সংবাদ শিরোনাম
Home / উপজেলা সংবাদ / সীতাকুন্ডের ফুলতলা বাজারের ইজারাদারদের কাছে জিম্মি ক্রেতারা, নিজেরাই ইজারাদার নিজেরাই বিক্রেতা!

সীতাকুন্ডের ফুলতলা বাজারের ইজারাদারদের কাছে জিম্মি ক্রেতারা, নিজেরাই ইজারাদার নিজেরাই বিক্রেতা!

বিশেষ প্রতিনিধি,৮অক্টোবর(সীতাকুন্ড টাইমস)

সীতাকুন্ড বারউলিয়া ফুলতলা বাজারের ইজারাদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে শত শত ক্রেতা-বিক্রেতা। উপজেলা থেকে ইজারা নেওয়া ব্যক্তিরাই এই বাজারের মাছ বিক্রি করার সুযোগ পাই। নিজেরাই ইজারাদার আবার নিজেরাই বিক্রেতা।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলাধীন সোনাইছড়ি ফুলতলা বাজার এর ইজারা নেওয়া একই এলাকার জনৈক জসিম ও মানিক নামে দুই ব্যক্তি। তারা দুইজনে এই বাজারের মাছ বিক্রেতা। উল্লেখ্য যে,এই বাজারের বাহিরের কোন ব্যক্তি মাছ বিক্রি করতে দেওয়া হয় না। এমনকি এলাকার কোন জেলেকেও বাজারের মাছ আনতে দেওয়া হয় না। বাজারের ইজারাদার দুই ব্যক্তি একদিকে মাছ বিক্রেতা ও অন্য দিকে দাদন ব্যবসায়ী বলে জানা যায়। যার ফলে স্তানীয় জেলেদের আগে ভাগেই দাদন দিয়ে রাখে। ফলে জেলেদের কাছ থেকে অল্প দামে মাছ কিনে তারা ঐ মাছ বেশি দামে বিক্রি করে থাকে। বাজারের বাইরে কোন বিক্রেতা আসতে না দেওয়ায় এখানকার শতশত ক্রেতা উচ্চ মূল্য দিয়ে ঐ ইজারাদার কাছ থেকে মাছ কিনতে হয়। দুই ইজারাদারের কাছে ক্রেতারা জিম্মি হয়ে আছে।

সরজমিনে গিয়ে এবং এখানাকার বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়,বাজারের ইজারাদার মানিক এবং জসিমের ভয়ে বাজারে কেউ মাছ আনতে পারে না। ভুল করে কেউ মাছ নিয়ে আসলে তাকে লাঞ্ছিত করে মাছ কেরে নেওয়া হয়। এমনকি পিটুনি ও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোঃ শাহেদ নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, এই বাজারের ক্রেতারা দীর্ঘদিন ধরে ইজারাদারদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। তারা এখানে বাহিরের কোন বিক্রেতাকে মাছ নিয়ে এই বাজারে আসতে দেয় না। ঐ দুই ইজারাদার ব্যক্তিই মাছ বিক্রি করে যার ফলে অন্য বাজারের তুলনায় এখানে মাছের দাম খুবই বেশি । আর কোন বিক্রেতা না থাকায় ক্রেতারা বেশি দামে মাছ কিনতে বাধ্য হচ্ছে।

খবর নিয়ে জানা যায় যে, এখানকার হাফিজ জুট মিলস্ কলোনী এলাকায়ও একই অবস্থা। কলোনী এলাকায় যে বাজার আছে সেখানেও বাইরের কোন ব্যক্তি অথবা কোন জেলেকে মাছ বিক্রি করতে দেওয়া হয় না। ফুলতলা বাজারের ঐ দুই ইজারাদারই কলোনীতে মাছ বিক্রি করে থাকে। কলোনী এলাকার এক মিলস্ শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুলতলা বাজারের দুই ইজারাদার ও তাদের লোকজনই এখানে মাছ বিক্রি আর কাউকে মাছ নিয়ে আসতে দেওয়া হয় না। যার ফলে বাধ্য হয়ে বেশি দামে প্রতিদিন একই ব্যক্তির কাছ মাছ কিনতে হয়।

আরেক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, এই দুই বাজারে পুকুরের মাছ ছাড়া সামুদ্রিক কোনো মাছ পাওয়া যায় না। দুই বাজারের প্রতিদিন একই ধরনের পুকুরের মাছই বিক্রি করতে দেখা যায়। দুই বাজারে সরজমিনে ঘুরে এই কথার সত্যতা পাওয়া যায়, দেখা গেল ঐ দুই ইজারাদার এবং তাদের লোকজন শুধুমাত্র পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ নিয়ে বসে আছে। সামুদ্রিক কোন মাছ এবং কি বাজারে কোন জেলেকে দেখতে পাওয়া যায় নাই। দুই ইজারাদার মানিক ও জসিম উক্ত বাজারে ইজারা তোলার পাশাপাশি মাছ বিক্রি করে থাকে। যার ফলে তাদের ইচ্ছেমতে দর আদায় করে থাকে। বাইরের মাছ বিক্রেতা মাছ নিয়ে আসলে তাদের মূনাফা কমে যাবে এই আশংকায় অন্য কাউকে মাছ বিক্রি করতে দেয় না তারা।

উল্লেখ্য যে, গত ৫ অক্টোবর সীতাকুন্ড থেকে এক ব্যক্তি ফুলতলা বাজারে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে গেলে, বাজারের ইজারাদার মানিক ও জসিম ঐ ব্যক্তিকে বেদম পিটুনি দিয়ে প্রায় ২০-৩০ কেজি কেড়ে নেয়। এ দুই ইজারাদারদের কাছ থেকে বাজার রক্ষা ইউএনও এর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *