সংবাদ শিরোনাম
Home / বিনোদন / চট্টগ্রামের অাঞ্চলিক ভাষায় সেহরিকে বলা হয় ‘হোঁয়াইত্তা’।। আলী আদনান।।

চট্টগ্রামের অাঞ্চলিক ভাষায় সেহরিকে বলা হয় ‘হোঁয়াইত্তা’।। আলী আদনান।।

আলী আদনান,ঢাকা থেকে,সীতাকুণ্ড টাইমসঃ

চট্টগ্রামের অাঞ্চলিক ভাষায় সেহরিকে বলা হয় ‘হোঁয়াইত্তা’। অামাদের ছোটবেলায় সীতাকুন্ডে সেহরির সময়কে বলতাম ‘বেন রাইত’। ‘বেন’ শব্দের অর্থ সকাল। সকালের কাছাকাছি রাত বিধায় একে বেন রাইত বলা হতো।

সেহরির সময় অামরা চোখ কচলে কচলে ঘুম থেকে উঠতাম। কখনো উঠতে না পারলে ( মা না ডাকলে) পরের দিন সকালে মন খারাপ করতাম। বন্ধুদের সাথে প্রতিযোগিতা হতো কে কয়টা রোজা রাখছি তা নিয়ে।

তখন অামরা গ্রামের ছেলেরা কাশেম বিন অাবুবাকারের গল্পপ বই পড়ার সুযোগ (?) পেতাম।

রোজা দশ পনেরটা গেলেই কলেজ রোডে ঈদ কার্ডের দোকান বসতো। সিনিয়র বড় ভাইরা সেসব অস্থায়ী দোকান দিত। ২ টাকা থেকে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ টাকা দিয়ে ঈদ কার্ড কেনা যেত।

স্কুলের গন্ডী পার হওয়ার পর শেষের দিকে রোজাগুলোতে অামাদের সময় কাটতো শপিং সেন্টারগুলোতে। নাহার প্লাজা, ন্যাশনাল মার্কেট, সুপার মার্কেট- সহ সব জায়গায় থাকতো তরুনী ও নারীদের ভিড়। এই ভিড় দেখার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাইতো না অামার গুণধর বন্ধুরা। অামি অবশ্য সহজ সরল ছিলাম।

অামাদের খুব ছোটবেলায় ঈদ মানে অামাদের কাছে ছিল ‘সেমাই’। একে অপরকে সেমাই খাওয়ার দাওয়াত দিত। ঈদের দিন ছিল উন্মুক্ত। যে কেউ যে কারো বাড়ীতে যাওয়ার অবাধ সুযোগ। না যাওয়াটাই অভদ্রতা।

দিনশেষে কচকচে দু’টাকা পাঁচটাকার নোট যেমন গুণতাম তেমনি মনেমনে হিসাব করতাম মোট কয়জনের সাথে কোলাকুলি করা হলো। কোলাকুলি বেশি করা হচ্ছে মানে, অামি বড় হচ্ছি।

সবেধন নীলমণি বিটিভিতে ঈদের অনুষ্ঠাণ অানন্দমেলা বা ইত্যাদি দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম। বেড়ানোর অাধিক্যে বাংলা সিনেমা মিস হলেও ঐ দুটো মিস হতোনা।

এখনো অামাদের জীবনে রোজা অাসে, ঈদ অাসে। কিন্তু সীতাকুন্ড কলেজ রোডের ধূলো বালির গন্ধ, পুরনো স্বাদ, পরিচিত মানুষদের মুখ অার কোথাও পাই না। অামি হাতড়ে খুঁজি অামার ছোটবেলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *