাস করার পর তাকে বিয়ে দেওয়ার কারনে আর পড়ালেখা করা সুযোগ পাইনি। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। ২৪বছর পর তিনি উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯সালে এইচ এসসি ও ২০০৭সালে ডিগ্রী পাস করেন। উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় যদি এমএ চালু করে তখন তিনি এমএ ডিগ্রীও নিবেন বলে আশাব্যক্ত করেন। তিনি বর্তমানে কুরআন হাদীস র্চচা ,নামাজসহ বিভিন্ন ইবাদত নিয়ে সময় কাটান বলে জানান। ব্যাক্তি জীবনে তিনি সাধারণভাবে চলাফেরা করতে পছন্দ করেন।
তিনি দীর্ঘদিন কুমিরা আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ফটিকছড়ি একটি স্কুলের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সকলের দোয়া চেয়েছেন।
DSC05685

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *