কাইয়ুম চৌধুরী,২৩ডিসেম্বর(সীতাকুন্ড টাইমস ডটকম)-
সীতাকুন্ডে পুলিশের গুলিতে আহত বাদশা মিয়া নামে খুদে ব্যবসায়ী যুবক পা হারাতে বসেছে। শুধু তাই নয় তাকে ২৭ নভেম্বরের একটি মামলায় তার নাম উল্ল্যেখ না থাকা সত্বেও পুলিশ তাকে উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চমেক হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় রেখেছে। তবে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া না হলে তার একটি পা চিরদিনের জন্য অকেজো হয়ে যাবে বলে চমেক সূত্রে জানা গেছে।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ৩ মাস পূর্বে বিদেশ থেকে বাড়ীতে এসে পন্থিছিলা এলাকায় আমান উল্লাহ্ ষ্টোর নামে একটি দোকান খুলে ব্যবসা করে আসছিল। কিন্তু গত ২ ডিসেম্বর অবরোধের মাঝে প্রতিদিনের ন্যায় এদিনও সে দোকান খুলে ব্যবসা করছিল। এসময় হঠাৎ অবরোধকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলাগুলি শুরু হয়। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে কয়েকজন অবরোধকারী বাদশার দোকানে প্রবেশ করে পুলিশ অন্যান্য অবরোধকারীদেরকে আটকের সাথে বাদশাকেও দোকান থেকে ধরে দোকানের বাহিরে নিয়ে বাদশার ডান পায়ে পর পর দুটি গুলি করে। এসম পুলিশের গুলিতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পুলিশ ভ্যানে তুলে তাকে সীতাকু- হাসপাতালে নিয়ে যায়। সীতাকু- হাসপাতাল তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চমেক হাসপাতালে প্রেরন করে। সেখানে সে পুলিশ পাহারায় এযাবত চিকিৎসাধীন আছে। তবে তার পায়ে বিদ্ধ (স্পিন্টার ) ছড়া গুলি গুলো বের করা হয়নি এখনো। ফলে তার পায়ে পঁচন ধরেছে। চিকিৎসকরা বলছে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আর না হয় তার পা কেটে ফেলে দিতে হবে। এদিকে আইনের বাধা ধরা থাকায় কোন রকম সুচিকিৎসার সহযোগিতা পাচ্ছে না তার অভিভাবকরা। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক দিক নির্দেশনা চেয়েছেন তার বাবা আবুল বশর। এদিকে এলাকার কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম, আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সেক্রেটারী মোঃ সেলিম কোরাই, পন্থিছিলা বাজার কমিটির সভাপতি সামছুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মফিজ সাংবাদিকদেরকে জানায়, বিদেশ ফেরত বাদশা মিয়া কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়। ছোটকাল থেকেই সে কর্মজীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
গত রবিবার চমেক হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ বাদশার সাথে কথা বললে সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, আমি ৩ মাস পূর্বে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে, জীবনের তাগিতে ছোটখাট একটি লাকড়ীর দোকান (আমান উল্লাহ ষ্টোর) খুলে ব্যবসা করে আসছিলাম। আমি কোন রাজনৈতিক দল করিনা। এরপরও পুলিশ কেন আমাকে এরকম নিমর্ম ভাবে গুলি করে আহত করেছে। যার কারণে আমার একটি পা হারাতে হচ্ছে। এখানে আমার ভাল চিকিৎসা হচ্ছে না। উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে বাহিরে প্রেরনের ব্যবস্থা করলে আমি একটি পা কর্তন থেকে মুক্ত পাব। উল্লেখ্য যে, ২ ডিসেম্বর পুলিশ অবরোধকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় তার দোকান থেকে তাকে আটক করে ২৭ নভেম্বর একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে।
সীতাকু- থানা সূত্রে জানা যায়, বাদশাকে মামলা নং-৪৫, তাং-২৭-১১-১৩ইং এ গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। উক্ত মামলায় ৪৬জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে উল্লেখিত ৪৬ জনের মধ্যে বাদশার নাম উল্লেখ না থাকলেও পুলিশ তাকে ঘটনাস্থলে আটক করে তবে তদন্ত করে জড়িত না থাকলে চার্জসিট থেকে বাদ দিতে পারে।